The News বাংলা, ভোপাল, সম্পাদকীয়: ক্ষমতায় এলেই ১০ দিনের মধ্যে কৃষি ঋণ মকুব করা হবে, দরাজ প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন কংগ্রেস সভাপতি রাহুল গান্ধী। ঢাকঢোল পিটিয়ে সেই কথা রেখেছেন মধ্যপ্রদেশে মুখ্যমন্ত্রী কমল নাথ ও ছত্তিসগড় মুখ্যমন্ত্রী ভুপেশ বাঘেল। মিডিয়াও কৃষি ঋন মকুবের জন্য রাহুল গান্ধীকে ধন্য ধন্য করেছে। কিন্তু আদৌ কি কৃষি ঋণ মকুব হয়েছে কৃষকদের? উঠেছে প্রশ্ন।
আরও পড়ুনঃ শিক্ষিতদের বিধায়ক করল তেলাঙ্গানা, কবে শিখবে বাংলা
মধ্যপ্রদেশে নির্বাচনী প্রচারে কংগ্রেস সভাপতি রাহুল গান্ধী প্রকাশ্য জনসভায় প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন যে “মধ্যপ্রদেশে আমাদের সরকার ক্ষমতায় আসার ১০ দিনের মধ্যে সব কৃষকদের ঋণ মকুব হয়ে যাবে”।
আরও পড়ুনঃ শহীদ জওয়ানকে সম্মান নয়, সেনাকে পাথর ছুঁড়ে দেশদ্রোহীরাই ভারতে ‘নায়ক’
কমলনাথকে মুখ্যমন্ত্রী করে ইতিমধ্যেই মধ্যপ্রদেশে কংগ্রেসের সরকার গঠন হয়ে গেছে। ঋণ মাপ করার ঘোষণাও হয়েছে। মিডিয়া ভগবান বানিয়েছে রাহুল গান্ধী কে। কিন্তু দুঃখের বিষয় হল যে প্রায় ৯০ শতাংশ কৃষকের কৃষি ঋণ মাফ হবে না।
আরও পড়ুনঃ বাংলায় ২৫ টাকা কেজি পেঁয়াজ, নাসিকে দাম না পেয়ে আত্মহত্যা
মধ্যপ্রদেশে নতুন মুখ্যমন্ত্রী কমলানাথ সরকারী নির্দেশনামায় সই করার পরেই দেশের মিডিয়া এবং কংগ্রেসের আইটি সেল দাবি করে যে কথা দিয়ে কথা রেখেছে কংগ্রেস। নির্বাচনী প্রতিশ্রুতিতে রাহুল গান্ধী কথা দিয়েছিলন যে কংগ্রেস সরকারে এলে কৃষি ঋণ মুকুব করে দেওয়া হবে। আর কংগ্রেস আজ কৃষি ঋণ মুকুব করল।
আরও পড়ুনঃ শুধু দিনে নয় দার্জিলিংয়ের ঐতিহ্যের টয় ট্রেন এবার সন্ধ্যাবেলাতেও
মিডিয়া এবং কংগ্রেস চারিদিকে প্রচার করতে শুরু করে দিয়েছে যে কংগ্রেস কৃষি ঋণ মাফ করে দিয়েছে। কিন্তু কারোরই এটা নজরে পড়ে নি যে কোন কোন শর্তের ওপর কৃষিঋণ মাফ করল কংগ্রেস। রাজ্যের কৃষকরাই ধরে ফেলেন ছলচাতুরিটা।
কমলনাথের সরকার কৃষি ঋণ মকুবের কয়েকটি শর্ত দিয়েছে। একটি শর্ত হল যে সমস্ত কৃষকেরা দু লক্ষ টাকার নিচের ঋণ নিয়েছেন তাদেরই একমাত্র কৃষি ঋণ মুকুব করা হবে। আর দ্বিতীয় শর্তটি হল, লোন ৩১ শে মার্চ ২০১৮র আগে নিতে হবে।
আরও পড়ুনঃ নেতাদের গুন্ডা পোষা না গুন্ডাদের নেতা হওয়া, প্রকাশ্যে বন্দুকবাজির কারন কি
অর্থাৎ যেসব কৃষকেরা এবছরের ৩১ শে মার্চের পর লোন নিয়েছেন তাদের লোন মাফ করা হবে না। তাতে লোনের পরিমাণ যত টাকাই হোক। সবচেয়ে ছলচাতুরি টা ধরেছেন চাষী ও কৃষকরাই। তাঁরা জানিয়েছেন, চাষিরা সাধারণত বীজ কেনার জন্য লোন নিয়ে থাকেন। আর সেই লোন নেন জুন থেকে সেপ্টেম্বর মাসের মধ্যেই।
পড়ুন হাড়হিম করা অদ্ভুত সত্য গল্প
পড়ুন প্রথম পর্বঃ পৃথিবী এগোলেও তান্ত্রিকের কালো জাদু টোনায় ডুবে আফ্রিকা
তাই কমলনাথ সরকারের ঋণ মকুব শর্ত থেকে বাদ পড়ে যাচ্ছেন বেশিরভাগ কৃষকই। গল্প আরও আছে। শুধু এই দুটো শর্ত নয়। শর্তে বলা হয়েছে, লোন তাদের মাফ করে দেওয়া হবে যারা ‘সিজন্যাল ফসলের’ জন্য লোন নিয়েছেন। অর্থাৎ যে সমস্ত কৃষকেরা চাষ করার জন্য ট্রাক্টর বা বোরিং মেশিন কেনার জন্য বা চাষের অন্যান্য বিষয়ে লোন নিয়েছেন তাদের কোন লোন মুকুব হবে না।
শর্ত আরও আছে। যে কৃষকেরা শুধুমাত্র রাষ্ট্রীয় ব্যাংক বা সরকারি ব্যাংক থেকে ঋণ নিয়েছেন তাদেরই একমাত্র লোন মাফ করা হবে। সব শর্ত মিলিয়ে ব্যাংক পরিসংখ্যানে দেখা যাচ্ছে এই সব শর্তগুলির আওতায় পড়ছেন মাত্র ১০ শতাংশ কৃষক। অর্থাৎ মধ্যপ্রদেশে কৃষকদের মধ্যে ৯০ শতাংশ মানুষের কৃষি ঋণ মকুব করা হবে না।
পড়ুন দ্বিতীয় পর্বঃ পৃথিবী এগোলেও তান্ত্রিকের কালো জাদু টোনায় ডুবে আফ্রিকা
আর এতেই মধ্যপ্রদেশে কৃষকের মাথায় হাত। নির্বাচনী প্রচারের সময় রাহুল গান্ধী কিন্তু কোথাও কৃষি ঋণ মুকুব করার জন্য কোন শর্ত এর কথা বলেন নি। আর যখনই মধ্যপ্রদেশে সরকার গঠন করল কংগ্রেস, তখনই কৃষি ঋণ মকুবের বিভিন্ন শর্তাবলী আরোপ করে দিলেন কৃষকদের উপর।
পড়ুন তৃতীয় ও শেষ পর্বঃ পৃথিবী এগোলেও তান্ত্রিকের কালো জাদু টোনায় ডুবে আফ্রিকা
আর পুরো ঘটনাটি না জেনে দেশের মিডিয়া প্রচার করতে শুরু করে দিয়েছে যে কংগ্রেস সমস্ত কৃষি ঋণ মাফ করে দিয়েছে। তবে সব ছল চাতুরী ধরে ফেলেছেন কৃষক ও চাষীরা। কিভাবে রাজনীতিবিদরা মানুষকে ভাঁওতা দিতে পারেন মধ্যপ্রদেশে কৃষি ঋণ মকুব তার জ্বলন্ত উদাহরণ। রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা বলছেন, কৃষি ঋণ নিয়ে এই ছলচাতুরীর ফল লোকসভাতেই পেতে পারে রাহুলের কংগ্রেস।