নিজের দলের নেতাদেরই দুর্নীতিবাজ বললেন; দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সরকারি সম্পত্তি নিজের নামে করেছেন নেতা কাউন্সিলররা; খেয়েছেন কাটমানি; নিজের দলের নেতাদের বিরুদ্ধেই বিস্ফোরক অভিযোগ করেন তৃণমূল নেত্রী। এদের কাউকেই ছাড়া হবে না; বলে পরিষ্কার জানিয়ে দেন তিনি।
ভোটে হারের কারণ খুঁজতে ও রাজ্য জুড়ে দলের নেতাদের সচেতন করতে; গত সোমবার নজরুল মঞ্চে সভা ডাকেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেখানে নিজের দলের নেতাদের দুর্নীতির বিরুদ্ধেই; মুখ খোলেন তৃণমূল নেত্রী। নেতাদের কাটমানি খাওয়ার জন্যই দলের এই হাল; পরিষ্কার জানিয়ে দেন মমতা।
পুর ও নগর উন্নয়ন মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিমকে সমস্ত অভিযোগের তদন্ত করতে নির্দেশ দিয়েছেন মমতা। দুর্নীতিবাজ কাউকেই ছাড়া হবে না; পরিষ্কার জানিয়ে দেন তিনি। মমতার এই ঘোষণার পরে; মঙ্গলবার থেকেই কাটমানি ফেরত নিতে; বিভিন্ন জেলায় তৃণমূল নেতার বাড়িতে হাজির সাধারণ মানুষ। অভিযোগ অস্বীকার করেও; মানুষের সঙ্গত ক্ষোভ চাপা দিতে পারেননি তৃণমূল নেতারা।
রাজ্যের মানুষের অভিযোগের ভিত্তিতে দেখা যাচ্ছে; মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিভিন্ন প্রকল্পকেই টাকা খাওয়ার রাস্তা হিসাবে বেছে নিয়েছেন তৃণমূল নেতারা। আবাস যোজনা থেকে শুরু করে; কন্যাশ্রী ও রুপশ্রী প্রকল্পেও যে যেমন পেরেছেন; কাটমানি খেয়েছেন তৃণমূল নেতারা।
বিভিন্ন জেলার অভিযোগের ভিত্তিতে দেখা যাচ্ছে; কমবেশি মমতার বিভিন্ন প্রকল্প থেকে; টাকা কামিয়েছেন তাঁর দলেরই নেতারা। যে প্রকল্পে টাকার পরিমাণ যত বেশি; সেই প্রকল্পে তোলাবাজি তত বেশি। জঙ্গলমহলের চার জেলা পুরুলিয়া, বাঁকুড়া, ঝাড়গ্রাম ও মেদিনীপুরে; মানুষের কাছে তোলাবাজি সবচেয়ে বেশি করেছেন তৃণমূল নেতারা।
জঙ্গলমহলের চার জেলায় মুখ্যমন্ত্রীর বিভিন্ন প্রকল্পের পাশাপাশি; মানুষের ১০০ দিনের কাজের টাকাও বেমালুম মেরে দিয়েছেন তৃণমূল নেতারা; এমনটাই অভিযোগ সাধারণ মানুষের। সেই কারণেই মানুষের ভোট গেছে তৃণমূলের বিরুদ্ধে। নেতাদের বিরুদ্ধে ক্ষুব্ধ হয়ে; তৃণমূলের বিরুদ্ধে ভোট দিয়েছে আমজনতা।
বিজেপি সংগঠন দিয়ে মানুষের ভোট যত না পেয়েছে; তৃণমূলের বিরুদ্ধে মানুষ বিজেপিকে বেছে নেওয়ায়; গেরুয়া শিবিরের জয় জয়কার হয়েছে। ঠিক যেমন ২০১১ বিধানসভা ভোটে; তৃণমূলের কৃতিত্বের চেয়েও; মানুষ বামেদের বিকল্প হিসাবে মমতার তৃণমূলকে ভোট দিয়েছিল।
জঙ্গলমহলের মত উত্তরবঙ্গ ও দক্ষিণবঙ্গের অনেক জেলাতেই; মুখ্যমন্ত্রী মমতারই বিভিন্ন প্রকল্পে তাঁর দলের নেতাদেরই কাটমানি খাওয়াই; তৃণমূলের ভোটে খারাপ ফলের অন্যতম কারণ।