বাম থেকে ঘাসফুলে বাবা; মেধা তালিকায় নাম না থাকলেও মেয়ের চাকরি। ঠিক কী ঘটেছিল; ঘটনাপ্রবাহ কী? ১৭ অগাস্ট, ২০১৮; তৃণমূলে যোগ দেন ফরওয়ার্ড ব্লকের প্রাক্তন নেতা পরেশ অধিকারী। আর তারপরেই ২০১৮-তে স্কুলে চাকরি পান পরেশ-কন্যা অঙ্কিতা অধিকারী। মেধা তালিকায় নাম না থেকেও; চাকরি হয় পরেশের মেয়ে অঙ্কিতা! এমনকি তাঁকে কোন ইন্টারভিউ দিতে হয়নি। স্কুল সার্ভিস কমিশনের মাধ্যমে, শিক্ষক নিয়োগে দুর্নীতি নিয়ে; ফের কলকাতা হাইকোর্টে মামলা হল। পরেশ অধিকারীকে নিজাম প্যালেসে ডেকে; জেরা করার জন্য নির্দেশ দেওয়া হয়েছে সিবিআই-কে। পাশাপাশি তাঁকে মন্ত্রীত্ব থেকে সরিয়ে দেওয়ার জন্যও; সুপারিশ করা হয়েছে রাজ্য সরকারের কাছে। যা এককথায় নজিরবিহীন।
বাম আমলে খাদ্যমন্ত্রী, তৃণমূল জমানায় রাজ্যের শিক্ষা-প্রতিমন্ত্রী পরেশ অধিকারীর কন্যার; শিক্ষক পদে নিয়োগে অস্বচ্ছতার অভিযোগে; কলকাতা হাইকোর্টে মামলা দায়ের হল। অভিযোগ দুর্নীতি করে মন্ত্রীর মেয়েকে, মেধা তালিকায় নাম না থাকা সত্ত্বেও; শিক্ষিকা পদে নিয়োগ করা হয়েছে।
একেবারে হাইজাম্প ফর্মুলায় যোগ্য প্রার্থীকে বঞ্চিত করে; মন্ত্রী পরেশ অধিকারীর মেয়ে অঙ্কিতা অধিকারীকে রাষ্ট্রবিজ্ঞানের শিক্ষিকা হিসেবে নিয়োগ করা হয়েছে। মঙ্গলবার রাজ্যের মন্ত্রীকেও মামলার পক্ষ করার নির্দেশ দিয়েছে; বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের ডিভিশন বেঞ্চ। মঙ্গলবার দুপুর ৩টের সময় মামলার শুনানি শুরু হয়; মন্ত্রীর ব্যক্তিগত সহায়ককে মামলার নোটিস ধরাতে বলেছে আদালত।
অভিযোগ, স্কুল সার্ভিস কমিশনের তালিকায় নাম ছিল না। কিন্তু তাঁর বাবা পরেশচন্দ্র অধিকারী ফরওয়ার্ড ব্লক থেকে তৃণমূলে যোগ দিতেই; তালিকায় এক নম্বরে পৌঁছে যান অঙ্কিতা অধিকারী। কোচবিহারে রাষ্ট্রবিজ্ঞানের শিক্ষক নিয়োগের জন্য; এসএসসি তালিকা প্রকাশ হয়েছিল। SC জাতিভুক্তদের জন্য মেধা তালিকার ওয়েট-লিস্টে; প্রথমে নাম ছিল ববিতা বর্মনের। অথচ পরে এসএসসি-র ওয়েবসাইটে রাষ্ট্রবিজ্ঞানের তফসিলি জাতির জন্য সংরক্ষিত আসনের ওয়েট-লিস্টে; দেখা যায় ববিতার নাম চলে গিয়েছে দ্বিতীয় স্থানে। প্রথম স্থানে রয়েছে পরেশ অধিকারীর মেয়ে অঙ্কিতা অধিকারীর নাম।
চাকরি প্রার্থীদের ইন্টারভিউয়ের সময়েও; অঙ্কিতাকে দেখা যায়নি বলেই অভিযোগ। হঠাৎ করে মেধাতালিকায় নাম ওঠা অঙ্কিতাকে মেখলিগঞ্জে তাঁর বাড়ির পাশের স্কুলে যোগ দিতে দেখে অবাক রাজ্যের হবু শিক্ষকরা। শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী পরেশ অধিকারীর মেয়ে ঘুরপথে, বেআইনীভাবে; স্কুলে শিক্ষকতার চাকরি পেয়েছিলেন বলেই অভিযোগ। পরেশ অধিকারীকে এবার সিবিআই জেরার নির্দেশ দিল হাইকোর্ট।