রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দ এদিন অনুমোদন দিলেন কেন্দ্রীয় সরকারের আনা তিন তালাক অর্ডিন্যান্সে। যার ফলে এবার থেকে তিন তালাক বিলে মুসলমান পুরুষরা শাস্তিযোগ্য অপরাধ করেছেন বলেই বিবেচিত হবেন। এদিন রাষ্ট্রপতির অনুমোদনের ফলে এক বছরের মধ্যে তৃতীয়বার তিন তালাক বিলটি নিয়ে আলোচনা শুরু হয়েছে।
তাৎক্ষণিক তিন তালাক বন্ধে ফের অর্ডিন্যান্স নিয়ে এসেছিল নরেন্দ্র মোদী সরকার। গত মঙ্গলবারই কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভার বৈঠকে এই বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। এই অর্ডিন্যান্সে তাৎক্ষণিক তিন তালাক শাস্তিযোগ্য অপরাধ হিসেবে গণ্য করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার নতুন করে আনা এই তিন তালাক অর্ডিন্যান্সে সই করলেন রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দ।
আরও পড়ুনঃ প্রভিডেন্ট ফান্ডে সুদ বাড়িয়ে চাকুরিজীবীদের মুখে হাসি ফোটালেন মোদী
তিন তালাক অর্ডিন্যান্সকে আইনের রূপ দিতে সংসদে বিল এনেছিল নরেন্দ্র মোদী সরকার। গত ২৭ ডিসেম্বর এই বিল পাশও হয়ে যায় লোকসভায়। কিন্তু রাজ্যসভায় বিজেপির একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা নেই। তাই রাজ্যসভায় বারবার আটকে যাচ্ছে এই বিল। এদিকে বিরোধী দলগুলি এই বিলের বিরোধীতায় সরব। বর্তমানে বিলটি রাজ্যসভার অনুমোদনের অপেক্ষায় আছে।
এদিকে, আগামী ৩ জুন বর্তমান লোকসভার মেয়াদ ফুরোচ্ছে। ফলে বিলটির মেয়াদও শেষ হয়ে যাবে। যে কারণে তিনতালাক ইস্যুতে পুনরায় অর্ডিন্যান্স জারি করতে চলেছে মোদী সরকার।
আরও পড়ুনঃ পাকিস্তান চিনকে ভয় পাইয়ে ভারতীয় বায়ুসেনায় যুক্ত হল তেজস
দ্য মুসলিম উইমেন বিল (প্রোটেকশন অব রাইটস অন ম্যারেজ), রাজ্যসভায় পাশ হওয়া এখনও বাকী রয়েছে। লোকসভায় তা পাশ করিয়ে নিয়েছে কেন্দ্রের নরেন্দ্র মোদী সরকার। শেষ বাজেট অধিবেশনে তা পাশ করানোর জন্য উঠলেও রাজ্যসভায় বিরোধীদের চাপে তা শেষ পর্যন্ত সরকার পাশ করাতে পারেনি।
আরও পড়ুনঃ চিরশত্রুকে শিক্ষা দিতে ভারত পাক যুদ্ধ চান বাবা রামদেব
সংসদে আলোচনা না হওয়ায় আগামী ৩ জুন বিলের মেয়াদ ফুরোবে। তার আগে নতুন লোকসভা গঠিত হবে না। ফলে বিলটি অকার্যকর হওয়ার আশঙ্কা ছিল। এর আগে গত মঙ্গলবার কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভা অর্ডিন্যান্সে সম্মতি দিয়েছিল।
বিরোধীরা এই বিলের বারবার বিরোধিতা করে এসেছে। মুসলমান পুরুষদের সাজা দিতেই এই বিল তৈরি হয়েছে বলে অভিযোগ করেছে বিরোধীরা। এদিকে সরকারের দাবি, মুসলমান মহিলাদের সুরক্ষায় এই বিল আনা হয়েছে।
আরও পড়ুনঃ আমার ভাইয়ের রক্তে রাঙানো ২১ শে ফেব্রুয়ারী আমি কি ভুলিতে পারি
তবে অর্ডিন্যান্স জারি হলেও সেটাকে সংসদে অনুমোদন করাতেই হবে। তিন তালাক অর্ডিন্যান্স জারি করে বিলটি বাঁচিয়ে রাখল এটাই বলা যায়। তবে ফের বিরোধীদের তোপের মুখে পড়েছে কেন্দ্র সরকার। বিরোধীদের অভিযোগ, “লোকসভা ভোটে মুসলিম মহিলাদের ভোট টানতেই রাজ্যসভায় পাশ না হওয়ার পরেও অর্ডিন্যান্স জারি করেছে মোদী সরকার। আর রাষ্ট্রপতিও সই করে দিলেন অর্ডিন্যান্সে। সংসদকে এড়িয়ে এটা সম্পূর্ণ অগণতান্ত্রিক ঘটনা”।
“তিন তালাক বিল পাশ করতে দিচ্ছে না বিরোধীরা, এই জন্যই সরকারের আনা অর্ডিন্যান্সে সই রাষ্ট্রপতির”, দাবি বিজেপির তরফ থেকে। বিজেপির কাছে তিন তালাক-ই ২০১৯ লোকসভা ভোটের অন্যতম বড় ইস্যু, এটা আর বলার অপেক্ষা রাখে না। বিরোধীরাও এটা নিয়ে বিজেপিকে ইস্যু করতে না দিতে সমান সচেষ্ট। তাই এই নিয়ে ভোটের বাজার যে সরগরম হবে সেটা বলাই যায়।
আপনার মোবাইলে বা কম্পিউটারে The News বাংলা পড়তে লাইক করুন আমাদের ফেসবুক পেজ।