The News বাংলা, EXCLUSIVE: সরকারী চাকরির নিয়োগের ক্ষেত্রে ফের দুর্নীতির অভিযোগ! এবার অভিযোগের তীর রাজ্য সরকারের অধীনস্থ ‘ওয়েস্ট বেঙ্গল স্টেট ইলেকট্রিসিটি ট্রান্সমিশন কোম্পানি” বা ‘WBSETCL’ এর দিকে। তবে সব অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছেন বিদ্যুৎমন্ত্রী শোভনদেব চট্টোপাধ্যায়। তবে অভিযোগ গেছে মুখ্যমন্ত্রী দফতর পর্যন্ত।
আরও পড়ুনঃ ২০১৪ সালে বিজেপি ব্যবহার করেছিল আমাকে, বিস্ফোরক অন্না হাজারে
কলকাতার গড়িয়ার বাসিন্দা বিমল বসু নামক এক ব্যক্তি ‘WBSETCL’ এর বিরুদ্ধে এই চাঞ্চল্যকর অভিযোগ করেন। রাজ্য ভিজিলেন্স কমিশনের কাছে তাঁর অভিযোগের ভিত্তিতে তিনি একটি চিঠি দেন। অভিযোগকারীর মতে, অতি সম্প্রতি ‘সহকারী ম্যানেজার-কর্পোরেট কমিউনিকেশন’ পদে লোক নিয়োগ করা হয়েছে। আর সেখানেই হয়েছে এই দুর্নীতি, অভিযোগ এমনটাই।
সরকারি নিয়মে এক পদের জন্যে কম করে তিনজন পদপ্রার্থীর ইন্টারভিউ করতে হয়। লিখিত পরীক্ষার ভিত্তিতে ওই পদে ইন্টারভিউর জন্য নির্বাচিত হয়। লিখিত পরীক্ষার ভিত্তিতে তিনজনকে ইন্টারভিউতে ডাকাও হয়। দেবায়ন ভাদুড়ি, সহেলী দত্ত ও শুভেচ্ছা মিত্র।
আরও পড়ুনঃ ভারত হাতে পাচ্ছে বিজয় মালিয়াকে, ভোটের আগে বড় জয় মোদী সরকারের
কিন্তু নিয়মবহির্ভূত ভাবে শুভেচ্ছা মিত্রকে কোনও এক অজ্ঞাত কারণে ইন্টারভিউ দিতে দেননি জেনারেল ম্যানেজার-মানবসম্পদ এবং সিনিয়র ম্যানেজার মানবসম্পদ। ওই পদের যোগ্য দাবিদার হওয়ার পরেও শ্রীমতী শুভেচ্ছা মিত্রর বদলে অনৈতিকভাবে শ্রীমতী সহেলি দত্তকে নিযুক্ত করা হয়। অভিযোগ জানিয়েছেন, বিমল বসু ও শুভেচ্ছা মিত্র।
আরও পড়ুনঃ ব্রিগেডের পর ধর্মতলা, ডিম্ভাত ছেড়ে এবার স্যান্ডুইচ ও চিকেন বিরিয়ানি
তাঁর অভিযোগের মূল তীর কোম্পানির ‘জেনেরাল ম্যানেজার-মানবসম্পদ বিভাগ’ এবং ‘সিনিয়র ম্যানেজার-মানবসম্পদ’ এর বিরুদ্ধে। সরকারী নিয়ম অনুযায়ী নূন্যতম তিনজন ব্যক্তির ইন্টারভিউ কোম্পানিকে নিতেই হবে। এই ক্ষেত্রেও দুর্নীতির অভিযোগ ওঠে এই দুই ম্যানেজারের বিরুদ্ধে। তাঁরা এই নিয়ম মানেননি বলেই অভিযোগ। তবে WBSETCL এর তরফ থেকে এই অভিযোগ উড়িয়ে দেওয়া হয়েছে।
আরও পড়ুনঃ মায়ের প্রতিহিংসা থেকে বাঁচতেই কি বিজেপিতে যোগ দিলেন ‘মমতার মেয়ে’
বিদ্যুৎ ভবনের কর্মীরা এই দুর্নীতির পিছনে অবৈধ সম্পর্ক ও আর্থিক লেনদেনেরও আভাস পাচ্ছেন। অর্থের বিনিময়ে সরকারী চাকরি পাইয়ে দেওয়া, চিরাচরিত অভিযোগ উঠছে। এটাও বলা হচ্ছে যে বর্তমানে অফিসের পর মিস দত্তকে ‘জেনেরাল ম্যানেজার-এইচ.আর’ এর সাথে ঘুরতে দেখা যাচ্ছে। তাঁদের ঘনিষ্ঠতা বিদ্যুৎ ভবনের অনেক কর্মীর মধ্যেই গুঞ্জন সৃষ্টি করেছে। তবে WBSETCL এর তরফ থেকে শুভেচ্ছা মিত্রর অভিযোগের সারবত্তা নেই বলেই জানান হয়েছে।
তবে, কাজের বাইরে একজাতীয় সম্পর্ক ফেঁদে কাজের ক্ষেত্রে বিশেষ সুবিধা পাওয়া, এটাই সন্দেহ করছেন দফতরের অনেকেই। কান পাতলেই শোনা যাচ্ছে মুখরোচক রসাল গল্প। মিস মিত্র তাঁর বক্তব্যের সপক্ষে বেশকিছু নথিও প্রমাণস্বরূপ জমা করেছেন। এটিও জানা গেছে যে সিনিয়র ম্যানেজার মিস মিত্রর সঙ্গে অভব্য আচরণ করেন চাকরির ইন্টারভিউতে এবং শুভেচ্ছা মিত্র এর ইন্টারভিউ নেননি।
আরও পড়ুনঃ সারদা কেলেঙ্কারির পাল্টা এবার সিবিআইকেই প্রতারণা মামলার নোটিশ মমতার পুলিশের
শুভেচ্ছা মিত্র এর অভিযোগ, ‘জেনেরাল ম্যানেজার-মানবসম্পদ বিভাগ’ এবং ‘সিনিয়র ম্যানেজার-মানবসম্পদ’, ‘ডিরেক্টর-এইচ.আর’ কে বাধ্য করেন মিস দত্তকে নিয়োগ করার জন্যে। তিনি অভিযোগ পাঠিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এর দফতরেও।
আরও পড়ুনঃ মমতার নির্দেশে সিবিআই অফিসারদের আটক করে বাংলার আইপিএসরা বিপদে
সবমিলিয়ে, বিদ্যুৎ ভবনে কর্মী নিয়োগে দুর্নীতির এই ধরণের অভিযোগ, সাধারণ কর্মী ও অফিসারদের মধ্যে বেশ আলোড়ন ফেলেছে। শেষ পর্যন্ত সঠিক তদন্তের আশায় অভিযোগকারী। যাতে তাঁর সাথে ঘটা অন্যায়ের ন্যায্য বিচার পাওয়া যায় তাঁর জন্য সব দফতরে ঘুরছেন। বিদ্যুৎমন্ত্রী শোভনদেব চট্টোপাধ্যায় এই অভিযোগ উড়িয়ে দিয়ে বলেছেন, “একটা অভিযোগ পেয়েছি, তদন্ত করে দেখাও হয়েছে”। তবে তাতে কানাঘুষো থামছে না বিদ্যুৎ দফতরে।