নিজস্ব সংবাদদাতা : মঙ্গলবার বিকেল সাড়ে চারটে নাগাদ রেড রোডে শুরু হবে এই বছরের দুর্গা পুজো কার্নিভাল। এবার ৭২টি পুজোর দুর্গাপ্রতিমাকে নিয়ে শোভাযাত্রা বেরোবে রেড রোডে। মেগা শো ঘিরে প্রশাসন ও পুজো উদ্যোক্তাদের মধ্যে জোরকদমে চলছে শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতি। দেশ ও বিশ্বের দরবারে বাংলার সেরা উৎসবকে তুলে ধরার জন্যই এই প্রয়াস।
তৃতীয় বছরে পা দিল মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের শুরু করা এই কার্নিভাল। ইতিমধ্যেই কার্নিভালের তৃতীয় বছরের অনুষ্ঠান উদযাপন ঘিরে তুঙ্গে নিরাপত্তা ব্যবস্থা। এ বছর বহু বিদেশি পর্যটক আসবেন। বিভিন্ন দূতাবাস থেকেও কার্নিভাল দেখতে চেয়ে অনুরোধ এসেছিল। ‘পাস’ও চেয়েছিলেন তাঁরা। স্বভাবতই পুজো শেষে পুজো দেখা ঘিরে আগ্রহ বাড়ছে মানুষের।
রেড রোডের দু’পাশেই সুন্দর করে সাজিয়ে তোলা হয়েছে মঞ্চ। বসানো হয়েছে ক্লোজড সার্কিট টিভি। কলকাতা পুলিসের ডগ স্কোয়াড এবং অ্যান্টি স্যাবট্যাজ বাহিনীর কর্মীরা কার্নিভাল রাস্তার যে অংশে হবে, সেখানে ঘনঘন নিরাপত্তা দেখছেন। বস্তুত, গোটা রেড রোডই চলে এসেছে সুরক্ষাবলয়ে।
জানা গেছে, প্রায় ২০০০ এর বেশি পুলিসকর্মী কার্নিভালের নিরাপত্তার দায়িত্বে রয়েছেন। পর্যটন দপ্তর থেকে এ বছরই প্রথম ‘এগজিকিউটিভ ক্লাস’–এর জন্য ঠাকুর দেখা, অভিজাত রেস্তোরাঁয় খাওয়া, বনেদি বাড়ির পুজো উপভোগ করার ব্যবস্থা হয়েছিল। এই প্যাকেজের সঙ্গেই রয়েছে কার্নিভাল দেখার বিশেষ ছাড়পত্র।
রেড রোডের দু’পাশে এবার ২০ হাজার দর্শক দেখবেন কার্নিভাল। এছাড়াও বিদেশি পর্যটকদের জন্য ১৫০০ আসন সংরক্ষণ রাখা হয়েছে। ৭৫টি পুজো কমিটি অংশ নিচ্ছে। রাজবাড়ির অলিন্দের আদলে তৈরি হয়েছে মূল মঞ্চ। এখানে মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি–সহ মন্ত্রিসভার সদস্যরা বসবেন। এই মঞ্চে প্রায় ৯০ জনের বসার ব্যবস্থা রয়েছে।
ভিআইপিদের জন্য আলাদা মঞ্চের ব্যবস্থা হয়েছে। আলোয় সাজিয়ে তোলা হয়েছে রেড রোড। থাকবে জায়ান্ট স্ক্রিন। টিভিতে সম্প্রচার হবে সরাসরি।
কার্নিভাল উপলক্ষে রেড রোডে যান নিয়ন্ত্রণ শুরু হয়েছে মঙ্গলবার সকাল থেকেই। কার্নিভাল শেষ হয়ে গেলে মঙ্গলবার রাত থেকেই রেড রোড খুলে দেওয়া হবে, বলে পুলিশ সূত্রে জানা গেছে।
কার্নিভাল ঘিরে যাতে কোনও অবাঞ্ছিত ঘটনা না ঘটে, সে জন্য স্পেশাল টাস্ক ফোর্স এবং গোয়েন্দা পুলিসের একটি বিশেষ দল রেড রোডের দু’পাশে নজরদারি চালাচ্ছে। প্রতিটি পুজো কমিটি দেড় মিনিট করে সময় পাবেন। আগে থেকেই প্রতিটি পুজো কমিটিকে বলা হয়েছে, তারা নির্দিষ্ট সময়ের আগে প্রতিমা এবং যাঁরা যাঁরা অনুষ্ঠানে অংশ নিচ্ছেন, তাঁদের তৈরি থাকতে।
শোভাযাত্রা শুরু হলেই প্রতিটি প্রতিমা নিয়ে সংশ্লিষ্ট পুজো কমিটির সদস্যরা গঙ্গার দিকে চলে যাবেন, যাতে কোনও ধরনের বিশৃঙ্খলা না হয়। ভারতের সেরা উৎসব ও বিশ্বের সেরা উৎসব হিসাবে দুর্গা পুজোকে তুলে ধরতেই এই কার্নিভালের আয়োজনকে দেখা হচ্ছে।