সিরিয়ায় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সহায়তাপুষ্ট যোদ্ধারা বলছে, তারা দেশটির পূর্বাঞ্চলীয় বাগহাউজ এলাকায় ইসলামিক স্টেটের (আইএস) সর্বশেষ অবস্থান গুঁড়িয়ে দিয়েছে। এতে স্বঘোষিত ইসলামি খিলাফতের দাবি করা জিহাদি গোষ্ঠীটির বিরুদ্ধে চলা অভিযানের ইতি ঘটছে বলে মনে করছে তারা। খবর সংবাদ সংস্থাস রয়টার্স সূত্রে।
আরও পড়ুনঃ সনিয়ার মতোই নাচনেওয়ালি স্বপ্না চৌধুরী, রাহুলের উচিৎ তাকে বিয়ে করা, মন্তব্য বিধায়কের
সিরিয়ান ডেমোক্রেটিক ফোর্সেসের (এসডিএফ) মুখপাত্র মুস্তফা বালি টুইটারে দাবি করেন, বাগহাউজ মুক্ত হয়েছে। দায়েশের বিরুদ্ধে বিজয় অর্জিত হয়েছে এবং তথাকথিত ইসলামি খিলাফতের ইতি ঘটেছে। শেষ হয়েছে ভয়ঙ্কর ইসলামিক স্টেট বা আইএস রাজত্ব।
আরও পড়ুনঃ সব্যসাচীর সঙ্গে দিলীপের সাক্ষাৎ ঘিরে জল্পনা ফের চরমে
বাগহাউজে অবস্থানরত রয়টার্সের এক সাংবাদিক অবশ্য বলছেন, সেখানে এখনও মাঝে মাঝেই গোলাগুলি ও কামানের শব্দ পাওয়া গেছে।
আরও পড়ুনঃ রাহুলের জেতা নিয়ে সংশয় আমেঠীতে, সম্মান রাখতে লড়তে পারেন দক্ষিনের এই কেন্দ্র থেকে
চূড়ান্ত পর্যায়ের লড়াই কয়েক সপ্তাহ ধরে চলছে এবং বড়সংখ্যক বেসামরিক জনতাকে উদ্ধার করা হয়েছে বলেই জানা গেছে। কুর্দি নেত্বত্বাধীন এসডিএফের যোদ্ধাদের জন্য বিজয়টি আরো মধুর হিসেবে দেখা দিচ্ছে, কারণ তারা তাদের ‘নওরোজ’ (নববর্ষ) উদযাপন করতে যাচ্ছে।
আরও পড়ুনঃ ইন্ডিয়ান আর্মি অফিসারদের কম্যান্ডো ট্রেনিং দিচ্ছেন এক নারী
বাগহাউজে পরাজয়ের মাধ্যমে যদিও জিহাদি গোষ্ঠীটির নিয়ন্ত্রণের ইতি ঘটছে, তবে গোষ্ঠীটি এখনও হুমকি দিয়েই যাচ্ছে বলেই জানা গেছে। ২০১৪ সালে সিরিয়া ও ইরাকের বিশাল অংশজুড়ে খিলাফতের ঘোষণা দিয়ে নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা করেছিল এই নৃশংস আইএস জঙ্গি গোষ্ঠীটি।
আরও পড়ুনঃ পাকিস্তানে দুই হিন্দু নাবালিকাকে শ্লীলতাহানি ও জোরপূর্বক মুসলিম ধর্মান্তর
তবে সিরিয়ার প্রত্যন্ত মরু অঞ্চল ও কিছু ইরাকি শহরে এখনও আইএসের সামান্য নিয়ন্ত্রণ রয়েছে বলেই জানা গেছে। গুপ্ত অবস্থান থেকে এসে হঠাৎ করে গোলাগুলি ও অপহরণের ঘটনা ঘটাচ্ছে এবং পুনরায় উত্থান ঘটানোর চেষ্টা চালাচ্ছে। তবে সেটাও কয়েকদিনের মধ্যেই শেষ করে দেওয়া হবে বলেই জানা গেছে।
আরও পড়ুনঃ মুক্তির আগেই বিতর্কে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর বায়োপিক
যুক্তরাষ্ট্র মনে করছে, আইএস নেতা আবু বকর আল-বাগদাদি বর্তমানে ইরাকে অবস্থান করছেন। ২০১৪ সালে মসুলের একটি মসজিদ থেকে মুসলিম বিশ্বের স্বঘোষিত খলিফা দাবি করেছিলেন তিনি।
আইএস নিয়ে আরও শঙ্কার বিষয় হলো, আফগানিস্তান, নাইজেরিয়া ও অন্যান্য অঞ্চলের জঙ্গিগোষ্ঠী কর্তৃক আইএসের প্রতি অব্যাহত সমর্থন প্রদর্শন। গোয়েন্দা সংস্থাগুলো বলছে, আইএসের পশ্চিমা অনুসারীরা নতুন নতুন হামলা চালাতে পারে।
আরও পড়ুনঃ ধামাচাপার দেওয়ার চেষ্টা বিফলে, অভিষেকের স্ত্রীর বিরুদ্ধে এফআইআর শুল্ক দফতরের
তা সত্ত্বেও বাগহাউজে আইএস কে হঠিয়ে দেওয়া জঙ্গিগোষ্ঠীটির বিরুদ্ধে এক বড় বিজয়। এছাড়া সিরিয়ায় আট বছর ধরে চলা গৃহযুদ্ধেরও একটি গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা, যেখানে প্রধান একটি প্রতিপক্ষ সমূলে উৎপাটন হয়েছে। এখন সিরিয়ার গৃহযুদ্ধে গুরুত্বপূর্ণ শক্তিগুলো হচ্ছে প্রেসিডেন্ট বাশার আল আসাদ নেতৃত্বাধীন সরকারি বাহিনী, তুরস্কের মদদপুষ্ট বিদ্রোহীরা এবং কুর্দি নেতৃত্বাধীন এসডিএফ।
আরও পড়ুনঃ নরেন্দ্র মোদী সরকারের চাপে লন্ডনে গ্রেফতার ব্যাঙ্ক কেলেঙ্কারির খলনায়ক নীরব মোদী
পুরো সিরিয়ার ওপর নিয়ন্ত্রণ পুনর্বহাল করতে চাইছেন আসাদ এবং ইরানি মিত্রশক্তি। এদিকে এসডিএফকে সমূলে উৎপাটন করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ তুরস্ক, যাদের তারা সন্ত্রাসী ঘোষণা করেছে।
আরও পড়ুনঃ বাম কংগ্রেস বিজেপির আপত্তি নেই, কেন্দ্রীয় বাহিনী নিয়ে কেন মাথাব্যথা শুধু তৃণমূলের
আল কায়েদার একটি উপশাখা (ফ্যাকশন) হিসেবে ইরাকে জন্ম নিয়েছিল আইএস। কিন্তু সিরিয়ায় গৃহযুদ্ধের সুযোগ নিয়ে সিরিয়া ও ইরাকের বিশাল অংশ নিজেদের নিয়ন্ত্রণে নিয়ে যায় এবং বিশ্বব্যাপী জিহাদি নেটওয়ার্ক স্থাপন করে।
আরও পড়ুনঃ বাবুলকে হারাতে ১ কোটি টাকার কাজের টোপ, বিতর্কিত ঘোষণা মেয়রের
২০১৪ সালে ইরাকের ঐতিহাসিক নগরী মসুল ও সিরিয়ার রাকার নিয়ন্ত্রণ গ্রহণ করে তারা। তারা বিশ্বজুড়ে সমর্থক গোষ্ঠীকে বাড়িঘর ছেড়ে জিহাদি ইউটোপিয়ামুখী হওয়ার আহ্বান জানায়। নিজস্ব মুদ্রা, পতাকা, পাসপোর্ট ও সামরিক কুচকাওয়াজ প্রচলন করে।
তেল উত্তোলন, অপহরণ ও প্রত্নতাত্ত্বিক স্থাপনা বিক্রির মাধ্যমে নিজেদের কর্মসূচির অর্থায়ন করে আসছিল তারা। নিজেদের কর্মসূচির মধ্যে ছিল কিছু সংখ্যালঘু গোষ্ঠীকে নিধন করা, বন্দি নারীদের বাজারে দাসী হিসেবে বিক্রি করা, ছোটখাটো অপরাধে নিষ্ঠুর শাস্তি দেয়া এবং বন্দিদের হত্যাকাণ্ড ভিডিও করে প্রচার করা।
আরও পড়ুনঃ বিরোধী মহিলা প্রার্থীদের ‘মাল’ সম্বোধন করে কুরুচিপূর্ণ আক্রমণ ফিরহাদের
এসব কর্মকাণ্ডে সব শক্তি তাদের বিরুদ্ধে লড়াই শুরু করে। ২০১৭ সালে ইরাকের বেশির ভাগ অঞ্চল থেকে তাদের খেদিয়ে দেওয়া হয় এবং সিরিয়ার বাগহাউজ থেকে উৎপাটনের মাধ্যমে আইএসের সর্বশেষ ঘাঁটির পতন হলো।
আপনার মোবাইলে বা কম্পিউটারে The News বাংলা পড়তে লাইক করুন আমাদের ফেসবুক পেজ।