নিজস্ব সংবাদদাতা : ফের কলকাতা হাইকোর্টে ধাক্কা খেলেন রাজ্য সরকার তথা মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
মঙ্গলবারও কলকাতা হাইকোর্ট পুজোয় অনুদান সংক্রান্ত মামলায় স্থগিতাদেশ বহাল রাখল। শেষ পর্যন্ত সরকারের সিদ্ধান্ত মান্যতা পাবে কিনা তাই নিয়ে রয়েই গেল ধোঁয়াশা। চারদিন পরেই পুজো শুরু, কিন্তু প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চ কোন জরুরিকালীন রায় দিল না। আগামী বৃহস্পতিবার পর্যন্ত স্থগিতাদেশ বহাল রাখল। ওইদিন আবার শুনানি হবে।
শুক্রবার, রাজ্যের ২৮ হাজার দুর্গাপুজোয় ১০ হাজার টাকা করে সরকারি অনুদান দেওয়ার উপর অন্তর্বর্তী স্থগিতাদেশ জারি করে কলকাতা হাইকোর্ট। মঙ্গলবার পর্যন্ত এই স্থগিতাদেশ বহাল থাকার কথা ঘোষণাও করে। তারপর, এদিনও সেই স্থগিতাদেশের সময় বাড়ল।
সেপ্টেম্বর মাসে পুজো উদ্যোক্তাদের সঙ্গে নেতাজি ইন্ডোর স্টেডিয়ামে কলকাতা পুলিশ, দমকল এবং সিইএসই-র সমন্বয় বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ওই সরকারি অনুদানের কথা ঘোষণা করেছিলেন। প্রতিটি পুজোকে ১০ হাজার টাকা দেওয়ার ঘোষণা করা হয়েছিল।
ওই বৈঠকে মূখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়েছিলেন, কলকাতার ৩ হাজার সহ রাজ্যের ২৫ হাজার দুর্গা পুজোকে রাজ্য সরকারের তরফে এককালিন ১০ হাজার টাকা করে অনুদান দেওয়া হবে। খরচ হবে 28 কোটি টাকা।
জনগণের করের টাকা সরকার এই ভাবে খরচ করতে পারে কি না, সেই প্রশ্ন তুলে আদালতের দ্বারস্থ হয়েছিলেন বাম সংগঠন আরএসপি-র নেতা অশোক ঘোষ।
আরএসপি-র শ্রমিক সংগঠন ইউটিইউসি-র সাধারণ সম্পাদক হিসাবে অশোক ঘোষ কলকাতা হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতিকে এই বিষয় নিয়ে চিঠি দিয়েছিলেন। ওই চিঠির ভিত্তিতেই জনস্বার্থ মামলা গ্রহণ করার জন্য প্রধান বিচারপতিকে আবেদন জানিয়েছিলেন তিনি। সেই মামলার শুনানিতেই গত শুক্রবার প্রধান বিচারপতি দেবাশিস করগুপ্ত এবং বিচারপতি শম্পা সরকারের ডিভিশন বেঞ্চ ওই স্থগিতাদেশের নির্দেশ দেয়।
আরএসপি নেতা অশোকবাবু প্রধান বিচারপতিকে লেখা চিঠিতে লিখেছিলেন, কোনও ধর্মীয় উৎসব আয়োজনে সরকারি অর্থ দেওয়া সংবিধান লঙ্ঘন করে। ধর্মনিরপেক্ষ ও গণতান্ত্রিক ব্যবস্থায় এমন ঘোষণা মেনে নেওয়া যায় না বলেই প্রধান বিচারপতি দেবাশিস করগুপ্তকে জানিয়েছিলেন তিনি।
রাজ্যের উন্নয়নে খরচা না করে কেন ২৮ হাজার পুজো কমিটিকে ২৮ কোটি টাকা দেওয়া হবে, সেই প্রশ্নও তোলা হয় ওই চিঠিতে। সেই চিঠির ভিত্তিতেই এই জনস্বার্থ মামলার শুনানি শুরু হয়। তারপরেই এই স্থ্যগিতাদেশ জারি করে হাইকোর্ট। এদিন বাড়ল সেই সময়সীমা।
বলা যায়, অশোকের হাতেই আপাততঃ বন্ধ হল মমতার ঘোষণা করা ২৮ হাজার পুজোর ১০ হাজার করে প্রাপ্তি। পুজোর আগে এই নিয়ে হাইকোর্ট রায় দেবে কিনা সেটাই এখন প্রশ্ন। আগামী বৃহস্পতিবার রাজ্য সরকারের পাশাপাশি গোটা রাজ্যের পূজা উদ্যোক্তারাও তাকিয়ে থাকবেন হাইকোর্টের দিকে।