কলকাতা: কালীপুজোর আগের দিনই দর্শনার্থীদের জন্য খুলে দেওয়া হল দক্ষিণেশ্বর স্কাই-ওয়াক। সোমবার বিকালে স্কাই-ওয়াকের সূচনা করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
কালীপুজোর আগেই সুখবর মিলল দক্ষিণেশ্বর মন্দিরের দর্শনার্থীদের জন্য। বহু প্রতীক্ষিত সেই স্কাই-ওয়াকের পথচলা শুরু হল কালীপুজোর আগের দিনই। মুখ্যমন্ত্রীর ছিলেন রাজ্যের পুর ও নগরোন্নয়নমন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম ও অন্যান্যরা। মঙ্গলবার কালীপুজোর দিন সকাল থেকেই এই স্কাই-ওয়াক দিয়ে সরাসরি দক্ষিণেশ্বর স্টেশন স্টেশন থেকে দক্ষিণেশ্বর মন্দিরে আসতে পারবেন ভক্তরা।
এই স্কাই-ওয়াকের দেখভালের দায়িত্বে রয়েছে কেএমডিএ। দর্শনার্থীদের নিরাপত্তার দিকটায় যে সব থেকে বেশি নজর দিতে হয়েছে সে কথা বলেছেন কেএমডিএর এক আধিকারিক।
আরও পড়ুনঃ অজানা কাহিনির আড়ালে সিদ্ধপিঠ তারাপীঠের তারা মা
তাঁর কথায়, “দিনে অসংখ্য দর্শনার্থী দক্ষিণেশ্বর মন্দিরে আসেন। কালীপুজো বা পয়লা বৈশাখের দিন সেটা আরও তিন গুণ বেড়ে যায়। ফলে দর্শনার্থীদের নিরাপত্তাকে আমাদের সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিতে হয়েছে।”
মোট ৬০ কোটি টাকা ব্যয়ে তৈরি হয়েছে এই স্কাই-ওয়াক। এর ফলে এক দিকে যেমন দক্ষিণেশ্বর মোড়ে যানজট কমবে, তেমনই দর্শনার্থীদেরও অনেক সুবিধা হবে। এই স্কাই-ওয়াকে ১৪টি এস্কেলেটর, ৪টি লিফ্ট এবং ৭টা সিঁড়ি থাকছে। পাশাপাশি স্কাই-ওয়াকের ওপরে রয়েছে দু’শো দোকান। স্টেশন থেকে মন্দির পর্যন্ত এই স্কাই-ওয়াক।
আরও পড়ুনঃ স্বপ্নের কালিপুজোয় মা কালির সঙ্গে সাধারণ নারীর পুজো
৩৪০ মিটার লম্বা ও ১০.১৫ মিটার চওড়া এই স্কাই-ওয়াক। এই নয়া পথে খুব সহজেই দক্ষিণেশ্বর মন্দিরে প্রবেশ করতে পারবেন দর্শনার্থীরা। দক্ষিণেশ্বর মন্দির চত্বরে স্কাই-ওয়াকের ফলে যানজট অনেকটাই কমবে বলেও মনে করা হচ্ছে। প্রায় ৫০ হাজার মানুষ রোজ দক্ষিণেশ্বর মন্দিরে যান। কালীপুজোর সময় সেই সংখ্যা পৌঁছয় লাখের ঘরে।
দক্ষিণেশ্বর মন্দির চত্বরে যান যন্ত্রণা লাঘব করতেই ২০১৪ সালে মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জীর নির্দেশে স্কাই-ওয়াকের পরিকল্পনা নেয় কেএমডিএ কর্তৃপক্ষ। এই স্কাই-ওয়াকে থাকছে ১৪টি চলমান সিঁড়ি। এছাড়াও থাকছে ৪টি লিফট। প্রতিটি লিফটে ২০ জন করে ওঠা-নামা করতে পারবেন।
আরও পড়ুনঃ ৩০০ বছরের ডাকাতে কালির হাড় হিম করা কাহিনি
কেএমডিএ সূত্রে জানা গিয়েছে, স্কাই-ওয়াকে ৭টি সিঁড়ি রয়েছে। জরুরি পরিস্থিতি মোকাবিলার জন্য এই সিঁড়ি রাখা হয়েছে। স্কাই-ওয়াকে রাখা হয়েছে অগ্নিনির্বাপণ ব্যবস্থাও, রয়েছে ফায়ার অ্যালার্ম, ওয়াটার স্প্রিংকলার্স।
স্কাই-ওয়াকের উপর বানানো হয়েছে দু ফুট বাই দু ফুটের প্রায় ২০০টি দোকান। অতিরিক্ত ভিড়ের কথা মাথায় রেখে দোকানগুলিকে একমুখী করা হয়েছে।
আরও পড়ুনঃ নরকঙ্কালের খুলি সাজিয়ে জাগ্রত মহাশ্মশান কালীর পুজো
স্কাই-ওয়াকের উপরে রয়েছে জলসহ বর্জ্যপদার্থ নিকাশি ব্যবস্থা। স্কাই-ওয়াকের সঙ্গে সরাসরি যোগ করা হয়েছে রেল স্টেশনের। এর ফলে ট্রেন থেকে নেমেই দর্শনার্থীরা সহজেই প্রবেশ করতে পারবেন মন্দির প্রাঙ্গণে। স্কাই-ওয়াকের নীচ দিয়ে চলাচল করবে গাড়ি।
আগামীকাল থেকেই দক্ষিণেশ্বর মন্দিরে যাবার জন্য অনেকটাই কষ্ট লাঘব হবে পূর্নাথীদের। মা কে দেখার জন্য সহজেই মায়ের কাছে যেতে পারবেন ভক্তরা। কালী পুজোর আগের দিন বড় প্রাপ্তি রাজ্যের মানুষের।