ভোটের আগে বড়সড় সাফল্য বিজেপির। ভাটপাড়ার বিধায়ক অর্জুন সিং ঘাসফুল ছেড়ে পদ্মফুলে। অর্জুনের হাত ধরে বারাকপুর লোকসভা ছিনিয়ে নিতে পারে বিজেপি, এমনটাই মনে করছে রাজনৈতিক মহল। ২০০১ সাল থেকে ভাটপাড়ার বিধায়ক অর্জুন সিং।
না না করে, বারবার অস্বীকার করেও শেষ পর্যন্ত বিজেপিতে অর্জুন। মমতার প্রার্থী তালিকা প্রকাশের পর প্রথম প্রকাশ্যে বিদ্রোহী হলেন অর্জুন সিং। যেখানেই রাজনৈতিক ব্যক্তিদের বাদ দিয়ে অন্য পেশার মানুষদের জোর করে চাপিয়ে দেওয়া হয়েছে সেখানেই নেতা কর্মীদের মধ্যে চলছে বিদ্রোহ। যদিও প্রকাশ্যে নেত্রীর বিরুদ্ধে মুখ খুললেন একমাত্র অর্জুন সিং।
আরও পড়ুনঃ দিল্লিতে অর্জুন, ৪০ জন তৃণমূল কাউন্সিলর নিয়ে বিজেপিতে যোগদানের জল্পনা
গত মঙ্গলবার রাতে জগদ্দলের মজদুর ভবনে রাত এগারোটা থেকে আড়াইটা পর্যন্ত অনুগামীদের সঙ্গে বৈঠক করেন অর্জুন। সূত্রের খবর, ওই বৈঠকেই অর্জুন তাঁর অনুগামীদের স্পষ্ট ভাষায় জানিয়েছেন, বারাকপুরে তিনি নিজের হাতে তৃণমূলের সংগঠন তৈরি করেছেন। কিন্তু তার পরেও এ বছর তাঁকে টিকিট না দিয়ে দীনেশ ত্রিবেদীকে টিকিট দেওয়া হল। এই অপমানের পর দলে পড়ে থাকার আর কোনও মানেই হয় না।
আরও পড়ুনঃ যোগ্য প্রার্থীর অভাবে চোখে সর্ষে ফুল রাজ্য বিজেপির, প্রার্থীর খোঁজে বৈঠক দিল্লিতে
ভাটপাড়ার পুরসভার আঠাশ জন কাউন্সিলর, হালিশহর পুরসভার এগারেো জন কাউন্সিলর, নৈহাটির ছজন কাউন্সিলর এবং পানিহাটি পুরসভার একজন কাউন্সিলর অর্জুনের সঙ্গে দলবদল করবেন বলে বিজেপি সূত্রে খবর। তবে দিল্লিতে অবশ্য অর্জুন একাই গিয়েছেন। তাঁর ঘনিষ্ঠমহল সূত্রে জানা গিয়েছে, বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় তিনি মুকুলের সঙ্গে কলকাতায় ফিরে আসবেন। তাঁদের সঙ্গে অনুপম হাজরা, সৌমিত্র খাঁ, দুলাল বর, খগেন মুর্মুরাও ফিরবেন কলকাতায়।
আরও পড়ুনঃ বাংলার কোন লোকসভা আসনে কবে ভোট দেখে নিন
বিজেপির এক কেন্দ্রীয় নেতার কথায়, ‘দিল্লি থেকে অর্জুন কেন্দ্রীয় নিরাপত্তা নিয়ে ফিরবেন। যাতে তৃণমূল প্রতিহিংসার রাজনীতি না করতে পারে’।
বারাকপুর লোকসভা কেন্দ্রের অন্তর্গত ৭টি বিধানসভা আসনেই দাপট আছে অর্জুন সিং এর। আমডাঙা, বিজপুর, নৈহাটি, ভাটপাড়া, জগদ্দল, নোয়াপাড়া ও বারাকপুর বিধানসভা কেন্দ্রে মুকুল রায় বিজেপিতে চলে যাবার পর একার হাতে সংগঠন সামলেছেন অর্জুন। যেখানে ভোটে জেতা ছাড়া বাকি কিছুতেই দীনেশ ত্রিবেদীর কোন ভুমিকা নেই বলেই মনে করা হয়।
আরও পড়ুনঃ পশ্চিমবঙ্গে নজিরবিহীন ৭ দফা ভোটে সুবিধা বিজেপির
২০১১ সালে বিধানসভা নির্বাচনে বারাকপুর লোকসভার ৭টি কেন্দ্রেই যেতে তৃণমূল কংগ্রেস। যার মুখ্য ভুমিকায় মুকুল রায়ের সঙ্গে ছিলেন ভাটপাড়ায় জেতা অর্জুন সিং-ও। ভাটপাড়ায় অর্জুন সিং সবচেয়ে বেশি ভোটে জিতেছিলেন।
২০১১ সালে বিধানসভা নির্বাচনে বারাকপুর লোকসভার ৭টি কেন্দ্রের ফলাফলঃ
আমডাঙা–রফিকুর রহমান-তৃণমূল কংগ্রেস-২১,৫৫৭ ভোটে জয়ী
বিজপুর–শুভ্রাংশু রায়-তৃণমূল কংগ্রেস-১২,৬১২ ভোটে জয়ী
নৈহাটি–পার্থ ভৌমিক-তৃণমূল কংগ্রেস-২৭,৪৭০ ভোটে জয়ী
ভাটপাড়া–অর্জুন সিং-তৃণমূল কংগ্রেস-৪৪,৩৮৫ ভোটে জয়ী
জগদ্দল–পরশ দত্ত-তৃণমূল কংগ্রেস-৩৬,০৩২ ভোটে জয়ী
নোয়াপাড়া–মঞ্জু বসু-তৃণমূল কংগ্রেস-৪১,১৪৮ ভোটে জয়ী
বারাকপুর–শীলভদ্র দত্ত-তৃণমূল কংগ্রেস-৩৬,১২৩ ভোটে জয়ী
২০১৬ তেও এই লোকসভা কেন্দ্রের সব বিধানসভা আসন পায় তৃণমূল কংগ্রেস। সৌজন্যে মুকুল রায় ও অর্জুন সিং এর সংগঠন করা। মুকুল রায় চলে যাবার পর একার হাতে বারাকপুর লোকসভায় সংগঠন করেছেন অর্জুন সিং। এর ফল এবার পেতে পারেন অর্জুন, মনে করছেন রাজনৈতিক ও ভোট বিশেষজ্ঞরা।
আরও পড়ুনঃ মমতাকে মুকুলের ভয় দেখিয়ে কি রাজ্যে মন্ত্রী হচ্ছেন অর্জুন
১৯৯৯ ও ২০০৪ এ বাম আমলে এই লোকসভায় লড়ে হেরেছিলেন তৃণমূলের অর্জুন সিং। উত্তর ২৪ পরগনা জেলার বারাকপুর লোকসভা কেন্দ্রে ২০০৯ সালে প্রথমবার তৃণমূল কংগ্রেস প্রার্থী দীনেশ ত্রিবেদী ৫৬০২৪ ভোটে জয়ী হন। ২০১৪ সালে দীনেশ ত্রিবেদী জেতেন ২ লক্ষর বেশি ভোটে।
এর মধ্যে মুকুল রায় চলে যাবার পর গোটা লোকসভা এলাকাতেই নিজের প্রভাব বিস্তার করেছেন অর্জুন। আর এবার সেই সংগঠন এর বিরুদ্ধেই লড়তে হবে দীনেশ ত্রিবেদীকে। একদিকে শুধুমাত্র মমতার নাম নিয়ে তৃণমূল কংগ্রেস প্রার্থী দীনেশ ত্রিবেদী ও অন্যদিকে ২ দশকের বেশি তৃণমূল সংগঠন করা অর্জুন সিং। লড়াই এবার হাড্ডাহাড্ডি হবে বলছেন ভোট বিশেষজ্ঞরা।
আরও পড়ুনঃ নাবালিকাকে বিয়ে করে পুলিশের ভয়ে গা ঢাকা দিলেন কাউন্সিলর
আরও পড়ুনঃ লাস্যময়ী নুসরত ও সুন্দরী মিমিই এবার মমতার চমক
আরও পড়ুনঃ প্রচুর চমক, রাজ্যের ৪২টি আসনে তৃণমূল কংগ্রেসের ৪২জন প্রার্থী কে কে
আরও পড়ুনঃ মিছিল মিটিং করতে মমতার পুলিশ প্রশাসন আর আটকাতে পারবে না বিজেপিকে
আপনার মোবাইলে বা কম্পিউটারে The News বাংলা পড়তে লাইক করুন আমাদের ফেসবুক পেজ।