অধীর চৌধুরী ও দীপা দাশ্মুন্সি বিজেপির পথে! উত্তেজনায় ফুটছে গেরুয়া শিবির, চরম অস্বস্তি প্রদেশ কংগ্রেসে।
লোকসভা নির্বাচনের দিনক্ষন যতই এগিয়ে আসছে, রাজনীতির মঞ্চে ততই নতুন নতুন সম্ভাবনার ক্ষেত্র প্রস্তুত হচ্ছে। সময়ের সাথে সাথে সম্ভাবনাগুলোও প্রচ্ছন্ন থেকে প্রকট হচ্ছে। লোকসভা নির্বাচনের আগেই বিভিন্ন রাজ্যে যেমন দলবদলের হিড়িক পড়েছে, এই রাজ্যও তার ব্যতিক্রম নয়।
আরও পড়ুনঃ মুকুল রায়কে বাড়িতে ডেকে বৈঠক করে মমতার শাস্তির মুখে সব্যসাচী
সম্প্রতি মুকুল রায়ের হাত ধরে তৃণমূল ত্যাগ করেছেন তৃণমূল সাংসদ সৌমিত্র খাঁ। মমতাকে ‘জঙ্গলমহলের মা’ বলে সম্বোধন করা আইপিএস অফিসার ভারতী ঘোষও বিজেপিতে যোগ দিয়েছেন। প্রাক্তন তৃণমূল ছাত্র পরিষদের নেতা শঙ্কুদেব পন্ডাও সামিল হয়েছেন বিজেপিতে।
মেয়রের পদ থেকে ইস্তফার পর শোভনের বিজেপিতে আসার সম্ভাবনা উঠে আসছে। বিধাননগরের মেয়র সব্যসাচী দত্তের সাথে মুকুল রায়ের বৈঠিক ঘিরে যখন জল্পনা তুঙ্গে, তখনই উঠে আসছে অধীর চৌধুরী ও দীপা দাশমুন্সির নামও।
আরও পড়ুনঃ মোদীর উদ্বোধন করা সার্কিট বেঞ্চের ফের উদ্বোধন মমতার
শুক্রবারই দিল্লিতে কংগ্রেস সাংসদ অধীর চৌধুরীর আমন্ত্রনে মুকুল রায় নৈশভোজে অংশগ্রহন করছেন। সঙ্গে উল্লেখযোগ্যভাবে উপস্থিত থাকছেন প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী প্রিয়রঞ্জন দাশমুন্সির পত্নী দীপা দাশমুন্সিও। আর তাতেই এই দুই কংগ্রেস হেভিওয়েটের বিজেপিতে যোগদানের সম্ভাবনা প্রবল হচ্ছে।
প্রাক্তন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর রঞ্জন চৌধুরীর সাথে দলের সম্পর্ক মোটেই ভালো নয়। তৃণমূলের সাথে কংগ্রেসের সম্ভাবনা তৈরি হলে বরাবরই তিনি সেই জোটের বিরুদ্ধে সোচ্চার হয়েছেন। তাঁকে সরিয়ে সোমেন মিত্রকে প্রদেশ সভাপতি করাটাও ভালভাবে নেননি তিনি।
আরও পড়ুনঃ বিধাননগরের মেয়র সব্যসাচীর বাড়িতে মুকুল, জল্পনা তুঙ্গে
এদিকে এই মুহুর্তে লোকসভা ভোটে সিপিএম এর সঙ্গে জোট হয়েছে কংগ্রেসের। তাদের গতবারের জেতা দুটি আসন রায়গঞ্জ ও মুর্শিদাবাদ আসন দুটি কংগ্রেসকে ছাড়তে রাজি না হওয়ায় নিজের গড়েই আসন পাবেন না দীপা। রাহুল গান্ধী ইতিমধ্যেই এই প্রস্তাবে সম্মতি দিয়েছেন।
উল্লেখ্য, রায়গঞ্জ ও মুর্শিদাবাদে কংগ্রেসের তরফে যথাক্রমে দীপা দাশমুন্সি এবং অধীর ঘনিষ্ঠ আবু হেনার লড়ার কথা ছিল। কিন্তু গতবারের সিপিএমের জেতা এই আসন দুটি কং-সিপিএম আসন রফার জন্য পেয়েছে সিপিএমই। সিপিএম পুনরায় মহম্মদ সেলিম ও বদরুদ্দোজা খানকে ওই দুটি আসনে প্রার্থী করছে। বিজেপি বিরোধী জোটের স্বার্থে কংগ্রেস হাইকমান্ড সিপিএমের দাবিকেই সীলমোহর দিয়েছে। এই অবস্থায় অস্বস্তি কাটাতে গেরুয়া পতাকার নিচে সামিল হওয়াই অধীর ও দীপার একমাত্র রাস্তা বলে মনে করা হচ্ছে।
আরও পড়ুনঃ কংগ্রেস স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বদল করত আমরা ঘরে ঢুকে মেরেছি, বললেন মোদী
পশ্চিমবঙ্গকে আগেই পাখির চোখ করেছিল বিজেপি। পশ্চিম ও উত্তর ভারতের রাজ্যগুলোয় বিজেপি সিংহভাগ আসন জিতেছিল ২০১৪ লোকসভা নির্বাচনে। এবার ওইসব রাজ্যে বিজেপির সিট বাড়ার খুব একটা সম্ভাবনা নেই। বরং আসন কমে যাবার আশঙ্কা। তাই বিজেপি টার্গেট করেছে পূর্ব ও উত্তর পূর্বের রাজ্যগুলোকে, যার প্রধান লক্ষ্য ৪২ লোকসভা আসন বিশিষ্ট পশ্চিমবঙ্গ।
আরও পড়ুনঃ শহর কলকাতায় ১০০০ কেজি বিস্ফোরক উদ্ধার
অন্য দল থেকে হেভিওয়েটদের নিজেদের দলে টানতে পারলে সেটা রাজ্য বিজেপিতে বড় অক্সিজেন যোগাবে বলেই মনে করছেন রাজনৈতিক বিশিষ্টজনেরা। সাথে সাথে প্রদেশ কংগ্রেসের অস্বস্তি যে কয়েক গুন বাড়বে, তা বলার অপেক্ষা রাখে না। আর লোকসভা ভোটের আগেই তৃণমূল ও কংগ্রেস ভাঙিয়ে বিজেপিকে সেই রাস্তায় নিয়ে যেতে উঠে পড়ে লেগেছেন মুকুল রায়।
যদিও অধীর চৌধুরী ও দীপা দাশমুন্সী দুজনেই বিজেপিতে যাওয়ার কথা অস্বীকার করেছেন। বলেছেন, আমরা কংগ্রেসেই আছি। কোথাও গেলে সাংবাদিকদের জানিয়েই যাব।
আরও পড়ুনঃ টিভি চ্যানেল দেখা নিয়ে ভুল বোঝাচ্ছে কেবল অপারেটররা
আরও পড়ুনঃ মরে গিয়েও তৃণমূল বিজেপির হাত থেকে রেহাই পেলেন না বড়মা
আরও পড়ুনঃবৈশাখীর হাত ধরে বিজেপিতে শোভন, জল্পনা তুঙ্গে
আপনার মোবাইলে বা কম্পিউটারে The News বাংলা পড়তে লাইক করুন আমাদের ফেসবুক পেজ।