২০১৬র পর আবার ২০১৯। একদম একই ঘটনা নদিয়ার শান্তিপুর কলেজে। ২০১৬তে পরিচালন সমিতির ভোটে দাঁড়ানোয় অঙ্কের অধ্যাপক অমরজিৎ কুণ্ডুকে আগ্নেযাস্ত্র দেখিয়ে মারধর করা হয়। তারপর থেকে শান্তিপুর কলেজে অশান্তি লেগেই আছে। এবার একই কায়দায় আক্রান্ত দুই অধ্যাপক রামকৃষ্ণ মণ্ডল ও যাদব ঘোষ।
মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বারবার বলছেন স্কুল-কলেজে শান্তি শৃঙ্খলা বজায় রাখতে হবে। বহিরাগতদের ঢোকা আটকাতে হবে। কিন্তু সেটা যে কথার কথা হয়েই থাকছে তা চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিল নদিয়ার শান্তিপুর কলেজ। যত অশান্তি শান্তিপুরেই। এবার তৃণমূলের বিরুদ্ধে অভিযোগ কলেজে ঢুকে অধ্যাপক পেটানোর।
আরও পড়ুনঃ পিটিটিআই মামলায় সুপ্রিম কোর্টে ফের মুখ পুড়ল রাজ্যের
তৃণমূল আমলে রাজ্যের বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শিক্ষকদের হেনস্থার অভিযোগ নতুন নয়। কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়ে তৃণমূল ছাত্র পরিষদের বিরুদ্ধে এই অভিযোগ উঠেছে একাধিকবার। এই ধরণের ঘটনায় সরব হয়ে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীকে পড়ুয়াদের উদ্দেশ্যে শিক্ষকদের সম্মান করার বার্তা দিতে শোনা গেছে বারবার। তা সত্ত্বেও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে বন্ধ হয়নি শিক্ষক হেনস্থার ঘটনা। নদিয়ার শান্তিপুর কলেজের ঘটনা তারই প্রমাণ।
আরও পড়ুনঃ নেতাদের পর সিনেমার প্রয়োজক, চিটফান্ড দুর্নীতিতে গ্রেফতার শ্রীকান্ত মোহতা
এবার শান্তিপুর কলেজে দুই অস্থায়ী অধ্যাপককে হেনস্থা ও মারধরের অভিযোগ উঠল এক টিএমসিপি নেতা ও তার অনুগামী কলেজ ছাত্রদের বিরুদ্ধে। আক্রান্ত দুই অধ্যাপকের নাম রামকৃষ্ণ মণ্ডল ও যাদব ঘোষ। বৃহস্পতিবার বিকেলে নদিয়ার শান্তিপুর কলেজে দুই অস্থায়ী অধ্যাপককে হুমকি ও মারধরের অভিযোগ ওঠে।
আরও পড়ুনঃ প্রিয়াঙ্কা গান্ধী মা দুর্গার সাক্ষাৎ অবতার, পোস্টার কংগ্রেসের
অভিযোগ, শান্তিপুর কলেজের ইতিহাস ও হিসাবশাস্ত্রের দুই অস্থায়ী শিক্ষক রামকৃষ্ণ মণ্ডল ও যাদব ঘোষকে গত কয়েকদিন আগে ফোনে মারধর করার হুমকি দেয় শান্তিপুরের টিএমসিপি নেতা মনোজ সরকার। অভিযোগ, বৃহস্পতিবার দুপুরে রামকৃষ্ণ মণ্ডল ও যাদব ঘোষকে আগ্নেয়াস্ত্র দেখিয়ে কলেজের গ্রন্থাগারে নিয়ে গিয়ে মারধর করে তৃনমূল নেতারা।
সৌমিত্র প্রামাণিক নামের এক ছাত্র নেতার নির্দেশেই বেশ কয়েকজন কলেজ ছাত্র ও কিছু বহিরাগত এসে তাদেরকে আগ্নেয়াস্ত্র দেখিয়ে হুমকি দেয় এবং মারধর করে, এমনটাই অভিযোগ। আক্রান্ত শিক্ষকদের অভিযোগ, কলেজে কিছু অনৈতিক কাজের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করার জন্যই এই হামলার ঘটনা ঘটল।
আরও পড়ুনঃ ভরা ক্লাসে উষ্ণ চুম্বন, ছাত্র ছাত্রীদের কীর্তি দেখে সবাই তাজ্জব
পরে বিষয়টি নিয়ে রাতে শান্তিপুর থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন রামকৃষ্ণ মণ্ডল ও যাদব ঘোষ। যদিও তাদের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ অস্বীকার করেছেন তৃণমূল ছাত্রনেতা মনোজ সরকার ও সৌমিত্র প্রামানিক। অন্যদিকে পুরো বিষয়টি খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দিয়েছেন কলেজ অধ্যক্ষ চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য্য।
তৃণমূলনেত্রী শিক্ষকদের সম্মান করার বার্তা দিলেও, সম্পূর্ণ উলটো ছবি শান্তিপুর কলেজে। ২০১৬ সালেও পরিচালন সমিতির ভোটে দাঁড়ানোয় অধ্যাপকের মাথায় রিভলভার ঠেকিয়ে হুমকি ও মারধরের অভিযোগ ওঠে তৃণমূল নেতা অজয় দে-র অনুগামীদের বিরুদ্ধে।
আরও পড়ুনঃ জন্মদিনে নেতাজি সুভাষের মৃত্যুদিন নিয়ে ছেলেখেলা রাহুলের কংগ্রেসের
৩ বছর আগেও কলেজে গণিতের অধ্যাপক অমরজিৎ কুণ্ডুকে আগ্নেযাস্ত্র দেখিয়ে মারধর করা হয় বলে অভিযোগ ওঠে। সেই সময় আক্রান্ত হন অধ্যক্ষ চন্দ্রিমা ভট্টাচার্যও। সিসিটিভি-র ফুটেজে রিভলভারধারী যুবককে অজয় দে-র ঘনিষ্ঠ মনোজ সরকার বলে চিহ্নিত করা গিয়েছিল। তার সঙ্গে গ্রেফতার করা হয় সুদীপ বিশ্বাস নামে আরেক তৃণমূল নেতাকে।
তারপর অনেকটাই স্বাভাবিক হয় শান্তিপুর কলেজ ৷ আতঙ্ক কাটিয়ে কলেজে ফেরেন অধ্যাপকরা ৷ কলেজে আসতে শুরু করেন পড়ুয়ারাও। ৩ বছর পর সেই একই ঘটনার পুনরাবৃত্তি। এগিয়ে বাংলার শিক্ষাজগতের মুখে চুনকালি মাখিয়ে ফের কলেজে গুন্ডাগিরির অভিযোগ তৃণমূলের বিরুদ্ধে।
আপনার মোবাইলে বা কম্পিউটারে The News বাংলা পড়তে লাইক করুন আমাদের ফেসবুক পেজ।