কিছু বলতে গেলেই আজকাল শুনতে হয় যে; “রাজনীতি করবেন না।” সে না হয় রাজনীতি না করলাম। কিন্তু দুটো প্রশ্ন তো রাখতেই পারি, তাই না?
নজরুল মঞ্চের দর্শক ধারণ ক্ষমতা ছিল ২৪০০ আসনের। গত বছরই রাজ্য সরকার সিদ্ধান্ত হয়েছিল যে; প্রায় নয় কোটি টাকা খরচ করা হবে নজরুল মঞ্চের জন্য। আসন সংখ্যা আরও ২০০ বাড়ানো হবে। হ্যাঁ, এই খরচের মধ্যে হলের এসির আধুনিকীকরণের খরচও ধরা ছিল। টাকাটা খরচ করার কথা; কলকাতা মেট্রোপলিটন ডেভেলপমেন্ট অথরিটির। নজরুল মঞ্চের পরিচালনভারও ওই KMDA-র।
খবরে প্রকাশ যে এহেন নজরুল মঞ্চে; গতকাল কেকে’র অনুষ্ঠান চলাকালীন দর্শক প্রবেশ করেছিল প্রায় সাতহাজার। এসি কাজ করেছিল? না করেনি, এই প্রশ্নটাই অনর্থক হয়ে যায় দুই পক্ষের এই চরম হঠকারিতার কারণে। গতকাল কলকাতা শহরের এই হাঁসফাঁস করা গরমে; আড়াই হাজার দর্শকের বদলে বদ্ধ জায়গায় সাত হাজার দর্শক ঢুকে পড়লে; এসি চললেও তা না চলারই সমান অনুভূত হবে।
আরও পড়ুন; ইগনোর করুন, রূপঙ্কর জেনে গেছে কেকে কে
এমনকি কেকে’র অনুষ্ঠান দেখার জন্য, নজরুল মঞ্চে ঢোকার সময় বিশাল ভিড় হঠানোর জন্য; আগুন নেভানোর জন্য রাখা ফায়ার এক্সটিংগুইশারের গ্যাস পর্যন্ত স্প্রে করা হয় ছাত্রছাত্রীদের ওপর। কি থাকে তাতে? কার্বন ডাই অক্সাইড। ভয়ঙ্কর ক্ষতিকর মানব শরীরের জন্য।
কে দায় নেবে এর? নজরুল মঞ্চের KMDA ম্যানেজমেন্ট? নাকি গুরুদাস মহাবিদ্যালয়ের ছাত্র ইউনিয়ন? তারাই তো নিয়ে এসেছিলেন কেকে’র মতো কিংবদন্তি শিল্পীকে। রাজনীতি খোঁজার প্রয়োজন নেই। কিন্তু উত্তরও কি দেবে কেউ?
আরও পড়ুন; মৃত্যুতেও রূপঙ্করকে কামানোর সুযোগ দিয়ে গেলেন কেকে
মনে হয় না। মনে হয় এখন শুরু হবে; পারস্পরিক দোষারোপের পালার। ইতিমধ্যেই রুপঙ্করের ভিডিও পোস্ট নিয়ে; তোলপাড় চলছে রাজ্যে। যাতে ঢাকা পরে গেছে; নজরুল মঞ্চের KMDA ম্যানেজমেন্টের অপদার্থতা।
কিন্তু দোষ যারই হোক, এমন চরম অপদার্থ ম্যানেজমেন্টের কারণে; কেকে’র মতো বিখ্যাত শিল্পীকে আমরা হারিয়েছি; এটাই চরম সত্য। এই ধরণের ম্যানেজমেন্ট, অপদার্থ ছাত্র ইউনিয়ন এবং অপদার্থ প্রশাসনের জন্য ভবিষ্যতে রাজ্যের বাইরের শিল্পীরা; এবার কলকাতায় আসার আগে দুবারের জায়গায় দশবার ভাববেন? তাই না? কেকে’র মৃত্যুর ঘটনার পরে; আদৌ বিখ্যাত শিল্পিরা বাংলায় আসবেন তো?