The News বাংলা, নিউইয়র্ক: মারা গেলেন আয়রনম্যান, স্পাইডারম্যান, ব্ল্যাকপ্যানথার, হাল্ক এর ‘বাবা’। সোমবার তাঁর মৃত্যু হয়। তিনি স্ট্যান লি, কমিকস জগতের অন্যতম সেরা সৃষ্টিকর্তা বলা হয় তাঁকে।
কালজয়ী সব কমিকসের স্রষ্টা বলতে গেলেই বোধ হয় স্ট্যান লি কথাটা আগে মনে আসবে। তার সকল সৃষ্টি মানুষের মনে জায়গা করে নিয়েছে খুব সহজেই। আজও কমিকসের কথা বললে মানুষের মুখে চলে আসে আয়রনম্যান, স্পাইডারম্যান, ব্ল্যাকপ্যানথার, হাল্ক ইত্যাদি। আর এই সবাই তাঁর হাতেই তৈরি।

তবে এমন কমিকস, আর তিনি ভক্তদের উপহার দিতে পারবেন না। কেননা মার্ভেল কমিকসের স্রষ্টা, স্ট্যান লি চলে গেছেন আর না ফেরার দেশে। তার মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করেছেন তার কন্যা জেসি। বিশ্বকে কাঁদিয়ে মার্ভেল কমিকসের প্রধান সম্পাদক, বহু কার্টুনের সৃষ্টিকর্তা স্ট্যান লি আর নেই।
আরও পড়ুন: ফের ভাঙছে হিমবাহ, ভয়ঙ্কর বিপদের মুখে পৃথিবী
সোমবার শিকাগোর শিনাই মেডিক্যাল সেন্টারে মারা যান তিনি। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৯৫ বছর। বিগত বেশ কয়েক বছর ধরেই কঠিন বার্ধক্যজনিত রোগে ভুগছিলেন তিনি। চোখের দৃষ্টি প্রায় চলে গিয়েছিল।

১৯৬০ সাল থেকে মার্ভেল কমিকস লেখা শুরু হয় স্ট্যান লির। শুধু লেখাই নয়, প্রচ্ছদ থেকে তার খুঁটিনাটি, সবটাই প্রায় নিজে হাতে করতেন প্রবাদপ্রতীম ব্যক্তিত্বের অধিকারী এই মানুষটি।
আরও পড়ুন: মহাকাশ লড়াইয়েও ভারতের কাছে হারছে পাকিস্তান
ফিকশনই নয়, বাস্তবের নানা ঘটনাও স্ট্যান লি রচিত নানা কমিকসে উঠে এসেছে। তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য ভিয়েতনাম যুদ্ধ। ১৯৭২ এর পর থেকে কমিকসের কাহিনি, বইয়ের পাতা থেকে উঠে আসে টিভির পর্দায়। টিভি কমিকসের জনপ্রিয়তা বাড়ে ক্রমশ। সেই সঙ্গে বাড়ে স্ট্যান লির কদর।

এই সময় থেকে প্রায় মিথে পরিণত হয়েছিলেন লি। তবে সেখানেই থেমে যাওয়া নয়, বর্তমানের থেকে কমিকসকে কীভাবে আরও মানুষের মনের মত করা যায় তার চিন্তা করতেন তিনি। তাই, একের পর এক সুপারহিরোর সৃষ্টি তাঁর হাত ধরে।
আরও পড়ুন: বিশ্বে আলোড়ন ফেলে চুমু খেতে রাজি সোফিয়া
১৯২২ সালে নিউইয়র্ক শহরের এক নিম্নবিত্ত পরিবারে জন্ম হয় স্ট্যান লির। বাবা জ্যাক লিয়েবার ছিলেন দর্জি। ছোটবেলার বিভিন্ন স্বপ্নই, বড় হয়ে একের পর এক সফল কমিকস চরিত্র হয়ে বেরোয় তাঁর হাত ধরে। দর্জির ছেলে নাম লেখান, পৃথিবীর অন্যতম সফল ব্যক্তিদের তালিকায়।

মার্ভেল ওয়ার্ল্ডওয়াইড ইনকরপোরেটেড বা সংক্ষেপে মার্ভেল কমিকস হল যুক্তরাষ্টের অন্যতম বৃহৎ কমিক্স প্রকাশনা প্রতিষ্ঠান। ২০০৯ সালে ওয়াল্ট ডিজনি কোম্পানি ৪.২৪ বিলিয়ন মার্কিন ডলার দিয়ে স্ট্যান লির মার্ভেল ওয়ার্ডওয়াইড কোম্পানির নিয়ন্ত্রনকারী কোম্পানি কিনে নেয়।
আরও পড়ুন: রহস্যভেদ করতে সূর্যের সবচেয়ে কাছে ‘পার্কার সোলার প্রোব’
মার্ভেল কমিকস মূলত এর বিখ্যাত অনিমানবীয় চরিত্র স্পাইডারম্যান, এক্স ম্যান, ফ্যান্টাস্টিক ফোর, আয়রনম্যান, দা হাল্ক, থর, ক্যাপ্টেন আমেরিকা, এবং ডেয়ারডেভিল ইত্যাদি চরিত্রের জন্য।
মার্ভেল কমিকসের অতিমানবীয় চরিত্রগুলো মূলত মারভেল ইউনিভার্সের নামে পরিচালিত হয়। এই চরিত্রগুলো বাস্তব জীবনের শহর যেমন নিউইয়র্ক, লস এঞ্জেলস এবং শিকাগোকে কেন্দ্র করে পরিচালিত হয়।
আরও পড়ুন: ‘কলকাতা আন্তর্জাতিক ফিল্ম ফেস্টিভ্যাল’ তুমি কার ?
মার্ভেল কমিকসকে ভিত্তি করে মার্ভেল সিনেমাটিক ইউনিভার্স তৈরি করা হয়েছে যেখানে এর জনপ্রিয় কমিকস চরিত্রগুলো নিয়ে চলচিত্র নির্মিত হচ্ছে। ২০০৯ সালে ওয়াল্ট ডিজনি এই কোম্পানি কিনে নেয়।

স্ট্যান লির মৃত্যুর সঙ্গে সঙ্গে থেমে গেল নতুন কোন সুপারহিরোর জন্ম হওয়া। পৃথিবীর সব শিশুই হারাল তাদের পছন্দের নায়কদের সৃষ্টিকর্তাকে।