The News বাংলা, কলকাতা: শুধু মন্ত্রীত্ব নয়, কলকাতার মেয়র পদ থেকেও সরিয়ে দেওয়া হল শোভন চাটার্জীকে। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশে মঙ্গলবার বিকালে পদত্যাগ করতে হয় শোভন চ্যাটার্জীকে। আর তারপরই, কলকাতার মেয়র পদ থেকেও তাঁকে পদত্যাগের নির্দেশ দিয়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। একবারেই কি শেষ হল কয়েক দশকের দিদি-ভাইয়ের সম্পর্ক? উঠছে প্রশ্ন।
এবার ফাইনাল। আগেও একবার আবেগতাড়িত হয়ে পদত্যাগপত্র দিয়েছিলেন। কিন্তু দলনেত্রীর নির্দেশে কিছুক্ষনের মধ্যে তা ফিরিয়েও নিয়েছিলেন। কিন্তু এবার আর শেষ রক্ষা হল না। ব্যক্তিগত জীবনে তোলপাড় চলছে। স্বাভাবিক কারণেই মানসিকভাবে প্রবল চাপের মুখে আছেন। এরকমই কারণ দেখিয়ে মন্ত্রিসভা থেকে পদত্যাগ করলেন দমকলমন্ত্রী ও আবাসন মন্ত্রী শোভন চ্যাটার্জী। যদিও সবটাই হয়েছে ‘দিদির’ নির্দেশেই।
আরও পড়ুনঃ মমতার নির্দেশে মন্ত্রীত্ব থেকে ইস্তফা শোভন চ্যাটার্জীর
জানা গিয়েছে, মন্ত্রীত্ব থেকে পদত্যাগপত্র জমা দেওয়ার পরই বিকেলে দলনেত্রী তাঁকে ফোন করেন এবং জানিয়ে দেন শুধু মন্ত্রিসভা নয়, পদত্যাগ করতে হবে মেয়র পদ থেকেও। আর এর মাধ্যমে বার্তা দিলেন তৃণমূলের সব নেতাকেই। দলের চেয়ে বড় কিছুই নয়।
নিজের পরিবার, বিশেষত স্ত্রীর সঙ্গে সমস্যাই ক্রমশ রাজনীতি থেকে দূরে সরিয়ে দিচ্ছিল রাজনীতিক শোভন চ্যাটার্জীকে। কোনঠাসা করে দিচ্ছিল দলেও। এই নিয়ে দলনেত্রীর মৃদু বকুনিও খেতে হয়েছে তাঁকে বারবার।
আরও পড়ুনঃ যেখানে সেখানে থুতু-পিক ফেলা বন্ধ করতে কড়া মমতা
কিছুদিন আগে এরকমই এক পরিস্থিতিতে, কিছুটা অভিমানেই বাংলায় পদত্যাগপত্র লিখে জমা দিয়েছিলেন দমকল ও আবাসন মন্ত্রী। কিন্তু কিছুক্ষনের মধ্যে ‘দিদি’-র নির্দেশে তা ফিরিয়েও নেন।
দীর্ঘদিন ধরেই ব্যক্তিগত সম্পর্কের টানাপোড়েন নিয়ে সংবাদের শিরোনামে রয়েছেন কলকাতার মেয়র শোভন চ্যাটার্জী। বান্ধবী বৈশাখী বন্দ্যোপাধ্যায়কে নিয়ে স্ত্রী রত্না চট্টোপাধ্যায়ের সঙ্গে চরম বিরোধও চলছে তাঁর।
আরও পড়ুনঃ ভারতবাসীকে নেতাজীর মৃত্যুদিন জানাল বাংলার পুরসভা
এই কারণে একাধিকবার, দলনেত্রীর ক্ষোভের মুখে পড়তে হয়েছে তাঁকে। কয়েক মাস আগে কালীঘাটে মুখ্যমন্ত্রীর বাড়িতে গিয়ে পদত্যাগের ইচ্ছা প্রকাশ করেন শোভন। কিন্তু তখন তাঁকে বোঝান মুখ্যমন্ত্রী মমতা। তবে এরপরেও পরিস্থিতিতে কোনও বদল ঘটেনি। যার ফলে, মঙ্গলবার তাঁকে চরম হুঁশিয়ারি দেন মুখ্যমন্ত্রী এবং তারপরেই মন্ত্রিত্ব থেকে ইস্তফা দেন শোভন চ্যাটার্জী।
আজকের ঘটনাতেও সেরকমই অভিমান জড়িয়ে আছে বলে অনেকের ধারণা ছিল প্রথমে। কারণ বিধানসভার অধিবেশন চলার মাঝে এদিন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে কিছুটা বাক বিতণ্ডায় জড়িয়ে পড়েন তিনি। খান বকুনিও। তবে এবার মমতা যে তাঁকে আর ফিরিয়ে নেবেন না, একেবারেই ছেঁটে ফেলবেন তা বুঝতে পারেন নি কেউই।
আরও পড়ুনঃ বাংলায় শুরু উনিশতম আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসব
মঙ্গলবার, নবান্নের একটি অনুষ্ঠানেও শোভনকে তিরস্কার করেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আর তারপরই শোভন চ্যাটার্জী পদত্যাগের সিদ্ধান্ত নিয়ে নেন। তবে এবার আর বাংলায় নয়, ইংরাজি লেখা পদত্যাগপত্রই জমা দেন তিনি।
আর তারপরেই মেয়র পদ থেকেও তাঁকে সরিয়ে দেবার সিদ্ধান্ত নেন মমতা। এই মুহূর্তে দলের কোন পদে থাকলেন না দিদির প্রিয় ‘কানন’। দলেও থাকবেন কি? উঠেছে প্রশ্ন। তবে, কয়েক দশকের দিদি-ভাই সম্পর্ক এখানেই শেষ হল বলে মনে করছে তৃণমূল মহল।