The News বাংলা, কলকাতা: এখনই রথ যাত্রার অনুমতি না পেলেও মুখ রক্ষা হল বাংলা বিজেপির। কলকাতা হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চে ফের আলো দেখল বিজেপির ‘রথ যাত্রা’। ‘আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নিতে হবে’, রাজ্যকে পরিষ্কার জানিয়ে দিন কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি বিশ্বনাথ সামাদ্দার-এর ডিভিশন বেঞ্চ। ফলে বাতিল হয়ে গেল, বিচারপতি তপোব্রত চক্রবর্তীর ‘রথ যাত্রা’ বন্ধ করার রায়।
আরও পড়ুন: কোচবিহারে ঢোকার আগেই নাইন এমএম পিস্তল সহ গ্রেফতার ছয়
‘১৪ই ডিসেম্বরের মধ্যে বিজেপির ‘রথ যাত্রা’র অনুমতি নিয়ে বিজেপিকে জানাতে হবে’, জানিয়ে দিল কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি বিশ্বনাথ সামাদ্দার-এর ডিভিশন বেঞ্চ। মুখ্যসচিব, স্বরাষ্ট্রসচিব, আইজি ও ডিজিকে নিজেরা বসে ও বিজেপি নেতাদের সঙ্গে বসে ‘রথ যাত্রা’র অনুমতি নিয়ে দেওয়া নিয়ে আলচনা করতে হবে বলে জানিয়ে দিল ডিভিশন বেঞ্চ।
আরও পড়ুনঃ ‘বাংলায় রথ যাত্রা হবেই’ মমতাকে হুঁশিয়ারি অমিত শাহের
এদিকে শুক্রবার, বাংলায় ‘রথ যাত্রা’ সভা বাতিল করেন বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি অমিত শাহ। ‘রথ যাত্রা’ নিয়ে একেবারে ব্যাকফুটে ছিল বাংলা বিজেপি। শেষ ক্ষীণ ভরসা ছিল কলকাতা হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চ। বিজেপির ‘রথ যাত্রা’ ফিনিক্স পাখির মত বেঁচে উঠবে না মমতার বুদ্ধির কাছে নতি স্বীকার করে নেবে সেটাই দেখার ছিল। এই রায়ে ফের বেঁচে উঠল বিজেপির ‘রথ যাত্রা’।
আরও পড়ুনঃ দেশের সব গোয়েন্দাদের টপকে সেরা লালবাজারের অফিসার
‘১৪ই ডিসেম্বরের মধ্যে বিজেপির ‘রথ যাত্রা’র অনুমতি নিয়ে বিজেপিকে জানাতে হবে’, জানিয়ে দিল কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি বিশ্বনাথ সামাদ্দার এর ডিভিশন বেঞ্চ। প্রধান বিচারপতি ছুটিতে থাকায় শুক্রবার সকালেই বিচারপতি বিশ্বনাথ সামাদ্দার এর ডিভিশন বেঞ্চে বিচারপতি তপোব্রত চক্রবর্তীর ‘রথ যাত্রা’ বন্ধ করার রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করে রাজ্য বিজেপি। বিচারপতি বিশ্বনাথ সামাদ্দার এর ডিভিশন বেঞ্চ ‘রথ যাত্রা’ আপিল মামলা গ্রহন করে।
আরও পড়ুন: মমতার অনুমতি নেই, মোদীর রথের দড়ি কলকাতা হাইকোর্টের হাতে
কলকাতা হাইকোর্টে সিঙ্গেল বেঞ্চে মমতার কাছে ‘গোহারা’ হেরে গিয়েছিল বিজেপি। রাজ্য সরকার না করে দেবার পরে বিজেপির ‘রথ যাত্রা’য় অনুমতি দেয় নি কলকাতা হাইকোর্টও। ফের একবার আদালতের লড়াইয়ে জিতেছিল মা মাটি মানুষের সরকার। আগামী ৯ জানুয়ারী তারিখ পর্যন্ত কোন ‘রথ যাত্রা’ বা ‘গণতন্ত্র বাঁচাও যাত্রা’ করা যাবে না বলেই রায় দিয়েছিল কলকাতা হাইকোর্ট। সেই রায় বাতিল হয়ে গেল। ১২ ডিসেম্বরের মধ্যে বিজেপির ‘রথ যাত্রা’র অনুমতি নিয়ে আলোচনা শেষ করার নির্দেশ দিল হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চ।
আরও পড়ুনঃ সপ্তশৃঙ্গর পর সপ্ত আগ্নেয়গিরি, বিশ্বরেকর্ডের দোরগোড়ায় বাঙালি
মমতা বন্দোপাধ্যায় সরকার অনুমতি দেয় নি। বৃহস্পতিবারই আদালতে রাজ্য সরকারের তরফ থেকে কোচবিহারে বিজেপির ‘রথ যাত্রা’য় পরিষ্কার না বলে দেওয়া হয়। নরেন্দ্র মোদীর ‘রথ যাত্রা’র অনুমতি পেতে বিজেপির শেষ ভরসা ছিল সেই কলকাতা হাইকোর্টই। বলাই যায়, বিজেপির রথের দড়ি ছিল কলকাতা হাইকোর্টের হাতে। সেই দড়ি আদালত তুলে দিয়েছিল রাজ্য সরকারের হাতেই। হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চ রথের দড়ি আবার নিজের হাতেই রাখল।
বিজেপির ‘রথ যাত্রা’ শুরু করার অনুমতি দেয় নি রাজ্য সরকার, বৃহস্পতিবারই জানিয়ে দেয় কলকাতা হাইকোর্টে। রাজ্যকে এই নিয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত জানানোর নির্দেশ দিয়েছিলেন বিচারপতি তপোব্রত চক্রবর্তী। রাজ্য সরকার না করে দেওয়ার পর সেই সিদ্ধান্তই বহাল রাখে আদালত। আগামী ৯ জানুয়ারি তারিখ পর্যন্ত কোন রথযাত্রা নয়, নির্দেশ আদালতের। বিচারপতি তপোব্রত চক্রবর্তীর এই রায় বাতিল হয়ে গেল। সেই দিক দিয়ে দেখলে আজ জয় পেল বিজেপি।
আরও পড়ুনঃ রথ যাত্রার আগেই দিলীপ ঘোষের গাড়িতে তৃণমূলের হামলা
এর ফলে, শুক্রবার ৭ তারিখ কোচবিহার থেকে বিজেপির ‘রথ যাত্রা’ বা ‘গণতন্ত্র বাঁচাও যাত্রা’ শুরু থমকে গেল। সেই যাত্রা ও সভা তারা শুরু করতে পারবে কিনা তার ফয়সালা হবে আবার ১৪ই ডিসেম্বরের পর। ফলে বিজেপিকে পুরো প্রোগ্রাম আবার নতুন করে সাজাতে হবে।
প্রথম থেকেই বিজেপির ‘রথযাত্রা’ বা ‘গণতন্ত্র বাঁচাও যাত্রা’র অনুমতি দেয়নি রাজ্য সরকার। আবার ‘রথযাত্রা’ করা যাবে না এমনটাও প্রথমে জানানো হয়নি রাজ্যের তরফে। তাই ‘রথযাত্রা’র বিষয়ে রাজ্য প্রশাসন ‘নীরব’ এই অভিযোগে কলকাতা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয় রাজ্য বিজেপি। বিজেপির তরফে প্রশাসনের নীরবতার অভিযোগে এবং এবিষয়ে আদালতের হস্তক্ষেপ চেয়ে মামলা দায়ের করেন রাজ্য বিজেপির সহ সভাপতি জয়প্রকাশ মজুমদার।
আরও পড়ুন: মমতার পদে ইস্তফা, বিজেপির ‘গনতন্ত্র বাঁচাও যাত্রা’য় কেপিপি সভাপতি
ঠিক ছিল, শুক্রবার ৭ ডিসেম্বর কোচবিহার থেকে কলকাতার উদ্দেশ্যে রওনা দেবে বিজেপির প্রথম রথ। দ্বিতীয় রথটি কাকদ্বীপ থেকে যাত্রা শুরু করবে ৯ তারিখ। তৃতীয় রথের যাত্রা তারাপীঠ থেকে শুরু হওয়ার ১৪ ডিসেম্বর। বিজেপি নেতৃত্বের দাবি ছিল, তিনটি রথের উদ্বোধনেই হাজির থাকবেন দলের সর্বভারতীয় সভাপতি অমিত শাহ। শুধু তাই নয় ‘রথযাত্রা’ বা ‘গণতন্ত্র বাঁচাও যাত্রা’ চলাকালীন বাংলার বিভিন্ন প্রান্তে বেশ কয়েকটি জনসভা করবেন স্বয়ং প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। তবে আদালতের এই রায়ের পর, কি করবেন বিজেপি নেতারা সেটাই এখন প্রশ্ন।
আরও পড়ুন: ‘গনতন্ত্র বাঁচাও যাত্রা’র মধ্যেই শিলিগুড়িতে প্রথম জনসভা নরেন্দ্র মোদীর
গোটা রাজ্যের নজর ছিল কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি বিশ্বনাথ সামাদ্দার এর ডিভিশন বেঞ্চে। এই রায়ে কিছুটা হলেও ঘুরে দাঁড়াতে পারল বিজেপি। ইতিমধ্যেই হতাশা গ্রাস করেছিল বিজেপি কর্মী সমর্থকদের। থমকে গিয়েছিল সব উত্তেজনা। অন্যদিকে লড়াই জেতার খুশিতেই ছিল তৃণমূল শিবির।
শুক্রবারের রায়ের পর ফের লড়াই শুরু হবে আবার ১৪ ডিসেম্বরের পর কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি বিশ্বনাথ সামাদ্দার এর ডিভিশন বেঞ্চেই। আপাতত থমকে গেল বিজেপির ‘রথ যাত্রা’। তবে, বৃহস্পতিবারের হারের পর শুক্রবারের রায় কিন্তু ম্যাচ আবার সমানে-সমানে এনে দিল। আদালত ‘রথ যাত্রা’ নিয়ে সিদ্ধান্ত নেবার ভার সেই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সরকারের উপরই দিল কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি বিশ্বনাথ সামাদ্দার এর ডিভিশন বেঞ্চ।