মোবাইলে হুমকি দিয়ে নির্বাচন কমিশনকে হাস্যকর প্রমাণ করলেন অনুব্রত মণ্ডল

866
মোবাইলে হুমকি দিয়ে নির্বাচন কমিশনকে হাস্যকর প্রমাণ করলেন অনুব্রত মণ্ডল/The News বাংলা
মোবাইলে হুমকি দিয়ে নির্বাচন কমিশনকে হাস্যকর প্রমাণ করলেন অনুব্রত মণ্ডল/The News বাংলা

অনুব্রত মণ্ডলকে নাকি নজরদারি করা হয়েছে। তাঁর মোবাইল নিয়ে নেওয়া হয়েছে আর তাঁর মোবাইল ব্যবহারে নাকি নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে। নির্বাচন কমিশন থেকে এমনটাই জানা গিয়েছিল রবিবার। আর সেই নির্দেশকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে সাংবাদিকদের সামনেই করলেন ফোন, হুমকি দিতেও বললেন কর্মীদের। সোমবার ভোটের দিন নির্বাচন কমিশনকে হাস্যকর প্রমাণ করলেন অনুব্রত মণ্ডল।

অনুব্রত মণ্ডল-কে নজরদারি করার নির্দেশ দিয়েছে নির্বাচন কমিশন। রবিবার সন্ধ্যা সাতটা থেকে মঙ্গলবার সকাল সাতটা পর্যন্ত তাঁকে নজরদারি করা হবে। সোমবার ভোট শেষ না হওয়া পর্যন্ত তার গতিবিধির ওপর সম্পূর্ণ নজরদারি চালাবে নির্বাচন কমিশন। এই কাজের দায়িত্বে থাকবেন একজন ডেপুটি ম্যাজিস্ট্রেট পর্যায়ের অফিসার। আর এই নির্দেশকে রসিকতার পর্যায়ে নামিয়ে সারাদিন নিজের খেয়াল খুশিমতই ভোট পরিচালনা করলেন বীরভূমের তৃণমূল জেলা সভাপতি।

আরও পড়ুনঃ বীরভূমের নানুরে তৃণমূলের গুন্ডাবাহিনীকে লাঠি হাতে পাল্টা দিলেন গ্রামের মহিলারাই

এদিন ১১ টার পর বাইক মিছিল করেই নির্বাচন কমিশনের ‘কড়া নজরদারি’তে ভোট দিলেন বীরভূম তৃণমূল কংগ্রেস সভাপতি অনুব্রত মণ্ডল। সকাল থেকেই বাড়িতে বসে ল্যান্ডলাইনে বিভিন্ন কর্মীদের থেকে খবর নিয়েছেন। দলিয় কর্মীদের মোবাইল নিয়েও নির্দেশ দিলেন বুথের দায়িত্বে থাকা জেলার কর্মীদের।

সোমবার বেলা ১১টা নাগাদ এক দলীয় কর্মীর বাইকে চেপে ভোট দিতে যান অনুব্রত। নিচুপট্টির ভগবত স্কুলের বুথে গিয়ে তিনি ভোটাধিকার প্রয়োগ করেন। ভোট দিয়ে বেরিয়ে আসার পর তিনি বলেন, “শান্তিপূর্ণভাবেই ভোট চলছে”। তাঁকে নজরবন্দি করার প্রসঙ্গে বলেন, “নজরবন্দিকে পরোয়া করি না”।

আরও পড়ুনঃ বাংলায় শান্তিপূর্ণ ভোট হচ্ছে, গম্ভীর রসিকতা বিশেষ পর্যবেক্ষক অজয় নায়েকের

কমিশনের নির্দেশে অনুব্রত মণ্ডলের মোবাইল ফোনটিও নিয়ে নেওয়া হয়েছে। তবে সকাল থেকেই পাশে রাখা ল্যান্ডলাইনে দলীয় কর্মীদের থেকে খবর নেন তিনি। বিভিন্ন বুথে এজেন্ট বসেছে কি না, সেই খবরও নেন। বেশ হালকা মেজাজেই দেখা গিয়েছে তাঁকে। মোবাইলে দলিয় কর্মীকে বিরোধীদের হুমকি দিতেও বললেন।

জেতার ব্যাপারে তিনি ১০০% নিশ্চিত বলে দাবি করেন অনুব্রত মণ্ডল। তবে তাঁর দাবি উড়িয়ে দিয়ে বিজেপি সভাপতি দিলীপ ঘোষ বলেন, “ডায়লগ অনেক শুনেছি। ক্ষমতার নেশা নেমে গেলে জমিতে এসে যাবে। ২৩ তারিখের পরে বুঝতে পারবেন”।

আরও পড়ুনঃ দুর্গাপুরের জেমুয়া স্কুলে কেন্দ্রীয় বাহিনীর দাবিতে ভোটারদের বিক্ষোভে লাঠিচার্জ

রবিবার সন্ধে থেকে অনুব্রত মণ্ডলকে নজরবন্দি করেছে নির্বাচন কমিশন। রবিবার সন্ধে ৭টা থেকে মঙ্গলবার সকাল ৭টা পর্যন্ত কড়া নজরদারিতে রাখা হচ্ছে তাঁকে। প্রতিনিয়ত তাঁর সঙ্গে রয়েছেন এগজিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট ও কেন্দ্রীয় বাহিনী। তিনি সারাদিন কী করছেন, তার প্রতিটি মুহূর্ত ভিডিওগ্রাফিও করা হচ্ছে।

তাঁর বিরুদ্ধে কড়া পদক্ষেপের দাবি নিয়ে শনিবার রাজ্যের মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিকের কাছে আর্জি পেশ করেছিলেন ভোটকর্মীরা। ভোটকর্মীদের সংগঠনের তরফে মুখ্যনির্বাচনী আধিকারিককে জানানো হয়, চতুর্থ দফায় বীরভূমে অবাধ ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচনের জন্য অনুব্রত মণ্ডলের বিরুদ্ধে কড়া পদক্ষেপ জরুরি।

আরও পড়ুনঃ রানীগঞ্জ ও চিত্তরঞ্জনের একাধিক বুথে ছাপ্পা ভোটের অভিযোগ

ভোটের সময় তাঁকে যাতে ‘গৃহবন্দি’ করে রাখা যায়, সেই অনুরোধও করেন তাঁরা। ভোটকর্মীদের সংগঠনের অভিযোগ ছিল, শাসকদলের হয়ে ভোট করানোর জন্য জেলা তৃণমল নেতা যে কোন রকম সন্ত্রাসের আশ্রয় নিতে পারেন। কিন্তু দেখা গেল, নজরদারি আছে নামেই। সবকিছুই করছেন অনুব্রত। নির্বাচন কমিশনকে হাস্যকর প্রমাণ করলেন অনুব্রত মণ্ডল।

Comments

comments

আপনাদের মতামত জানাতে কমেন্ট করুন