The News বাংলা, নিউ দিল্লী: ‘বাংলায় রথ যাত্রা হবেই, মমতা আটকাতে পারবে না’। এই ভাষাতেই দিল্লী থেকে সাংবাদিক সম্মেলনে মমতাকে হুঁশিয়ারি দিলেন বিজেপি-র সর্বভারতীয় সভাপতি অমিত শাহ। ধার করলেন সেই মমতারই ‘জগাই মাধাই’ তত্ত্ব।
আরও পড়ুনঃ কলকাতা হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চে বিজেপির ‘রথ যাত্রা’র শেষ লড়াই
কলকাতা হাইকোর্ট ‘রথ যাত্রা’র অনুমতি না দেওয়ায় কোচবিহারের সভায় না এসে দিল্লীতেই সাংবাদিক সম্মেলন করেন অমিত শাহ। তিনি বলেন, ‘মমতা ভয় পেয়েছেন। তাই বিজেপির রথ আটকানোর মরিয়া চেষ্টা করছেন। তবে বিজেপি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সামনে আত্মসমর্পণ করবে না’।
দরকার হলে সুপ্রিম কোর্টে যাবার কথা বলেছেন অমিত শাহ। শুক্রবার দিল্লিতে সাংবাদিক সম্মেলনে রাজ্য সরকার ও প্রশাসন এর বিরুদ্ধে আরও বেশ কিছু অভিযোগ করলেন বিজেপি সভাপতি অমিত শাহ। সঙ্গে তিনি জানিয়েছেন, আগামিকাল কলকাতায় আসছেন তিনি।
আরও পড়ুনঃ কলকাতা হাইকোর্টে জিতে মোদীর ‘রথ যাত্রা’ আটকালেন মমতা
এদিন অমিত শাহ বলেন, ‘পশ্চিমবঙ্গে গণতন্ত্রকে হত্যা করা হচ্ছে। প্রশাসন ও সরকারকে ব্যবহার করে গণতন্ত্রের হত্যা করছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়’। এর পরেই গত পঞ্চায়েত ভোটে তৃণমূলের সন্ত্রাসের কথা তুলে ধরেন তিনি। বলেন, ‘গত পঞ্চায়েত নির্বাচনে বিরোধীদের মনোনয়ন পেশ করতে দেয়নি তৃণমূল। যার ফলে আদালত, হোয়াটসঅ্যাপে মনোনয়ন পত্র পেশ করার নির্দেশ দেয়’।
আরও পড়ুনঃ দেশের সব গোয়েন্দাদের টপকে সেরা লালবাজারের অফিসার
অমিত শাহ বলেন, ‘পঞ্চায়েত নির্বাচনে পশ্চিমবঙ্গে ৩৫ শতাংশ আসন বিনা প্রতিদ্বন্দিতায় জিতেছে তৃণমূল। রাজনৈতিক সন্ত্রাসে বামেদেরও ছাড়িয়ে গিয়েছে তারা। মোট ৬৫ জন বিরোধী সমর্থক খুন হয়েছেন গোটা পঞ্চায়েত নির্বাচন প্রক্রিয়ায়’।
পাশাপাশি তিনি বলেন,’রাজনৈতিক হিংসায় এখন পশ্চিমবঙ্গ প্রথম। মমতার শাসনে বাংলা প্রথম নারী পাচারে। শিক্ষার মান তলানিতে ঠেকেছে। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে অনুদানের নামে তোলাবাজি করছেন তৃণমূল নেতারা’।
আরও পড়ুনঃ ‘ধক ধক’ গার্ল মাধুরী দীক্ষিত, ‘রং দে তু মোহে গেরুয়া’
এরপরই অমিত শাহ জানান, আদালতের অনুমতি নিয়ে রথযাত্রা পশ্চিমবঙ্গে হবেই। বার বার আবেদন করা সত্বেও পশ্চিমবঙ্গ প্রশাসন রথযাত্রার অনুমতি দেয়নি। রথযাত্রা হলে পশ্চিমবঙ্গে পরিবর্তনের জোয়ার উঠবে। সেই ভয়েই ‘রথ যাত্রা’র অনুমতি দিচ্ছেন না মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার।
অমিত শাহ জানান, ‘তিনটে রথযাত্রাই হবে। দরকার হলে সুপ্রিম কোর্টে যাব। সব রথ যাত্রাই হবে। আমি নিজে এর উদ্বোধন করব’। ২০১৯-এ পশ্চিমবঙ্গে সংখ্যাগরিষ্ঠতা পাবে বিজেপি বলেই জানান তিনি।
এরপরেই ‘জগাই মাধাই’ তত্বের অবতারণা করেন তিনি। সাধারণত, আমরা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কেই ‘জগাই মাধাই’ বলতে দেখি। মমতা নিজের ভাষণে বিজেপি ও সিপিএম-কে একসঙ্গে বোঝাতে ‘জগাই মাধাই’ বলে থাকেন। এবার সেই ভাষাতেই তৃণমূল ও সিপিএম-কে আক্রমণ করেন অমিত শাহ।
আরও পড়ুনঃ মোদী সরকারের গড়িমসিতে ‘সার্কিট বেঞ্চ’ চালু হচ্ছে না অভিযোগ মন্ত্রীর
কলকাতা হাইকোর্টে মমতার কাছে ‘গোহারা’ হেরে গেছে বিজেপি। রাজ্য সরকার না করে দেবার পরে বিজেপির ‘রথ যাত্রা’য় অনুমতি দেয় নি কলকাতা হাইকোর্টও। ফের একবার আদালতের লড়াইয়ে জিতেছে মা মাটি মানুষের সরকার। আগামী ৯ তারিখ পর্যন্ত কোন ‘রথ যাত্রা’ বা ‘গণতন্ত্র বাঁচাও যাত্রা’ করা যাবে না বলেই রায় দিয়েছে কলকাতা হাইকোর্ট।
এখন ‘রথ যাত্রা’ নিয়ে শেষ লড়াই চলছে, কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি বিশ্বনাথ সামাদ্দার এর ডিভিশন বেঞ্চে। অমিত শাহের এই বক্তব্য বাংলা বিজেপিকে এই লজ্জাজনক অবস্থা থেকে ভরসা দেবে বলেই মনে করা হচ্ছে।