সোমবার দিনভর ছুটে বেড়ালেন লকেট। সারাদিন খবরের শিরোনামে; হুগলীর বিজেপি প্রার্থী লকেট চট্টোপাধ্যায়। কিন্তু দিনের শেষে হাসছে তৃণমূল নেতারা, কিন্তু কেন? দাপট দেখালেন লকেট! অথচ মুখে হাসি তৃণমূলের! ব্যাপারটা কি?
আসলে তৃণমূলের পাতা ফাঁদেই পা দিলেন লকেট। তৃণমূলের রণকৌশল বুঝতেই পারলেন না। আর সেই রণকৌশলের অঙ্গ হিসাবে; তৃণমূল হুগলি লোকসভা কেন্দ্রে তাদের সব থেকে শক্ত ঘাঁটি ধনেখালী বিধানসভাতেই; সারাদিন লকেটকে ব্যতিব্যস্ত রেখে দিল। একদিকে বাকি ৬টি বিধানসভা কেন্দ্রে তৃণমূল নিজেদের মত করে ভোট করে গেল। অন্যদিকে নিজেদের শক্ত ঘাঁটিতে; লকেটকে দৌড়োদৌড়ি করিয়েও অনেকটা নিশ্চিন্তে থেকে গেল তারা।
আরও পড়ুনঃ মুখ্যমন্ত্রীর নাম মমতা নয়, হওয়া উচিৎ নিষ্ঠুর ব্যানার্জী সরাসরি বললেন বাবুল সুপ্রিয়
লকেট চট্টোপাধ্যায়। হুগলী লোকসভা কেন্দ্রের বিজেপি প্রার্থী। সোমবার সারাদিন তিনি দৌড়ে বেড়ালেন তাঁর কেন্দ্রের বুথ থেকে বুথে। ভোটের দিন কি করেননি তিনি! ভুয়ো ভোটার ধরার দাবি করেছেন; চড়িয়ে সিধে করে দেওয়ার কথা বলেছেন। বুথে বিজেপির পোলিং এজেন্ট না থাকার জন্য; প্রিসাইডিং অফিসারকে ধমকেছেন। যেন বিজেপির পোলিং এজেন্ট বসানোর দায়িত্ব প্রিসাইডিং অফিসারের!
কেন্দ্রীয় বাহিনীকে চমকেছেন; নির্দল প্রার্থীর পোলিং এজেন্টকে বুথ থেকে বার করে দিয়েছেন। যেন নির্দল প্রার্থীর পোলিং এজেন্ট বসানোর অধিকারই নেই। বুথে ইভিএম ভাঙাকে সমর্থন করেছেন; থানায় ধর্ণা দিয়েছেন। আবার জেলাশাসকের দপ্তরের সামনেও ধর্ণায় বসেছেন। সব মিলিয়ে ধুন্ধুমার কান্ড।
আরও পড়ুনঃ মোদীর সভা থেকে সোজা অনুমতিহীন বেশ্যাপল্লীতে ঢুকে গ্রেফতার বিজেপি কর্মীরা
কিন্তু লকেট এই এত সব কান্ড ঘটিয়েছেন; তাঁর লোকসভা কেন্দ্রের মধ্যে থাকা ৭টি বিধানসভা কেন্দ্রের মধ্যে মাত্র একটিতে। ধনেখালী। পুরো দিনটার সিংহভাগ সময়; কাটিয়ে ফেললেন তৃণমূলের এই শক্ত ঘাঁটিতে। কতটা দাঁত ফোটাতে পারলেন; তা বোঝা যাবে আগামী ২৩শে মে।
তবে দিনের শেষে; পুরো ধনেখালী বিধানসভা এলাকায় পুনর্নিবাচনের দাবি তুলে; জেলাশাসক দপ্তরের সামনে ধর্ণায় বসা দেখে; মনে হচ্ছে খুব বেশি আত্মবিশ্বাসী নন। আসলে লকেট বোধহয় একটা ঘুর্ণির মধ্যে পড়ে গিয়েছিলেন; যার থেকে সারাদিন আর বেরোতে পারেননি। আর এই ঘুর্ণির নাম তৃণমূলের রণকৌশল।
আরও পড়ুনঃ বাংলায় তৃণমূল এবার ১০টা আসনও পাবে না, ঝাড়গ্রামে বললেন নরেন্দ্র মোদী
আর এই রণকৌশল তৈরি করার ক্ষেত্রে ধনেখালীর বিধায়ক তথা রাজ্যের মন্ত্রী; অসীমা পাত্রর রাজনৈতিক প্রজ্ঞা আর একবার বোঝা গেল। হুগলী লোকসভা কেন্দ্রের ফলাফলে; ধনেখালী বিধানসভার লিড সব সময়েই বড় ভূমিকা নিয়েছে। এবারে সেই লিড ধরে রাখার বিষয়ে আত্মবিশ্বাসী; অসীমা পাত্র নিজের বিধানসভা কেন্দ্রে লকেটকে আটকে দিলেন।
আর এর জেরে; হুগলী লোকসভা কেন্দ্রের বাকি ৬ টি বিধানসভা এলাকায়; বিজেপির আক্রমণাত্মক রণকৌশলকে অনেকটাই ভোঁতা করে দিতে সফল হয়েছেন। সোমবার হুগলীর সব থেকে আলোচ্য ও বিতর্কিত রাজনৈতিক ব্যক্তি ছিলেন লকেট। ২৩শে মে তিনি কতটা আলোচনার বৃত্তে থাকতে পারেন সেটাই এখন দেখার।