শুধু বাংলা কেন; ভারতের কোন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী কখনও এই জিনিসটা করেছেন কিনা জানা নেই। পূর্ব মেদিনীপুরে গিয়ে ঘূর্ণিঝড় ফণীর বিরুদ্ধে লড়াইয়ে; নেতৃত্ব দিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। দুদিন ভোট প্রচার বন্ধ রেখে; মানুষের পাশে দাঁড়ানোর কথা ঘোষণা করেছেন তিনি।
খড়গপুরের উপকূলবর্তী এলাকায় গিয়ে; গত ২ দিন থেকে নিজে ফণীর পরিস্থিতি মনিটরিং করছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। মানুষকে উদ্বেগ না-করে; সতর্ক থাকার পরামর্শ দিয়েছেন তিনি। ৪৮ ঘণ্টার জন্য যাবতীয় রাজনৈতিক কর্মসুচি তিনি বাতিল করেছেন। আর এতেই মুগ্ধ রাজ্যবাসী।
আরও পড়ুনঃ কলকাতাকে ফণীর হাত থেকে বাঁচাল কলকাতা নিজেই, রহস্য গরম
টুইটারে মমতা জানিয়েছিলেন, দুর্যোগের পরিস্থিতিতে সব কর্মসুচি তিনি বাতিল করেছেন। খোলা হয়েছে ২৪*৭ মনিটরিং সেল। খড়গপুরে থেকে নিজে মনিটরিং করছেন তিনি। প্রশাসন পরিস্থিতি মোকাবিলায় যাবতীয় ব্যবস্থা; নিয়ে প্রস্তুত থেকে সামনে থেকে লড়াইটা করলেন তিনি। আগে কোনদিন কোন মুখ্যমন্ত্রীকে; স্পটে গিয়ে সামনা সামনি লড়াই করতে দেখা যায়নি।
ফণীর আতঙ্কে কলকাতার মানুষ; নিজেদের ঘরবন্দি করে ফেলেছিলেন। তবে তখনই বিনিদ্র রজনী কাটালেন; কলকাতার মেয়র ফিরহাদ হাকিম। শুক্রবার সারারাত পুরসভার দফতরে বসে পরিস্থিতির ওপর নজর রাখলেন তিনি। সেইসঙ্গে দুর্যোগ মাথায় নিয়ে শহরের একপ্রাপ্ত থেকে অন্যপ্রান্ত ছুটে বেড়ালেন।
আরও পড়ুনঃ বাংলায় গতিহারা ফণী, হুগলি, বর্ধমান নদিয়া হয়ে ভোরে প্রবেশ করল বাংলাদেশে
খতিয়ে দেখলেন প্রশাসনিক প্রস্তুতি। শেষ পর্যন্ত কলকাতার দূর থেকেই ফনী বর্ধমান হয়ে বাংলাদেশে চলে যাওয়ায় স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলেছে প্রশাসন। মেয়রের এই তৎপরতা অব্যহত ছিল মধ্যরাতেও। একের পর এক বোরো অফিসে ছুটে বেড়ান তিনি। সবকিছু ঠিকঠাক আছে কি না; সে বিষয়ে খোঁজখবর নেন। পরে পৌঁছে যান পুরসভা ভবনে। সেখান থেকে খোঁজখবর নিতে থাকেন সারারাত ধরেই।
এমনকি সাধারণ মানুষ কোনও সমস্যায় পড়লে; সহায়তার হাত বাড়িয়ে দেওয়ার জন্য নিজের হোয়াটসঅ্যাপ নম্বর দিয়েছিলেন মেয়র। হোয়াটসঅ্যাপে কী খবর আসছে; প্রতি মুহূর্তে নজর রাখছিলেন তিনি। এর মধ্যেই অনেক রাতে খড়গপুর থেকে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়; বেশ কয়েকবার শহরের পরিস্থিতি সম্পর্কে খোঁজ খবর নেন বলে স্বয়ং মেয়র জানিয়েছেন। মেয়রের সঙ্গে কাঁধে কাধ মিলিয়ে সারারাত লড়লেন; বোরো চেয়ারম্যান ও কাউন্সিলাররাও।
আরও পড়ুনঃ কলকাতায় নিউ সেক্রেটারিয়েট বিল্ডিংয়ের ছাদে ফুটবলটি এখন ফণীর খবর দিচ্ছে
মমতা ও মেয়রের এই রাতজাগা লড়াইয়ে মুগ্ধ বাংলা। বিশেষ করে পূর্ব মেদিনীপুরে গিয়ে ঝড়ের মনিটরিং করার উদ্যোগ নিয়ে; মুখ্যমন্ত্রী অসাধারণ দৃষ্টান্তস্থাপন করলেন বলেই মনে করছে বাংলার আমজনতা।