২৮ দিন পর টনক নড়ল মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এঁর। বুধবার বিকালে স্কুল সার্ভিস অনশন মঞ্চে যান মুখ্যমন্ত্রী। দিলেন ব্যবস্থা নেবার আশ্বাস। শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়কে পুরো ব্যপারটা দেখতে বললেন। এখন ভোটের আদর্শ আচরণবিধি চলছে, তাই ভোটের পর এই ব্যপারে ব্যবস্থা নেবার ভরসা দিলেন মুখ্যমন্ত্রী। এই মুহূর্তে অনশনকারীরা নিজেদের মধ্যে কথা বলছেন। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এর আশ্বাস পাওয়ার পর কি করা উচিত, সেই নিয়ে চলছে আলচনা।
স্কুল সার্ভিস নিয়ে আরও পড়ুনঃ যাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ তারাই শুনবে স্কুল সার্ভিস কেলেঙ্কারির ঘটনা
কলকাতা প্রেস ক্লাবের সামনে স্কুল সার্ভিস কমিশনের বিরুদ্ধে চাকরিপ্রার্থীদের অনশন আন্দোলন বুধবার পা দেয় ২৮ দিনে। দিন যত গড়াচ্ছে ততই জটিল আকার নিচ্ছে এসএসসি চাকরিপ্রার্থীদের অনশন আন্দোলন। আজ ২৮ দিনে পড়ল তবু অনশন জট কাটল না। এই পরিস্থিতিতে সরাসরি মুখ্যমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ চায় অনশনকারীরা। এবার ২৮ দিন পর সাড়া মিলল সিঙ্গুর কাণ্ডে ধর্মতলায় টানা ২৫ দিন অনশন আন্দোলন করা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের।
স্কুল সার্ভিস নিয়ে আরও পড়ুনঃ খোলা রাস্তায় বসে মমতার ঘেরাটোপ অনশনের রেকর্ড ভাঙল স্কুল সার্ভিস উত্তীর্ণরা
গত ২৮ ফেব্রুয়ারি থেকে কলকাতার রাজপথে অনশনে বসেছেন এই যুবক-যুবতীরা। উল্লেখ, শুরুতে প্রায় ৪৫০ জনকে নিয়ে অনশন শুরু করেছিলেন এসএসসি-র ওই চাকরি প্রার্থীরা। অনশন চলাকালীন অসুস্থ হয়ে পড়েছেন অনেক প্রার্থী। গর্ভস্থ সন্তান নষ্ট হওয়ায় গর্ভপাত করতে হয়েছে একজন অনশনকারীর। দুই অন্তঃসত্ত্বাকে বাড়িতে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে। হসপিটালে ভর্তি করতে হয়েছে ৫৮ জনকে।
স্কুল সার্ভিস নিয়ে আরও পড়ুনঃ বাংলা এখন লাশের রাজনীতিতে অভ্যস্থ, শুধু একটা লাশ চাই আমাদের
অনশনরত মোট ১০০ জনকে বাড়ি পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে। বীরভূমের একজন ডেঙ্গু আক্রান্ত, মুর্শিদাবাদ থেকে আসা একজন ভুগছে রক্ত আমাশায়। এখনও প্রতিদিন গড়ে ২০০ জন করে প্রেস ক্লাবের সামনে অনশন অবস্থানে বসে। তাঁদের বক্তব্য, “এসব সত্ত্বেও আমাদের লড়াই থামবে না”। প্রায় ৩৫০ জন এখনও অনশন মঞ্চে আছেন।
স্কুল সার্ভিস নিয়ে আরও পড়ুনঃ এসএসসি চাকরির আন্দোলন বন্ধের নির্দেশ, জোর করে তুলে দেবার হুমকি পুলিশের
শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের সঙ্গে কথা বলে সন্তুষ্ট নন অনশনকারীরা। চাকরির বিষয়ে মন্ত্রী এখনও কোনও আশ্বাস দেন নি। রাজ্যপাল কেশরীনাথ ত্রিপাঠীর সঙ্গে দাবি নিয়ে আলোচনা হওয়ার কথাও হয়। চাকরি নিয়ে কোনও আশ্বাস না পেলে তাঁরা কোনোমতেই অনশন তুলবেন না বলে সিদ্ধান্তে অনড় অনশনকারীরা। তবে বুধবার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও কিন্তু চাকরির কোন আশ্বাস দেননি। শুধু সেই শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়কে ব্যপারটা দেখতে বলেছেন। এখন ভোটের আদর্শ আচরণবিধি চলছে, তাই কোন কথা দিতে পারেননি মুখ্যমন্ত্রী।
আরও পড়ুনঃ বাবুল সুপ্রিয়র প্রার্থীপদ বাতিল করা হোক, নির্বাচন কমিশনে অভিষেক
এই পরিস্থিতিতে টানা ২৮ দিন কলকাতার রাজপথে বসে বাংলার ভবিষ্যতের শিক্ষক শিক্ষিকারা। আর এই আন্দোলন ভাঙতে পুলিশ পাঠিয়ে ভয় দেখাচ্ছে মমতার সরকার, অভিযোগ উঠেছে এমনটাও। তবে কলকাতা পুলিশের তরফ থেকে একথা অস্বীকার করা হয়। শেষ পর্যন্ত ভোটের আগে অনশন মঞ্চে আসতে বাধ্য হলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তবে মমতার মৌখিক আশ্বাস পেয়ে, স্কুল সার্ভিস কমিশনের বিরুদ্ধে চাকরিপ্রার্থীদের অনশন আন্দোলনে কি সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় সেটাই এখন দেখার।
আরও পড়ুনঃ বাবুলকে হারাতে ১ কোটি টাকার কাজের টোপ, বিতর্কিত ঘোষণা মেয়রের
আপনার মোবাইলে বা কম্পিউটারে The News বাংলা পড়তে লাইক করুন আমাদের ফেসবুক পেজ।