The News বাংলা: জাত ধর্মের পর এবার পেশা। গত কয়েকমাস ধরেই হনুমানের জাত ও ধর্ম নিয়ে জোর চর্চা চলছে রাজনীতিতে। আদিবাসী, দলিত, মুসলমান না জাঠ এই নিয়ে চলছে বিতর্ক। এবার হনুমানের পেশা নিয়েও শুরু হল চর্চা।
আরও পড়ুনঃ আদিবাসী, দলিত না মুসলমান, বিজেপির গবেষণায় রামভক্ত হনুমানের জাত
পবনপুত্র হনুমানের জাত-ধর্ম নিয়ে কাটাছেঁড়া করাটা এখনকার রাজনৈতিক নেতাদের ফ্যাশন হয়ে দাঁড়িয়েছে। কেউ বলছেন, পবনপুত্র ছিলেন আদিবাসী, কেউ বলছেন দলিত, কেউ বলছেন জাঠ, আবার কেউ তাঁর হনুমান নামের সঙ্গে রহমান, ইমরান, জিশানের মিল থাকায় তাঁকে মুসলিম আখ্যা দিতেও পিছপা হন নি।
আরও পড়ুনঃ ৫ রাজ্যে ভোট ধাক্কায় জোট শরিকদের সব দাবি মানছে মোদীর বিজেপি
এবার পালা উত্তরপ্রদেশের মন্ত্রী ও প্রাক্তন ক্রিকেটার চেতন চৌহানের। তিনি অবশ্য হনুমানের জাত বিচারের ঝুঁকি নিলেন না। তবে হনুমান ঠিক কী করতেন, তা নিয়ে এবার নতুন দাবি করে বসলেন চেতন। হনুমান বিচারের তালিকায় নয়া সংযোজন টেস্টে সুনীল গাভাস্কারের ওপেনিং পার্টনার চেতন চৌহানের নাম। তিনি অবশ্য হনুমানের জাতপাত বিচারের পথে না হেঁটে একেবারে নতুন একটা মন্তব্য করেছেন।
আরও পড়ুনঃ লোকঠকানির লোন মাপ, রাহুলকে লজ্জায় ফেলে আত্মঘাতী কৃষক
আমরোহতে একটি সভায় গিয়ে চেতন চৌহান প্রথমে বলেন, ভগবানের কোনও জাতপাত হয় না। এরপরেই তিনি বলেন, হনুমানজি আসলে একজন ক্রীড়াবিদ ছিলেন। উনি কুস্তি লড়তেন। এহেন বক্তব্যের পিছনে চেতন চৌহান যুক্তি দেন, ‘সমস্ত কুস্তিগীররা আখড়ায় খেলতে নামার আগে হনুমানদেবের পুজো করে যান’।
‘কুস্তিগীররা সকলেই ওনাকে খুব ভক্তি করে। উনি একজন ভগবান, আর ভগবানের কোনও জাতপাত হয় না’। তাই চৌহানের বক্তব্য, ‘পবনপুত্র হনুমানকে জাতপাত নিয়ে বিভাজন করা মানে তাঁকে অপমান করা’। প্রসঙ্গত, আমরোহ থেকে দুইবার লোকসভার সাংসদ নির্বাচিত হয়েছেন চেতন চৌহান। বর্তমানে তিনি উত্তরপ্রদেশের ক্রীড়া ও যুবকল্যাণ দফতরের মন্ত্রী।
আরও পড়ুনঃ উগ্র হিন্দুত্ববাদী নিশানায় নাসিরউদ্দিন, নিন্দা বাংলার বুদ্ধিজীবীদের
উল্লেখ্য, কিছুদিন আগেই ভগবান হনুমানের বার্থ সার্টিফিকেট চেয়ে জেলাশাসকের দ্বারস্থ হয়েছিলেন প্রগতিশীল সমাজবাদী দলের নেতা শিবপাল যাদব। সেই শুরু। তারপর থেকেই দল বেঁধে রাজনীতিবিদরা হনুমানের ধর্ম বিচার করার চেষ্টা করছেন।
বিজেপির হিন্দু মুখ উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ এর মতে হনুমান ছিলেন দলিত। বিজেপি বিধায়ক জ্ঞানদেব আহুজার মতে হনুমান ছিলেন আদিবাসী। আবার উত্তরপ্রদেশের লখনউয়ের পুর কাউন্সিলর বিজেপি নেতা বুক্কাল নবাব পরিষ্কার জানিয়ে দিয়েছেন হনুমান ছিলেন মুসলমান। উত্তরপ্রদেশের আরেক মন্ত্রী চৌধরি লক্ষ্মী নারায়ণ হনুমানকে জাঠ বলে দাবি করেছিলেন।
আরও পড়ুনঃ ২২ বছর পর ফের ভূস্বর্গে রাষ্ট্রপতি শাসন
রোজদিনই কোনও না কোনও রাজনৈতিক নেতা হনুমানের জাত নিয়ে বেসামাল মন্তব্য করে বিতর্কের খোরাক জুগিয়ে যাচ্ছেন। হনুমানকে ‘চিনা’ বলে দাবি জানিয়েছিলেন বিজেপি সাংসদ কীর্তি আজাদ। যেন একটা ট্রেন্ড চলছে। হনুমানকে ঠিক কে ছিলেন, তা বিচার করার দায় রয়েছে তাঁদের উপর। আদিবাসী, দলিত, মুসলমান, জাঠ ও চিনা-র পর এবার কুস্তিগীর।
বিজেপির গবেষণায় এবার রামভক্ত হনুমানের জাত। আর সে জন্য হনুমানের জাত, ধর্ম, গোত্র বিচারের প্রতিযোগিতায় নেমেছেন ভারতীয় রাজনৈতিক মহল। এর শেষ কোথায় তার জন্যই এখন অপেক্ষা। হনুমানকে কোথায় নামিয়ে আনেন রাজনীতির নেতারা সেটাই এখন দেখার।