চাপ বাড়ল পার্থ ও তৃণমূলের, চাকরি চুরি মামলায় ‘গোপন জবানবন্দি’ দেবেন অর্পিতা। এসএসসি দুর্নীতি মামলায় আদালতে কি গোপন জবানবন্দি দেবেন অর্পিতা? জোর চর্চা এখন কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা ইডি’র অন্দরে। শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় ইডি’র হাতে গ্রেফতার হয়ে আলিপুর সেন্ট্রাল জেলে থাকা অর্পিতা মুখোপাধ্যায় বিচারপতির কাছে, ১৬৪ ধারায় গোপন জবানবন্দি দিতে পারেন। তবে বিষয়টি নিয়ে এখনই চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হয়নি।
যাঁর দুটি ফ্ল্যাট থেকে নগদ প্রায় ৫০ কোটি টাকা, সোনা ও জমির দলিল নিয়ে আরও ৫০ কোটি টাকার সম্পত্তি উদ্ধার হয়েছে, সেই অর্পিতার জবানবন্দি ঘিরে ইতিমধ্যে ইডি’তে জোর আইনি চর্চা শুরু হয়েছে। কারণ, অন্যতম অভিযুক্ত অর্পিতার গোপন জবানবন্দি বা স্বীকারোক্তি পরবর্তীকালে মামলার শুনানিতে কতটা প্রভাব ফেলবে তা জানতে ইডির লিগ্যাল সেলের আইনি বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ নিচ্ছেন তদন্তকারী অফিসাররা।
যদি শেষ পর্যন্ত অর্পিতার জবানবন্দি রেকর্ড হয়, তবে এই মামলায় প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় ও রাজ্য সরকারের উপর চাপ যে আরও বাড়বে, সে নিয়ে কোন সন্দেহ নেই। ইডি সূত্রে খবর, গত কয়েকদিনে জেল হেফাজতে একাধিক চাঞ্চল্যকর তথ্য, তদন্তকারী ইডি অফিসারদের জানিয়েছেন অর্পিতা মুখোপাধ্যায়। তাঁর বয়ান শোনার পর ইডির অফিসাররা তাঁর কাছে জানতে চেয়েছিলেন, এই কথা তিনি সরাসরি বিচারপতি-কে বলতে পারবেন কিনা। অর্পিতা নাকি তাদের বলেন, “আমি প্রস্তুত আছি”।
মূলত তিনটি বিষয়কে সামনে রেখেই, অর্পিতাকে ১৬৪ ধারায় গোপন জবানবন্দি দেওয়াতে চাইছে ইডি। অর্পিতা তাঁর বয়ানে জানিয়েছেন, বিপুল পরিমাণ নগদ অর্থ, সোনাদানা এবং সম্পত্তি উদ্ধার হয়েছে তা কাজের মাধ্যমে উপার্জিত নয়। শুধুমাত্র ঘনিষ্ঠতার কারণেই তাঁকে এই টাকা ও সোনা-দানা, রাখতে দিয়েছিলেন পার্থ চট্টোপাধ্যায়। তাঁর অবর্তমানে তাঁর দুই ফ্ল্যাটে, পার্থের লোকজনই বিপুল টাকা ও সোনা রেখেছে। এটাই অর্পিতার মুখ থেকে বিচারপতির কাছে, জবানবন্দিতে নথিভুক্ত করতে চায় ইডি।
পার্থর সঙ্গে ঘনিষ্ঠতার কারণে গত কয়েকবছরে, অর্পিতা টাকা লেনদেন সংক্রান্ত যা-যা শুনেছেন, কার-কার কাছ থেকে অর্থ নেওয়া হয়েছে তার তালিকা জানতে চায় ইডি। বিভিন্ন জেলা থেকে আসা টাকার জোগান দেওয়া ব্যক্তিদের নাম-ঠিকানা ও পার্থর কাছে টাকা আসার পর প্রভাবশালী কাদের কাছে পৌঁছত, তাও ১৬৪ ধারায় গোপন স্বীকারোক্তিতে রেকর্ড করাতে চাইছেন তদন্তকারীরা।