নিউটাউনে আইনজীবী হত্যায় সন্দেহের তীর স্ত্রীর দিকেই

648
আইনজীবী রজত দে হত্যারহস্য/The News বাংলা
আইনজীবী রজত দে হত্যারহস্য/The News বাংলা

The News বাংলা, কলকাতা: নিউটাউনে আইনজীবী খুনের রহস্য ক্রমশই ঘনীভূত হচ্ছে। ময়নাতদন্তের রিপোর্ট অনুযায়ী, কলকাতা হাইকোর্টের আইনজীবী রজত দে-র মৃত্যুর হয়েছে শ্বাসরোধ হওয়ার কারনেই। এই হত্যায় সন্দেহের তীর এখন রজতের স্ত্রীর দিকেই।

গত শনিবার নিউটাউনের বিডি ব্লকে নিজের ফ্যাটেই, গভীর রাতে উদ্ধার হয় বছর ৩৪-এর রজত দে-র মৃতদেহ। রহস্যজনক ভাবে মৃত্যু হয় কলকাতা হাইকোর্টের আইনজীবী রজত দের। ময়নাতদন্তের রিপোর্ট অনুযায়ী, কলকাতা হাইকোর্টের আইনজীবী রজত দে-র মৃত্যুর হয়েছে গলায় কিছু পেঁচিয়ে শ্বাসরোধ হওয়ার কারনেই।

আরও পড়ুন: মমতার নির্দেশকে বুড়ো আঙুল, সিন্ডিকেট জুলুমে রাজ্য ছাড়ছেন শিল্পপতি

রজতের স্ত্রী অনিন্দিতার প্রাথমিক বয়ান অনুযায়ী, ওইদিন গভীর রাতে বারান্দায় আলো জ্বলতে দেখে সন্দেহ হয় তাঁর। ঘর থেকে বেরিয়ে তিনি দেখেন চেয়ারে বসে রয়েছেন রজত। শরীর খারাপের আশঙ্কা করে তিনি স্বামীকে ডাকাডাকির পর গায়ে হাত দিতেই চেয়ার থেকে ঢলে পড়েন রজত। এই বয়ান মিথ্যে দাবি করে নিউ টাউন থানায় খুনের অভিযোগ দায়ের করেন রজতের বাবা।

আইনজীবী রজত দে হত্যারহস্য/The News বাংলা
আইনজীবী রজত দে হত্যারহস্য/The News বাংলা

ময়না তদন্তের রিপোর্ট আসার পরই নড়েচড়ে বসেছে বিধাননগর পুলিশ কমিশনারেট। গলায় সরু তার জাতীয় কোনও জিনিস পেঁচিয়েই রজতের মৃত্যু হয়েছে বলে রিপোর্টে উঠে এসেছে। কিন্তু ঘটনাস্থলে কোন তার জাতীয় কিছুই পাওয়া যায় নি।

পুলিশের অনুমান, এই ঘটনার নেপথ্যে রজতের পরিচিতরা জড়িত আছে। রীতিমতো ছক কষে সংঘটিত হয়েছে এই হত্যাকাণ্ড। আর এই হত্যার পিছনে রজতের স্ত্রীর ভূমিকাই আছে বলে সন্দেহ পুলিশের।

আরও পড়ুন: ‘বেআইনি মদের টাকা যায় মমতার ভাইপো অভিষেকের বাড়িতে’ কৈলাশ বিজয়বর্গীয়

রহস্যজনক ভাবে মৃত আইনজীবী রজতকুমার দে’র ফ্ল্যাটে তদন্তে যায় বিধাননগর কমিশনারেটের ফরেন্সিক দল। ফ্ল্যাটের সব কিছু খুঁটিয়ে দেখে বিভিন্ন নমুনা সংগ্রহ করে তারা। দেহে বিষক্রিয়া ছিল কিনা তা জানতে মৃতের ভিসেরা পরীক্ষা করা হবে।

কয়েকটা বিষয় সন্দেহ বাড়িয়েছে পুলিশের। ঘটনার কয়েক দিন আগে বাড়ির পোষা কুকুর এবং দেড় বছরের সন্তানকে বাপের বাড়ি পাঠিয়ে দেন অনিন্দিতা। কেন? এ প্রশ্নের উত্তর খুঁজছে পুলিশ।

আরও পড়ুন: রথযাত্রা উপলক্ষে বাংলায় মোদীর জনসভায় লোকসভার দামামা

ঘটনার রাতে এক সঙ্গে রেস্তরাঁয় খাওয়ার পর, কেন এক সঙ্গে বাড়ি ফেরেননি রজত আর অনিন্দিতা, ওই সময় রজতের সঙ্গে বাড়ি না ফিরে অনিন্দিতা কোথায় গিয়েছিলেন, তাও জানার চেষ্টা করছে পুলিশ।

অনিন্দিতা প্রথমে বলেন হার্ট আট্যাক। পরে বলেন আত্মহত্যা। বারবার বয়ান বদলের জন্যই স্ত্রী অনিন্দিতাকেই সন্দেহের তালিকায় উপরে রেখেছেন তদন্তকারীরা।

আইনজীবী রজত দে হত্যারহস্য/The News বাংলা
আইনজীবী রজত দে হত্যারহস্য/The News বাংলা

আইনজীবী রজত কুমার দে-র মৃত্যুর ঘটনায় স্ত্রী অনিন্দিতার ভূমিকাও সন্দেহের ঊর্ধ্বে নয় বলেই মনে করছেন তদন্তকারীরা। তদন্তকারীরা জানিয়েছেন, ঘটনার আগের দিন রাতে সন্তান ও পোষ্যকে বাপের বাড়ি পাঠিয়ে দিয়েছিলেন তিনি। ফোনে দীর্ঘক্ষণ এক চিকিৎসক বন্ধুর সঙ্গে কথাও বলতেন। সেই বন্ধুর খোঁজ করছে পুলিশ। খতিয়ে দেখা হচ্ছে মৃতের স্ত্রীর মোবাইল ফোনের কললিস্টও।

আরও পড়ুন: ‘সফল’ কৃষক মিছিলে শুরু ব্রিগেড ও লোকসভার প্রস্তুতি

অনেকগুলো দিক এখন খতিয়ে দেখছে পুলিশ। রজত যদি খুন হন, তবে খুনি কি একজন না একাধিক? খুনি কি বাইরে থেকে এসেছিল? স্ত্রী অনিন্দিতা কি এই খুনে জড়িত? না কি তাঁকে মিথ্যে ফাঁসিয়ে রজতকে খুন করার কোন গভীর ষড়যন্ত্র রয়েছে এখানে? করলে কে? কী তার মোটিভ? অন্তত একটা ব্যাপারে পুলিশ নিশ্চিত, যে বা যারাই খুন করুক না কেন, তারা রজতের পরিচিত। বা স্ত্রী আনিন্দিতার পরিচিত।

আরও পড়ুন: ধর্মান্তরিত না হলে খুনের হুমকি, মিশনারী স্কুলের প্রিন্সিপালের বিরুদ্ধে অভিযোগ

অনিন্দিতার সঙ্গে গত কয়েক মাস যাবত রজতের ঝগড়াঝাটির খবর কানে এসেছে পুলিশের। অনিন্দিতার ঘনিষ্ঠ এক চিকিত্সকের সম্পর্কেও খোঁজ নিচ্ছে পুলিশ। খোঁজ নেওয়া হচ্ছে আরও একজনের সম্পর্কে, যাঁর সঙ্গে অনিন্দিতার নিয়মিত ফোনালাপ নিয়ে স্বামী-স্ত্রীতে প্রায়ই গোলমাল হত বলে জানতে পেরেছে পুলিশ। সবমিলিয়ে রহস্য ক্রমশই ঘনীভূত হচ্ছে।

Comments

comments

আপনাদের মতামত জানাতে কমেন্ট করুন