The News বাংলা: বলিউডের জনপ্রিয় অভিনেতা শাহরুখ খান সম্পর্ক জানতে তাঁর ভক্তদের আগ্রহের শেষ নেই। কিং খান সবসময়ই একটা রহস্য। শাহরুখের ব্যক্তিগত এবং পারিবারিক তথ্য জানার জন্য গভীর আগ্রহ থাকে দর্শকদের ও তাঁর ফ্যানদের।
ভক্তদের কৌতূহল মেটাতে শাহরুখ খান নিজেও বিভিন্ন সময় ভক্তদের কৌতূহল মেটাতে নানা তথ্য তুলে ধরেছেন। ব্যক্তিগত জীবন থেকে বাল্যকালের প্রেম অনেক কিছুই তাঁর মুখ থেকে শুনেছে ফিল্ম প্রেমিক আমজনতা।
শুক্রবার তাঁর জন্মদিনে চলুন জেনে নেই শাহরুখ খান সম্পর্কে কয়কেটি তথ্য:
১. তাজ মহম্মদ খান আর লতিফ ফাতিমার পরিবারে ১৯৬৫ সালের ২ নভেম্বর জন্ম হয় শাহরুখের। পাঁচ বছর বয়স পর্যন্ত তিনি নানীর সঙ্গে প্রথমে ম্যাঙ্গালোর আর তারপরে ব্যাঙ্গালোরে থাকতেন। নানী তাঁর দেখাশোনা করতেন। শাহরুখের নানা, ম্যাঙ্গালোর বন্দরের মুখ্য ইঞ্জিনিয়ার ছিলেন।
২. শাহরুখের বাবা পাকিস্তানের পেশোয়ারের মানুষ, মা ভারতের হায়দ্রাবাদের আর দাদি কাশ্মীরের। ভারত পাকিস্তান দুই দেশের রক্তই আছে কিং খানের শরীরে।
৩. ছোটবেলায় বাড়িতে শাহরুখের বাবা ‘হিন্দকো’ ভাষায় কথা বলতেন। এই ভাষা পাকিস্তানে ব্যবহৃত পাঞ্জাবী কথ্য ভাষা।
৪. পাকিস্তানের পেশোয়ারের সঙ্গে শাহরুখের যোগাযোগ নিয়মিত ছিল। ১৯৭৮-৭৯ সালে তিনি গিয়েছিলেন বাবার ফেলে আসা শহরে। সে প্রথমবার শাহরুখ, তাঁর বাবার পরিবারের সঙ্গে দেখা করেছিলেন। ভারতে শুধু তাঁর মায়ের দিকের আত্মীয় স্বজন ছিলেন, বাবার গোটা পরিবারই পেশোয়ারে থাকতেন।
আরও পড়ুনঃ বিশ্বের সেরা একশোয় সত্যজিতের পথের পাঁচালি
৫. একটু বড় হওয়ার পরে শাহরুখের পরিবার দিল্লিতে চলে আসেন। সেন্ট কলাম্বাস স্কুলে পড়াশোনা করেছেন তিনি। খেলাধুলোয় খুব আগ্রহী ছিলেন শাহরুখ।
৬. স্কুলে পড়ার সময়ে শাহরুখ হিন্দিতে খুব একটা দক্ষ ছিলেন না। তবে একবার হিন্দি পরীক্ষায় দশে দশ পেয়েছিলেন তিনি, পুরষ্কার হিসাবে তাঁর মা সিনেমা দেখাতে নিয়ে গিয়েছিলেন। আর এটাই ছিল তাঁর জীবনের মোড় ঘুরিয়ে দেওয়া ঘটনা।
৭. দিল্লির হংসরাজ কলেজ থেকে অর্থনীতিতে বি এ পাশ করেন শাহরুখ আর জামিয়া মিলিয়া ইসলামিয়াতে মাস কমিউনিকেশন নিয়ে এম এ পড়তে ভর্তি হন। তবে সেটা আর শেষ করা হয় নি তাঁর।
আরও পড়ুনঃ যৌনতা কেন্দ্রিক বিনোদনের জন্য বিশ্বের সেরা ২০ টি ঠিকানা
৮. শাহরুখ খানের স্ত্রী গৌরীর বাবা একজন সেনা কর্মকর্তা ছিলেন। স্কুলে পড়ার সময় গৌরীর সাথে প্রথম চেনা পরিচিতি হয় শাহরুখের। একটা পার্টিতে দুজনের মধ্যে বেশ অনেকক্ষণ গল্প চলে। তখন থেকেই শুরু হয় শাহরুখ-গৌরীর প্রেম পর্ব। Love at First sight।
৯. সেই তারিখটাও মনে আছে শাহরুখের – দিনটা ছিল ১৯৮৪ সালের ৯ ই সেপ্টেম্বর। সেই দিনই শাহরুখ ড্রাইভিং লাইসেন্সও পেয়েছিলেন। গৌরীর সঙ্গে দেখা আর গাড়ি চালানোর ছাড়পত্র দুটো আনন্দই একদিনে।
১০. গৌরী আর শাহরুখের বিয়ে হয় ১৯৯১ সালের ২৫ অক্টোবর। টানা ৭ বছর প্রেমের পর। তবে তার জন্য কম কাঠখড় পোড়াতে হয় নি তাঁকে।
আরও পড়ুনঃ বিশ্বে আলোড়ন ফেলে চুমু খেতে রাজি সোফিয়া
১১. শাহরুখের যখন ১৫ বছর বয়স, তখনই তাঁর বাবা মারা যান ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়ে। পেশায় উকিলও ছিলেন আবার স্বাধীনতা সংগ্রামেও অংশ নিয়েছিলেন শাহরুখের বাবা তাজ মহম্মদ খান। অল্প বয়সে একবার জেলও খেটেছেন, পরে মৌলানা আবুল কালাম আজাদের বিরুদ্ধে ভোটেও দাঁড়িয়েছিলেন তাজ মহম্মদ খান।
১২. শাহরুখ খানের প্রথম রোজগার ছিল ৫০ টাকা। গায়ক পঙ্কজ উদাসের একটা কনসার্টে কাজ করে সেই টাকা পেয়েছিলেন। প্রথম রোজগারের টাকা দিয়ে ট্রেনের টিকিট কেটে শাহরুখ আগ্রা গিয়েছিলেন।
আরও পড়ুনঃ নিক প্রিয়াঙ্কার নতুন বিলাসবহুল বাড়ির অন্দরমহলে
১৩. তবে শাহরুখের প্রথম টেলি-সিরিয়াল শুরু হয় ১৯৮৯ সালে। কর্নেল কাপুরের পরিচালনায় ‘ফৌজি’ নামের সেই ধারাবাহিক খুবই জনপ্রিয় হয়েছিল। সেখানেই প্রথমবার ভারতের দর্শক দেখলেন পরের কয়েক বছরে স্টার থেকে সুপারস্টার হয়ে ওঠা শাহরুখ খানকে।
১৪. ছোট থেকেই শাহরুখ খানের ইচ্ছা ছিল সেনাবাহিনীতে যোগ দেওয়ার। কলকাতার ‘আর্মি স্কুল’-এ ভর্তিও হয়েছিলেন শাহরুখ, কিন্তু ছেলেকে ছাড়তে রাজি হন নি তাঁর মা। ফলে আর্মিতে যোগ দেওয়ার ইচ্ছে ছাড়তে হয় তাঁকে।
১৫. ১৯৮৯-৯০ সালে রেণুকা সাহানের সঙ্গে ‘সার্কাস’ সিরিয়ালে কাজ করতে শুরু করেন শাহরুখ। সেই সময়ে তাঁর মা গুরুতর অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে ভর্তি ছিলেন। মাকে ধারাবাহিকটার একটা পর্ব দেখানোর জন্য বিশেষ অনুমিত নিয়েছিলেন তিনি। কিন্তু তাঁর মা তখন এতটাই অসুস্থ, যে ছেলেকে চিনতেও পারেন নি। ১৯৯১ সালের এপ্রিল মাসে মৃত্যু হয় শাহরুখ খানের মায়ের।
১৬. মায়ের মৃত্যুর শোক থেকে দূরে সরে যেতে এক বছরের জন্য শাহরুখ দিল্লি থেকে মুম্বাই গিয়েছিলেন। কিন্তু তাঁর ফেরা আর হয়নি আর। হয়ে ওঠেন মুম্বাইয়ের বাজিগর।
১৭. সে বছরই প্রথম চলচ্চিত্রে অভিনয় করেন শাহরুখ খান। সেটি ছিল হেমা মালিনী অভিনীত ‘দিল আসনা হ্যায়’। নায়ক হিসাবে শাহরুখকে প্রথম দেখা গেল পরে বছর ২৫ জুন ১৯৯২তে ‘দিওয়ানা’য়। প্রথম দর্শনেই দর্শকদের মন জয় করলেন শাহরুখ।
আরও পড়ুনঃ বিয়ে না করেই মা হলেন দঙ্গল অভিনেত্রী
১৮. কঠোর পরিশ্রম করতে পারেন শাহরুখ। মাত্র চার পাঁচ ঘণ্টা ঘুমান তিনি। তাঁর প্রিয় উক্তি হলো, ‘ঘুমানো মানে জীবন নষ্ট করা’। স্ত্রী সন্তান ছাড়া শাহরুখের সঙ্গে তাঁর বাড়িতে থাকেন বড় বোন লালারুখ।
১৯. সানি দেওয়লের বিপরীতে ‘ডর’ সিনেমায় নেগেটিভ রোল তাঁর জীবনের মোড় ঘুরিয়ে দেয়। নায়কের রোল করার কথা ছিল শাহরুখের। সানি দেওয়ল নেগেটিভ রোল করতে রাজি না হওয়ায় রোলটি করেন কিং খান। বাস, ওখানেই বাজিমাত।
২০. আর তাকে মেগাস্টার থেকে বেতাজ বাদশা বানায় দিলবালে দুলহনিয়া লে জায়েঙ্গে আর কুছ কুছ হোতা হ্যায়। বাস, আর পিছনে ফিরে তাকাতে হয় নি এই দিলবালে বাজিগর বাদশাকে।
শুধু ভারতে নয় বিশ্বের অন্যতম জনপ্রিয় অভিনেতা ৫৩ বছর পার করে আজ ৫৪ য় পা দিলেন। Happy Birthday Shahrukh Khan। জন্মদিনের অনেক অনেক শুভেচ্ছা।