নেতাদের গুন্ডা পোষা না গুন্ডাদের নেতা হওয়া, প্রকাশ্যে বন্দুকবাজির কারন কি

560
নেতাদের গুন্ডা পোষা না গুন্ডাদের নেতা হওয়া, প্রকাশ্যে বন্দুকবাজির কারন কি/The News বাংলা
নেতাদের গুন্ডা পোষা না গুন্ডাদের নেতা হওয়া, প্রকাশ্যে বন্দুকবাজির কারন কি/The News বাংলা

The News বাংলা, কলকাতা: জয়নগর, আদ্রা, আসানসোল, দুর্গাপুর, একের পর এক ঘটনা। বাংলায় দিনে দুপুরে রাস্তায় প্রকাশ্যে ঘুরছে বন্দুকবাজরা। কোথায় হলিউড স্টাইলে হামলা। কোথাও বা হাতে বন্দুক নিয়ে হুমকি। মুড়ি মুড়কির মত ‘বডি পরছে’। নেতাদের গুন্ডা পোষার জন্যই কি বাংলায় বন্দুক-গুলির রাজত্ব বাড়ছে? না গুন্ডাদের নেতা হওয়াই এর কারণ?

পঞ্চায়েত ভোটে বাংলায় গুন্ডারাজ দেখেছে আমজনতা। শাসক দল ও বিরোধী দলগুলির সংঘর্ষ দেখেছে বাংলা। কিন্তু এখন তো ভোট নেই। লোকসভা ভোট অনেক দূরে। রাজ্যে বিরোধী দলগুলোর সংগঠন এখনও শাসক দলের সমকক্ষ হয়ে উঠতে পারে নি। তাই বিরোধী হাত থেকে এলাকা দখলের গল্পও আসছে না। তাহলে প্রতিদিন এই রক্তপাত, বন্দুকের দাপাদাপি কেন? প্রকাশ্যে বন্দুকবাজি কেন?

নেতাদের গুন্ডা পোষা না গুন্ডাদের নেতা হওয়া, প্রকাশ্যে বন্দুকবাজির কারন কি/The News বাংলা
নেতাদের গুন্ডা পোষা না গুন্ডাদের নেতা হওয়া, প্রকাশ্যে বন্দুকবাজির কারন কি/The News বাংলা

জয়নগর এর ঘটনায় পুলিশি তদন্তে দুই গোষ্ঠীর বিবাদ সামনে এসেছে। উঠে এসেছে তৃণমূল জয়হিন্দ বাহিনীর সভাপতি সারফুদ্দিন খানের নাম। যিনি হামলায় মারা গেছেন। কোন সমর্থক মরলেই মৃতদেহ নিয়ে মিছিল করা তৃণমূল এক্ষেত্রে একেবারে চুপ। লজ্জায় কি মুখ ঢাকল দল?

কে এই সারফুদ্দিন? জয়নগরের তৃণমূল বিধায়ক বিশ্বনাথ দাসের সঙ্গী সারফুদ্দিন খানের নামে থানায় খুনের মামলা সহ একাধিক মামলা। কেন এমন গুন্ডা বাহিনী নিয়ে ঘুরতে হয় বিধায়ককে? প্রশ্ন উঠছে। সারফুদ্দিন খানের মত ব্যক্তি জয় হিন্দ বাহিনীর সভাপতি কি করে হন!

আরও পড়ুনঃ বিজেপির ‘রথ যাত্রা’র অনুমতি দিল না মমতা প্রশাসন

অন্যদিকে, তৃণমূল বিধায়ক বিশ্বনাথ দাসের সঙ্গী সারফুদ্দিন খানকে খুন করার অভিযোগে নাম উঠে এসেছে আব্দুল কাহার মোল্লা ওরফে বাবুয়ার নাম। অভিযোগ, সে আবার আরেক তৃণমূল নেতা গৌর সরকারের সঙ্গী। তৃণমূল বিধায়ক বিশ্বনাথ দাস আর তৃণমূল নেতা গৌর সরকারের লড়াইকেই কি প্রকাশ্যে আনল এই বোমা গুলি চালানোর ঘটনা। প্রশ্ন উঠছে।

আরও পড়ুনঃ ‘ভারতকে হিন্দু রাষ্ট্র ঘোষণা করুক মোদী ও মমতা’ ঘোষণা বিচারপতির

জয়নগর এর ঘটনার মধ্যেই পুরুলিয়ার আদ্রাতে দিনে দুপুরে প্রকাশ্য রাস্তায় খুন হয়ে গেলেন আর এক যুব নেতা। রেল গেটের কাছে প্রকাশ্যে বন্দুকবাজরা এসে ফিল্মি কায়দায় গুলি চালিয়ে খুন করল জোড়া ফুলের যুবনেতা হামিদ আনসারিকে। তৃণমূলের তরফ থেকে বিজেপি র দিকে আঙ্গুল তোলা হয়েছে। বিজেপির তরফ থেকে তৃণমূলের গোষ্ঠী দ্বন্দ্বের দিকে।

আরও পড়ুনঃ বাংলায় ২৫ টাকা কেজি পেঁয়াজ, নাসিকে দাম না পেয়ে আত্মহত্যা

তবে স্থানীয় বাসিন্দারা বলছেন, এর সঙ্গে রাজনীতির কোন সম্পর্কই নেই। না তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব না বিরোধী হাত, কোনটাই খুনের কারন নয়। তৃণমূল যুবনেতা হামিদ আনসারি আদ্রা রেলের ‘ঠিকাদার সিন্ডিকেট’ চালাতেন বলেই অভিযোগ। তার বিরুদ্ধেও আগে খুনের মামলা ছিল যদিও পরে তা তুলে নেওয়া হয়। আর এই রেলের সিন্ডিকেট বিবাদই তার খুনের কারণ বলে মনে করছেন স্থানীয় বাসিন্দারা। সিন্ডিকেট নেতা এখন শাসক দলের নেতা!

আরও পড়ুনঃ ‘বাংলায় রথ যাত্রা হবেই’ মমতাকে হুঁশিয়ারি অমিত শাহের

দুর্গাপুরে আবার নিজের বাড়িতে সাতসকালে গুলি খাওয়া থেকে বাঁচলেন তৃণমূলের মেয়র পারিষদ স্বাস্থ্য রাখি তিওয়ারি। তবে এখানে বন্দুকবাজ তাঁকে মারতে আসে নি। এসেছিল তাঁর স্বামী রাকুকে মারতে। বিবাদ কেবল ব্যবসা নিয়ে। অভিযোগ মেয়র পরিষদের স্ত্রী হওয়ায় অঞ্চলে রাজত্ব করতেন রাকু। ক্ষমতার জোরে সমস্ত কেবল পয়েন্ট দখল করে নিয়েছেন নেত্রীর স্বামী।

জানা গেছে, মেয়র পরিষদের স্বামীকে খুন করতে আসা শশাঙ্ক প্রধানও সেই তৃণমূলেরই সমর্থক। কিন্তু আসল কথা হল, দুর্গাপুরে সকালে প্রকাশ্যে বন্দুক নিয়ে রাস্তায় ঘুরছে দুষ্কৃতী! বাংলায় হচ্ছে টা কি?! প্রশাসন কতটা অদক্ষ হলে এইভাবে প্রকাশ্যে অস্ত্র নিয়ে ঘুরতে পারে দুষ্কৃতীরা? প্রশ্ন তুলেছেন বিরোধীরা। তবে মানুষের অভিযোগ, রাজনৈতিক দলগুলির বিশেষ করে শাসক দলের ছত্রছায়ায় থাকার জন্যই প্রকাশ্যে বন্দুক নিয়েও ঘুরতে ভয় পায় না দুষ্কৃতীরা।

আরও পড়ুনঃ জনগণকে ‘গাধা’ বানিয়ে ‘শিক্ষাগুরু নেহেরু’র যোগ্য ছাত্র সব রাজনীতিবিদ

রাজ্য পঞ্চায়েত ভোটে বোমা গুলির লড়াই দেখেছিল বাংলা। আর এখন প্রকাশ্য রাস্তায় বন্দুক হাতে দাপিয়ে বেড়াচ্ছে বন্দুকবাজরা। নেতাদের গুন্ডা নিয়ে ঘোরা বন্ধ না হলে এই ঘটনা আরও ঘটবে। আর ‘ব্যক্তিগত প্রোফাইল’ না দেখেই দলের উঁচু পোস্টে ক্রিমিনালদের বসালে এমনই দুষ্কৃতীদের স্বর্গ রাজ্য হয়ে উঠবে বাংলা। তবে ক্ষমতায় আসার পর এলাকায় দাদাগিরি ও ক্ষমতার বহিঃপ্রকাশ এখন খুবই স্বাভাবিক।

শাসক দলের বন্দুকবাজদের দাপাদাপি প্রকাশ্যে এলেও একই দোষে দুষ্ট সব রাজনৈতিক দলই। নেতাদের ছত্রছায়ায় বেড়ে উঠছে গুন্ডা দল। কোথাও গুণ্ডারাই রাজনীতির দলের মাথা! দৃষ্টিকটু ভাবে বাংলায় রাজনীতির অবমুল্যায়ন হয়েছে। রাজনীতির নামে খুব খারাপ দিন আসছে বাংলায়। আশঙ্কার প্রমাদ গুনছেন বাংলার আমজনতা।

পড়ুন হাড় হিম করা অদ্ভুত সত্য গল্প

পড়ুন প্রথম পর্বঃ পৃথিবী এগোলেও তান্ত্রিকের কালো জাদু টোনায় ডুবে আফ্রিকা

পড়ুন দ্বিতীয় পর্বঃ পৃথিবী এগোলেও তান্ত্রিকের কালো জাদু টোনায় ডুবে আফ্রিকা

পড়ুন তৃতীয় ও শেষ পর্বঃ পৃথিবী এগোলেও তান্ত্রিকের কালো জাদু টোনায় ডুবে আফ্রিকা

Comments

comments

আপনাদের মতামত জানাতে কমেন্ট করুন