The News বাংলা, কলকাতা: নরেন্দ্র মোদী- অমিত শাহের রথযাত্রার পর বাংলায় হবে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পবিত্র যাত্রা। রথযাত্রার পর পথে নেমে বাংলার শুদ্ধিকরণ করবে তৃণমূল কংগ্রেস। নেতাজী ইনডোর স্টেডিয়ামে দলের বৈঠকে শুক্রবার একথা ঘোষণা করলেন তৃণমূল নেত্রী নিজেই।
শুক্রবার কলকাতার নেতাজি ইন্ডোরে বর্ধিত কোর কমিটির বৈঠকে হাজির হয়েছিলেন তৃণমূলের শীর্ষ ও সবস্তরের নেতারাই। সকলেই উদগ্রীব ছিলেন লোকসভা ভোটের আগে নেত্রীর ভাষণের জন্য।
উনিশের লোকসভার আগে কি কি রণকৌশল বাতলে দেন দলনেত্রী সেই কৌতূহলই ছিল সকলের মধ্যে৷ স্বভাবসিদ্ধ ভঙ্গিতে কেন্দ্রে ক্ষমতাসীন বিজেপি সরকারের তুলোধোনা করেন মুখ্যমন্ত্রী। নরেন্দ্র মোদী- অমিত শাহের রথযাত্রার পর পবিত্র যাত্রা করে বাংলার শুদ্ধিকরণ করবে তৃণমূল কংগ্রেস, ঘোষণা নেত্রীর।
আরও পড়ুনঃ হুমকি মুকুলকে, ভোট আসতেই ফের উত্তপ্ত বাংলার পাহাড়
আসন্ন লোকসভা নির্বাচনের প্রচারে শুরুতেই ঝড় তুলতে বদ্ধপরিকর বিজেপি। সেইলক্ষ্যে, ‘রথযাত্রা’ কর্মসূচির ডাক দিয়েছে পদ্ম শিবির। এবার গেরুয়া শিবিরের এই কর্মসূচিকেই নজিরবিহীন আক্রমণ করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
ঘোষণা করলেন পবিত্র যাত্রা নামে পালটা কর্মসূচির। দলের সকল স্তরের নেতা-কর্মীদের নির্দেশ দিলেন বিজেপির উত্থান আটকানোর এবং সতর্ক থাকার। ছকে দিলেন আগামী লোকসভা নির্বাচনের রণকৌশল।
ডিসেম্বরে ৩ জায়গা থেকে রথের দড়িতে টান দেবেন বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি অমিত সাহ। কলকাতায় রথযাত্রা উপলক্ষে জনসভা করবেন স্বয়ং নরেন্দ্র মোদী। যদিও এখনও রথযাত্রার ছাড়পত্র দেইনি পুলিশ। পাল্টা হাইকোর্টে যাওয়ার চেষ্টা করছে বিজেপি।
আরও পড়ুনঃ লোকসভা ভোটের আগে ফের গুরুংকে নিয়ে লড়াই বিজেপি- তৃণমূলে
অনুমতি ছাড়া রথযাত্রা হবে কি না তা নিয়ে কোন দিশা দেখাতে পারছে না রাজ্য বিজেপি। পাল্টা তারা দাবী করেছেন যদি অনুমতি না পাওয়া যায় তা হলে অনুমতি ছাড়াই রথযাত্রা করবেন।
শুক্রবার বিজেপির এই রথযাত্রাকেই আক্রমন করেন মমতা। কোর কমিটির বৈঠকে মমতা ব্যানার্জী বলেছেন বিজেপির রথযাত্রার পাল্টা তারা পবিত্র যাত্রা করবেন৷ কারন তৃনমূল মনে করে লোকসভা ভোটের আগে বাজার গরম করতে আসরে নামতে চলেছে বিজেপি। তাই সাম্প্রদায়িক সুড়সুড়ি দিচ্ছে তারা। তারই প্রতিবাদে রথযাত্রার পর বাংলার শুদ্ধিকরণে পবিত্র যাত্রা করবে তাঁর দল।
এদিন মমতা অভিযোগ করেন, সাম্প্রদায়িকতার বিষবাষ্প ছড়াচ্ছে গেরুয়া শিবির এবং জাতি ও ধর্মের ভেদাভেদে দেশ ভাগ করতে চাইছে তারা৷ তাঁর অভিযোগ, রাজ্যে গোপনে কাজ করছে বিজেপি ও তাঁদের সহযোগী হিন্দুত্ববাদী সংগঠনগুলি৷ কেন্দ্রের বিরুদ্ধে আক্রমণের ঝাঁজ বাড়াতে তিনি টেনে আনেন, সিবিআইয়ের দুই শীর্ষ কর্তার বিবাদকে। হাতিয়ার করেন আরবিআই আর কেন্দ্রের লড়াইকে।
আরও পড়ুনঃ রয়েল বেঙ্গলের মৃত্যুর পর মমতার বেঙ্গল সাফারিতে ফের ‘অসুখ’
এরপরই বিজেপির আসন্ন রথযাত্রা কর্মসূচিকে টার্গেট করেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়৷ কটাক্ষের সুরে বলেন,’ওটা জগন্নাথ বা শ্রীকৃষ্ণের রথ নয়। ওটা ফাইভ স্টার হোটেল। ওর মধ্যে খাওয়া-দাওয়া, ঘোরা-ফেরার এলাহি ব্যবস্থা রয়েছে। ওটা রাবণ যাত্রা’।
এরপরই মমতা ঘোষণা করেন রাজ্যের শাসকদলের পালটা কর্মসূচি। বলেন,’রথযাত্রার পরের দিন একই স্থানে, একই সময়ে পালটা কর্মসূচি করবে তৃণমূল’। মুখ্যমন্ত্রী এই কর্মসূচির নাম দেন, ‘পবিত্র যাত্রা’, শান্তি যাত্রা ও একতা যাত্রা’৷ বিজেপির কর্মসূচির কড়া সমালোচনা করে মুখ্যমন্ত্রী দাবি করেন যে, বিজেপি যে দূষণ ছড়াবে তা পবিত্র করার জন্যই তৃণমূলের এই পালটা কর্মসূচি।
ভোট এখনও প্রায় ৫ মাস বাকি তার আগেই ভোটের বাজার গরম করতে তৃনমূল ও বিজেপি আসরে নামতে চলেছে৷ রথযাত্রার পাল্টা পবিত্র যাত্রা। এখন দেখার বিষয় এটাই যে, সত্যি কি বাংলায় রথযাত্রা করে হিন্দু ভোটে থাবা বসাতে পারবে বিজেপি? নাকি বাংলার ভোট যাবে সেই মমতার ঝুলিতেই? আমজনতার পাশাপাশি সেই দিকেই তাকিয়ে বাংলা ও দেশের রাজনৈতিক মহল।