অভিনব কায়দায় এবার লোকসভা নির্বাচনে নির্দল প্রার্থী হতে চাইছেন মহেশ্বর বর্মন। তার কাছে কোনো অর্থ নেই। তাই এক বোতল রক্ত ও একটি কলমের বিনিময়ে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে চাইছেন তিনি। শুধু তাই নয়, তার এতটাই সমর্থন রয়েছে যে তিনি লোকসভা নির্বাচনে জয়ী হবার ক্ষমতা রাখেন বলে দাবী। আর জয়ী হয়ে তার কাজ হবে, দার্জিলিং জেলার আমুল পরিবর্তন। কোনরূপ অর্থ ছাড়া এক বোতল রক্ত ও একটি পেনের বিনিময়ে প্রার্থী হবার আর্জি জানিয়ে রাষ্ট্রপতির দারস্থ হয়েছেন তিনি।
লোকসভা নির্বাচন হল দেশের হাল কারা ধরবে তার প্রতিযোগিতা। তবে যে কোনো প্রতিযোগিতায় যেমন বেশ কিছু হাস্যকৌতুক মানুষের সমাগম হয়। এবারের লোকসভা নির্বাচনের প্রতিদ্বন্দ্বিতাতেও তেমনই এক মানুষের দেখা পাওয়া গেল দার্জিলিং জেলায়। বুধবার নিজেকে দার্জিলিং জেলার নির্দল প্রার্থী হিসেবে যোগ্য প্রতিপন্ন করার জন্য পাঠশালার ছাত্রের মত ইংরেজিতে কথা বলতে শুরু করেন মাটিগাড়ার পতিরামজোতের বাসিন্দা মাহেশ্বর বর্মন।
তার এই প্রায় মুখস্থ করা ইংরেজির চাপ সইতে না পেরে তাকে বাংলায় বলতে বলা হলে বিষম খেতে খেতে নিজের মনোভাব ব্যক্ত করলেন তিনি। তবে তার শিক্ষাগত যোগ্যতা তিনি গোপন রাখলেন। সে ব্যাপারে জিজ্ঞেস করা হলে তিনি তা জানাতে অস্বীকার করেন। তবে মনোনয়নপত্রে তিনি তা অবশ্যই তুলে ধরবেন বলে জাননা।
তার দাবী তিনি দীর্ঘদিন ধরে কংগ্রেস করে এসেছেন। তারপর কংগ্রেস ভাগ হয়ে তৃণমূল কংগ্রেস নামক নতুন দলের জন্ম নেওয়া মাত্রই জন্মলগ্ন থেকেই তিনি তৃণমূল কংগ্রেস করে আসছেন। এদিকে দার্জিলিং কেন্দ্রটি তৃণমূল কংগ্রেস যখন গজমম’কে ছেড়ে দিল ঠিক তখনই তিনি নির্দল প্রার্থী ইচ্ছে প্রকাশ করলেন।
কিন্তু তার কাছে পয়সা নেই। তার কন্যা অপুষ্টিতে ভুগছে। বৃদ্ধ মায়ের চিকিৎসার খরচ জোগাতে হিমসিম খাচ্ছেন তিনি। ছেলের হাতে অস্ত্রপ্রচার প্রয়োজন৷ তার মধ্যে আবার নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার জন্য অর্থ ব্যয় করার বিলাসিতা বা সামর্থ্য কোনটাই তার নেই। তাই বলে কি প্রার্থী হওয়া বারণ নাকি?
তার মতে ভারতের নাগরিক হিসেবে যেমন ভোট দেবার অধিকার তার আছে ঠিক তেমনই প্রার্থী হবারও অধিকার আছে। তাই একবোতল রক্ত যেমন একটা মানুষের প্রাণ বাঁচাতে পারে ও একটা কলম যেমন ফাঁসির সাজা রদ করতে পারে তেমনি একজন নিষ্ঠাবান মানুষও প্রার্থী হয়ে সমাজের যা কিছু কালিমা সব ঘোচাতে পারে বলে দাবী তার। তাই এক বোতল রক্ত ও একটি কলমের বিনিময়ে তিনি লোকসভা নির্বাচনে প্রার্থী হবার আবেদন জানিয়ে চিঠি লিখে জানান মহকুমা শাসক ও রাষ্ট্রপতির কাছে।
রিপোর্টঃ কৃষ্ণা দাস