“প্রাক্তন সহকর্মীর কর্মকাণ্ডের জন্য লজ্জিত”, কলকাতার মেয়র তথা রাজ্যের মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম বুধবার জানান; “পার্থ যা করেছে, তাতে আমি লজ্জিত। আমি এই পার্থকে চিনি না”। নিজেদের ভাবমূর্তি স্বচ্ছ রাখতে ফিরহাদ হাকিম এও জানান, “তৃণমূল করি বলে এই না, যে আমরা সবাই চোর। মানুষের জন্য কাজ করার পরও এসব শুনতে হচ্ছে। সবটাই চক্রান্ত। অপমান করা হচ্ছে। উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ভাবে করা হচ্ছে। আমরা আয়কর দিই। যদি কোনও গোলমাল থাকে, আয়কর দফতর বলবে”।
আরও পড়ুনঃ শিক্ষকের চাকরি চুরি কাণ্ডে, গ্রেফতার স্কুল সার্ভিস কমিশনের দুই প্রাক্তন উপদেষ্টা
কিন্তু তৃণমূল মন্ত্রীদের এই সাংবাদিক সম্মেলনের পরে বিরোধীদের প্রশ্ন, তাহলে কি তৃণমূল মেনে নিচ্ছে যে শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় জড়িত পার্থ চট্টোপাধ্যায়? স্বাভাবিক-ভাবেই কলকাতার মেয়রের মন্তব্য শোরগোল ফেলে দিয়েছে বঙ্গ রাজনীতিতে। ‘পার্থ চোর’ স্বীকার করে নিল তৃণমূল?
]]>সম্প্রতি চাকরি চুরি দুর্নীতি-কাণ্ডে গ্রেফতার হয়েছে; প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় ও তার বান্ধবী অর্পিতা। বর্তমানে জেল হেফাজতে রয়েছে তারা। এরই পরিস্থিতির মধ্যে শাসক দলের একাধিক নেতার সম্পত্তি নিয়ে; নতুন করে প্রশ্ন উঠল কলকাতা হাইকোর্টে। সোমবার একটি জনস্বার্থ মামলায় কেন্দ্রীয় সংস্থা এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেটকে; পার্টি করার নির্দেশ দিল আদালত। প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চ, সোমবার শুনানিতে; ইডি-কেও পার্টি করার নির্দেশ দিয়েছে। মামলায় মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম, সাংসদ অর্জুন সিং, বিধায়ক মদন মিত্র-সহ; মোট ১৯ জন তৃণমূল নেতার নাম রয়েছে।
আরও পড়ুনঃ জেলের খাটে উঠলেন প্রভাবশালী পার্থ, মেঝেতেই পরে রইলেন ঘনিষ্ঠ অর্পিতা
কোন কোন তৃণমূল নেতার নাম রয়েছে, এই তালিকায়? এরা হলেন, কলকাতা পুরসভার প্রাক্তন মেয়র শোভন চট্টোপাধ্যায়া; বর্তমান মেয়র ফিরহাদ হাকিম; জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক; মলয় ঘটক; ব্রাত্য বসু; অর্জুন সিং; শিলিগুড়ি মেয়র গৌতম দেব; ইকবাল আহমেদ; স্বর্ণকমল সাহা; অরূপ রায়; জাভেদ খান; অমিত মিত্র; আব্দুর রজ্জাক মোল্লা; রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়; শিউলি সাহা; সব্যসাচী দত্ত; বিধানসভার স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায় এবং সুব্রত মুখোপাধ্যায় ও সাধন পাণ্ডে। শেষ দুজন তৃণমূল নেতা; ইতিমধ্যেই প্রয়াত হয়েছেন।
আরও পড়ুনঃ পার্থের পরে কি মমতা, খুশিতে ‘ডগমগ’ কুণালের মুখ বন্ধ করল তৃণমূল
বিপ্লব চৌধুরী নামে এক ব্যক্তি; ২০১৭ সালে এই জনস্বার্থ মামলা করেন। মামলায় বলা হয়েছে, নির্বাচন কমিশন থেকে পাওয়া নেতা-মন্ত্রীদের তথ্য খতিয়ে দেখলে বোঝা যাবে; বছরের পর বছর কিভাবে সম্পত্তি বেড়েছে তাদের। এমনকি শাসকদলের একাধিক নেতাদের, ঘনিষ্ঠ নিরাপত্তারক্ষী-দেরও; সম্পত্তি বৃদ্ধি পেয়েছে আকাশছোঁয়া। কলকাতা হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি প্রকাশ শ্রীবাস্তব ও বিচারপতি রাজর্ষি ভরদ্বাজের ডিভিশন বেঞ্চ; এই মামলা গ্রহণ করেন।
পাশাপাশি আর একটি মামলা হয়েছিল মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ভ্রাতৃবধূ; কাজরী বন্দ্যোপাধ্যায়ের সম্পত্তি নিয়ে। তিনি একজন গৃহবধূ হওয়া সত্ত্বেও, কীভাবে তাঁর নামে পাঁচ-কোটি টাকার সম্পত্তি হল, তা নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে।
]]>বাংলা বিধানসভা নির্বাচনের সময়, বিজেপির জনপ্রিয় শ্লোগান ছিল; “আব কি বার, দোশো পার”। কিন্তু বিধানসভার নির্বাচনের রেজাল্টের পরে; বাংলা নিয়ে বিজেপির মোহ ভঙ্গ হয়েছিল। একশোর গণ্ডিও পার করতে পারেনি বিজেপি। এবারে ২০২৪ লোকসভা নির্বাচনে, বিজেপি বাংলা থেকে অন্তত ২৫টি আসন পাবে বলে; দলীয় কর্মীদের উৎসাহিত করছেন, বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার। এই প্রসঙ্গেই সুকান্ত মজুমদারকে তোপ দেগে ফিরহাদের মন্তব্য; “বিজেপি যদি ২৫টি আসন না পায়; তাহলে রাজনীতি ছাড়তে হবে সুকান্তকে”।
আরও পড়ুনঃ বিতর্কিত মন্তব্যের জের, নূপুর শর্মার বিরুদ্ধে ‘লুকআউট নোটিশ’ জারি কলকাতা পুলিশের
শনিবার কলকাতা পুরসভায় ‘টক টু মেয়র’ অনুষ্ঠান ছিল। সেই অনুষ্ঠানেই ফিরহাদের বলেন; এবার বিজেপি শূন্য পাবে; লিখে রাখুন। আগেরবার ধুয়ো তুলে কিছু আসন পেলেও; এবার বিজেপি একটা আসনও পাবে না বলে দাবি ফিরহাদ হাকিমের। ২০১৯ এর লোকসভা নির্বাচনে রেকর্ড ১৮টি আসন; বাংলা থেকে জেতে গেরুয়া শিবির।
আরও পড়ুনঃ মা’ওবা’দীদের নামে হু’মকি চিঠি দিয়ে, টাকা আদায় ‘খোদ’ রাজ্য পুলিশের
এদিন ফিরহাদের দাবি; “মানুষ বিজেপিকে আর বিশ্বাস করে না”। এরপরই ফিরহাদের চ্যালেঞ্জ, “সুকান্তবাবু লিখে দিক বিজেপি যদি ২৫ আসন না পায়; তাহলে উনি কী করবেন। লিখে দিক, উনি রাজনীতি ছেড়ে দেবেন। কান ধরে ওঠবোস করবেন। আমি তো বলছি, বিজেপি বাংলায় ২৫টি আসন পেলে; কান ধরে ওঠবোস করব”। এর আগেও তৃণমূলের অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় ও অনুব্রত মণ্ডল; এইরকম ভোটের চ্যালেঞ্জ নিয়ে হেরে গিয়েছিলেন; কিন্তু দাবি অনুযায়ী কথা রাখেননি।
]]>মেটিয়াবুরুজের একটি নর্দমা থেকে; পোলিওর জীবাণু পাওয়া গিয়েছে। তার ফলে স্বাভাবিকভাবেই উদ্বেগে; রাজ্য স্বাস্থ্য দফতর। শিশুদের উপর বিশেষ নজরদারির নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। ১১ বছর পর ফের কলকাতায় মিলল; এই পোলিওর জীবাণু। মে মাসে মেটিয়াবুরুজের একটি নর্দমা থেকে; নমুনা সংগ্রহ করা হয় স্বাস্থ্য দফতরের তরফে। সেটি পরীক্ষা করে দেখা যায়; ওই নমুনায় পোলিও ভাইরাস রয়েছে। ১৫ নম্বর বরোয় মেটিয়াবুরুজ এলাকায়; একটি নর্দমার জলের নমুনায় পোলিও-র জীবাণু পাওয়া গিয়েছে।
আরও পড়ুন; করোনা নেই, বাধ্যতামূলক কোভিড টেস্টের নামে মানুষকে লুটছে বেসরকারি হাসপাতাল
এরপর স্বাস্থ্য দফতরের তরফে, গত ২৬ মে; স্বাস্থ্যভবনে ডাকা হয় একটি বিশেষ বৈঠক। সেখানে ইউনিসেফ ও বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার পূর্বাঞ্চলীয় প্রতিনিধিরা ছিলেন; সেখানে পোলিও ভাইরাস নিয়ে আলোচনা করা হয়। রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কম থাকা শিশুদের উপর; বিশেষ নজরদারি চালানোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে স্বাস্থ্য দফতরের তরফে।
আরও পড়ুন; দায় কার, আদালতের রায়ে স্কুল শিক্ষিকা বরখাস্ত হতেই বিয়ে ভেঙে পালাল প্রেমিক
বৈঠকে মেটিয়াবুরুজ এলাকায় বিশেষ ‘সার্ভেল্যান্স’ চালানো, অর্থাৎ বিশেষ নজরদারির নির্দেশ দিয়েছেন; স্বাস্থ্য দফতরের অধিকর্তা সিদ্ধার্থ নিয়োগী। সার্ভেল্যান্স অর্থ, রুটিন টিকাকরণে আরও জোর দেওয়া; খোলা জায়গায় শৌচকর্ম আটকানো; বাড়ি-বাড়ি গিয়ে কোথাও জন্মগত-ভাবে রুগ্ন বা যার রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কম; এমন শিশু আছে কি না, তা দেখা। সেরকম কাউকে পেলে, তাকে পরীক্ষা করা জরুরি; কারণ, এদের পোলিও ভাইরাস বেশি আক্রমণ করে।
রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কম থাকা শিশুদের উপর, মেটিয়াবুরুজ এলাকায় প্রকাশ্যে শৌচকর্মের ক্ষেত্রেও; নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে। এছাড়া পুরসভার কর্মীদের, বাড়ি বাড়ি ঘুরে পোলিও টিকাকরণের গুরুত্ব; বোঝানোর কথাও বলা হয়েছে।
]]>হাওড়ার বিভিন্ন দোকানে লুট’পাট ও অগ্নি সংযোগের ঘটনা ঘটেছে। অনেক গাড়িতে আগুন লাগিয়ে দেওয়া হয়েছে। হাওড়া গ্রামীণে বিজেপির একটি পার্টি অফিস ও দাঁড়িয়ে থাকা গাড়িতে; আগুন লাগিয়ে সম্পূর্ণ পু’ড়িয়ে দেওয়া হয়। জাতীয় সড়ক অবরোধের পাশাপাশি, হাওড়ার বিভিন্ন জায়গায় ট্রেন অবরোধ করেছেন; মুস’লিম সম্প্র’দায়ের মানুষ।
আরও পড়ুনঃ বাংলার সামান্য পুলিশ কনস্টেবলের ফ্লাটে কেজি কেজি সোনা, চক্ষু চড়কগাছ গোয়েন্দাদের
হাওড়া থেকে ইতিমধ্যেই অনেক ট্রেন বাতিল করা হয়েছে। হাওড়ার বিভিন্ন এলাকায়; মানুষ আত’ঙ্কে কাঁপ’ছেন। আজও জাতীয় সড়কে হাজার হাজার গাড়ি দাঁড়িয়ে; আটকে পড়েছেন অসংখ্য মানুষ।
বৃহস্পতিবার ডোমজুড়ে প্রায় ১১ ঘণ্টা; জাতীয় সড়ক অবরোধ করা হয়েছিল। এতে ব্যাপক ভো’গান্তি হয়েছিল; সাধারণ মানুষের। ফের এদিন হাওড়ার বিভিন্ন এলাকায়; ৬ নম্বর জাতীয় সড়কে অবরোধ শুরু হয়েছে। পয়’গম্বর হজ’রত মহ’ম্মদের বিরুদ্ধে, বিজেপি নেত্রী নূপুর শর্মার আপত্তিকর ‘সত্য’ মন্তব্য করার প্রতিবাদ জানিয়ে; এদিনও রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে অ’শান্তি দানা বেঁধেছে।
আরও পড়ুনঃ একই স্কুলের ২২ জন উচ্চ মাধ্যমিকের মেধা তালিকায়, হোম সেন্টারের ফসল
মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও পুরমন্ত্রী কলকাতার মেয়র ফিরহাদ হাকিমের অনুরোধ; কানেই তুলল না সংখ্যা’লঘু সম্প্র’দায়ের মানুষজন। যার জেরে গতকালের পর; আজও রাস্তায় ভুগ’ছেন হাজার হাজার মানুষ।
এদিকে আজই রাজ্যের আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে; রাজ্যের মুখ্যসচিবের কাছে রিপোর্ট তলব করলেন রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড়। রাজ্যপালের সই করা ওই চিঠিতে উল্লেখ করা হয়েছে; গতকাল থেকে রাজ্যের উদ্বেগজনক আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি; তারই পরিপ্রেক্ষিতে শুক্রবার রাত ১০টার মধ্যে মুখ্যসচিবের কাছ থেকে; সশরীরে উপস্থিত থেকে রিপোর্ট চাওয়া হচ্ছে। শান্তি স্থাপনের জন্য সবরকম উদ্যোগ নেওয়ার জন্য বলা হয়েছে; রাজ্যপালের তরফ থেকে।
]]>অনুব্রত মণ্ডলের গাড়িতে লালবাতি লাগানো নিয়ে; শুক্রবার কলকাতা হাইকোর্টে মামলা করেন বিজেপি নেতা ও আইনজীবী তরুণজ্যোতি তিওয়ারি। তিনি প্রশ্ন তোলেন, “গত ৫ এপ্রিল লালবাতি লাগানো গাড়ি করে; বোলপুর থেকে কলকাতা এসেছিলেন অনুব্রত মণ্ডল। কিন্তু লালবাতি লাগানোর এক্তিয়ার রয়েছে; এমন কোনও পদে নেই তিনি। তাহলে কী করে লালবাতি লাগানো গাড়ি চড়ে; এতটা রাস্তা এলেন তিনি? কেনই বা চারটে জেলার পুলিশ; তাঁর বিরুদ্ধে কোনও ব্যবস্থা নিল না?”
হাইকোর্টে অনুব্রত মণ্ডলের বিরুদ্ধে, বিজেপি নেতা ও আইনজীবী তরুণজ্যোতি তিওয়ারি, জনস্বার্থ মামলা করার পরই; এদিন রাজ্যের পরিবহণমন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম সাফ জানিয়ে দিয়েছেন; “অনুব্রত-র গাড়িতে লালবাতি লাগানো ঠিক হয়নি; অনুব্রতর গাড়ির লালবাতি খুলতে হবে; গাড়ি বাজেয়াপ্ত করতে বলেছি”।
আরও পড়ুনঃ দক্ষিণ এশিয়ার সবথেকে বড় ক্যানসার কেয়ার নেটওয়ার্কের উদ্বোধনে নরেন্দ্র মোদী ও রতন টাটা
পরিবহণমন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম বলেন; “কারা লালবাতি-নীলবাতি গাড়ি চড়তে পারেন; তার নির্দিষ্ট তালিকা আমরা প্রকাশ করেছি। পুলিশ প্রশাসনকে; কড়া হতে বলেছি। নীলবাতি-লালবাতির অপব্যবহার হচ্ছে। অনধিকার যারা লাল বা নীলবাতি ব্যবহার করছেন; তাদেরকে শুধু বাতি খুললেই হবে না; পুলিশকে বলেছি গাড়িটিও বাজেয়াপ্ত করতে। মুখ্যমন্ত্রী নিজে একথা বলেছেন। অনুব্রত লাল বা নীলবাতি ব্যবহার করতে পারেন না; ওটা খুলে দেব”।
কেন্দ্রীয় সড়ক-পরিবহণ মন্ত্রকের নির্দেশে, কেউ ব্যক্তিগত গাড়িতে লালবাতি লাগাতে পারেন না। মন্ত্রী, বিধায়ক, সাংসদ-রাও নন। অ্যাম্বুলেন্স এবং দমকলের গাড়িতে; নীলবাতি লাগানোর অনুমতি রয়েছে। সেক্ষেত্রে দীর্ঘদিন ধরে অনুব্রত, লালবাতি লাগানো গাড়ি কি করে চড়লেন?
বিজেপি নেতা-আইনজীবী তরুণজ্যোতি তিওয়ারি প্রশ্ন তুলেছেন; “কেন শাস্তি হবে না অনুব্রত মণ্ডলের? কেন চার জেলার পুলিশ দেখেও; কিছুই বলল না? ছাড় কি শুধুই তৃণমূল নেতাদের জন্য? সাধারণ কোন মানুষ এটা করলে; পুলিশ কি করত?” সব মিলিয়ে গাড়িতে লালবাতি লাগিয়ে সমস্যায় অনুব্রত মণ্ডল। পাশে দাঁড়াল না রাজ্য প্রশাসন, এমনকি নিজের দল তৃণমূলও।
]]>তাঁর আমলেই কলকাতা পুরসভায় শুরু হয়েছে ‘টক-টু-মেয়র’ অনুষ্ঠান। প্রতি শনিবার এই অনুষ্ঠানের মাধ্যমে; সরাসরি শহরবাসীদের অভাব-অভিযোগ শোনেন মেয়র ফিরহাদ হাকিম। প্রয়োজনীয় পদক্ষেপও করেন। টক টু মেয়র অনুষ্ঠানে; কলকাতার সমস্ত সাধারণ মানুষের সঙ্গে কথা বলেন মেয়র। সেই অনুষ্ঠানে ৬৯ নম্বর ওয়ার্ডের এক বাসিন্দা; তাঁকে অবৈধ নির্মাণের প্রসঙ্গে প্রশ্ন করেছিলেন। আর তারপরই মেয়রের বিস্ফোরক দাবি; “টাকা খায় পুলিশ আর বিল্ডিং ডিপার্টমেন্ট; আর বদনাম হয় কাউন্সিলরের”। এভাবে নিজেদের কাউন্সিলরকে ক্লিনচিট দিয়ে; পুলিশের ঘাড়ে দোষ চাপালেন মেয়র।
এদিন মেয়র বলেন, “কাউন্সিলররা প্রশাসনের অংশ নন; ফলে কোনও কাউন্সিলরের কাছে পাঠানো হয় না যে, তাঁর এলাকায় কোনও আইনি আর কোন বেআইনি বিল্ডিং তৈরি হচ্ছে। যদি বেআইনিভাবে প্ল্যান অনুমোদন করা হয়, তাহলে সেটা প্রশাসন করে; আমাদের বিল্ডিং বিভাগ করে। এখন যদি সেটা বেআইনি হয়, তাহলে ধরে নেব; বিল্ডিং বিভাগের গাফিলতি কিংবা আন্ডার টেবিল! যদি অভিযোগ জানানোর পর থানা ব্যবস্থা না নেয়; তাহলে সেটাও তাই”। তাঁর আরও বক্তব্য, “অকারণে কাউন্সিলদের উপর বদনাম এসে পড়ে; কাউন্সিলররা তো জানেনই না, কোনটা আইনি আর কোনও বেআইনি”।
এরপর ফোন করেছিলেন যিনি, তাঁকে মেয়র বলেন; “ঠিক আছে আমরা দেখছি; আমি অ্যাকশন নিয়ে ফোনে জানিয়ে দেব; কাজ এখন বন্ধ আছে; আপনাকে জানিয়ে দেব”। তবে বিরোধীদের অভিযোগ কলকাতার বিভিন্ন প্রান্তে অবৈধ বিল্ডিং নির্মাণের অভিযোগ ওঠে; তবে এবার অত্যন্ত সুকৌশলে মেয়র নিজেই কাউন্সিলরকে বাঁচিয়ে পুলিশ ও বিল্ডিং বিভাগের ঘাড়ে সরাসরি টাকা খাওয়ার অভিযোগ তুলে দিলেন। কিন্তু স্থানীয় কাউন্সিলররা সরাসরি এই অবৈধ চক্রের সঙ্গে যুক্ত থাকেন বলেই অভিযোগ।
বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার জানান; “আমার যে অভিযোগগুলি করেছি; সেই অভিযোগগুলি স্বীকার করে নিলেন মেয়র। তবে, তৃণমূল কাউন্সিলরদের বাঁচানোর চেষ্টা করছেন; বেআইনি নির্মাণে তৃণমূল কাউন্সিলররাও কাটমানি খান”।
]]>সোমবার তৃণমূলের প্রাক্তন দক্ষিণ দিনাজপুর জেলা সভাপতি; মমতার বহুদিনের সঙ্গী; বিখ্যাত আইনজীবী বিপ্লব মিত্র যোগ দিলেন পদ্ম শিবিরে। কালচিনির বিধায়ক উইলসন চম্প্রামারিও; এদিন যোগ দিলেন গেরুয়া শিবিরে। দক্ষিণ দিনাজপুর জেলা পরিষদও তৃণমূলের হাত থেকে; বেদখল হয়ে গেল বিজেপির ঝুলিতে। এরপরেই কলকাতায় ফিরহাদ হাকিম বলেন; “যারা গেলেন তারা ধান্দাবাজ”।
আরও পড়ুন রাজনৈতিক বন্দি হিসাবে, জেলে থেকেই নেট পরীক্ষা দেবেন দীপক কুমার
অর্পিতা ঘোষকে বালুরঘাটের প্রার্থী করায়; এমনিতেই ক্ষুব্ধ ছিলেন বিপ্লব মিত্র অনুগামীরা। তারপর সম্প্রতি বিপ্লব মিত্রকে সরিয়ে সেই অর্পিতা ঘোষকেই দক্ষিণ দিনাজপুর জেলা সভাপতি করায়, দল ছাড়ার সিদ্ধান্ত নিয়েই নেন বিপ্লব মিত্র ও দক্ষিণ দিনাজপুর জেলাপরিষদের অধিকাংশ কর্মাধ্যক্ষ ও সদস্যরা। গঙ্গারামপুর পুরসভার বেশ কয়েকজন কাউন্সিলরও বিজেপিতে যোগ দেন।
জেলার রাজনীতির ক্ষেত্রে এটা বড়সড় ভাঙন; বলেই মনে করছে রাজনৈতিক মহল। বিশেষ করে বিপ্লব মিত্রের দলবদলটা মমতা ও তৃণমূলের পক্ষে বড়সড় ধাক্কা; বলেই মনে করছে তৃণমূলেরই একাংশ। তবে মমতার দীর্ঘদিনের সঙ্গী বিপ্লব মিত্রকে ধান্দাবাজ বলায়; ফিরহাদ হাকিমের সমালোচনা করেছে বিজেপি।
আরও পড়ুন ধর্ষকদের দুপায়ে গুলি করে আইপিএস অজয় পাল শর্মা দেশের হিরো
১৮ সদস্যের দক্ষিণ দিনাজপুর জেলাপরিষদ। সোমবার দিল্লিতে ১৮ জন সদস্যের মধ্যে; ১০ জনই যোগ দেন বিজেপিতে। আরও ৪ জনের যোগদানের সম্ভাবনার কথা বলেন মুকুল রায়। জেলাপরিষদের শিক্ষা কর্মাধ্যক্ষ প্রবীর রায়; সহ সভাধিপতি ললিতা টিগগা; শ্যামল সাহা ও বিশ্বনাথ পাহান ছাড়া; সবাই এদিন দিল্লিতে গিয়ে যোগ দিলেন গেরুয়া শিবিরে। জেলা সভাধিপতি লিপিকা রায়ও; ওইদিন বিজেপিতে যোগ দিয়েছেন।
দক্ষিণ দিনাজপুর জেলাপরিষদের ১০ জন সদস্য; ও গঙ্গারামপুর পুরসভার কাউন্সিলরদের একাংশ; এদিন বিজেপিতে যোগ দিয়েছেন। লোকসভা নির্বাচনে বালুরঘাট কেন্দ্রের তৃণমূলের প্রার্থী অর্পিতা ঘোষ; এই ঘোষণার পর থেকেই বিপ্লব মিত্রর দলবদলের সম্ভাবনা নিয়ে; রাজনৈতিক মহলে শুরু হয়েছিল জোর গুঞ্জন। সোমবার সেই ঘটনা সত্যি হল।
]]>আরও পড়ুন: ইস্তফার জেরে ডাক্তার শূন্য রাজ্যের সব সরকারি হাসপাতাল
ফেসবুকে বুধবার কলকাতার মহানাগরিক ফিরহাদ লিখেছেন; “ডাক্তারবাবুরা সাধারণ মানুষের কাছে ভগবান। সেই ভগবান যদি কাজ বন্ধ রাখেন; আমরা সাধারণ মানুষ বাঁচব কী করে! যাঁরা ডাক্তারবাবুদের গায়ে হাত দিয়েছেন; চিকিৎসায় গাফিলতি সন্দেহ করলে তাঁরা নির্দিষ্ট উপায় অবলম্বন করতে পারতেন। তা না করে যাঁরা ডাক্তারবাবুদের পেটান; তাঁরা গণশত্রু এবং আদালতের কাছে দাবি থাকবে; তাঁদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দিক; যাতে ভবিষ্যতে ডাক্তারবাবুদের গায়ে কেউ হাত দেওয়ার সাহস না পায়”।
আরও পড়ুন: EXCLUSIVE: পশ্চিমবঙ্গে জঙ্গি হামলার আশঙ্কা, কাগজে বিজ্ঞাপন দিয়ে পুলিশের সতর্কবার্তা
এর আগে ডাক্তারদের সমর্থনে মিছিলে হাঁটেন; মুখ্যমন্ত্রী মমতার ভাইপো। এবার ডাক্তারদের আক্রমণকারীদের ‘গণশত্রু’ আখ্যা দিয়ে; শাস্তি চাইলেন মেয়র ও মন্ত্রী ববি হাকিম! তাহলে কি মুখ্যমন্ত্রী মমতার বিরোধিতা করলেন মেয়র? উঠে গেছে প্রশ্ন।
আরও পড়ুন: জয় শ্রী রাম শ্লোগানের ভয়ে, হেলিকপ্টারে কাঁচড়াপাড়া গেলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়
এখন চর্চার কেন্দ্রে ছিলেন মূলত দুই জন; স্বয়ং মুখ্যমন্ত্রীর ভাইপো আবেশ বন্দ্যোপাধ্যায় এবং কলকাতার মেয়র ফিরহাদ হাকিমের কন্যা শাব্বা। এবার সেই দলে পা মেলালেন; রাজ্যের মন্ত্রী ও মেয়র ফিরহাদ হাকিমও। আন্দোলনকারী চিকিৎসকদের সমর্থনে; একটি মিছিলে আবেশের ছবি নিয়ে বৃহস্পতিবার চর্চা শুরু হয়। সংশ্লিষ্ট সূত্রের খবর, আবেশ কেপিসি মেডিকেল কলেজ এবং হাসপাতালের ছাত্রনেতা। ফলে ছাত্রনেতা হিসাবেই তিনি মিছিলে হেঁটেছেন।
আরও পড়ুন: শয়ে শয়ে ডাক্তারের গণ ইস্তফা, তালা ঝুলবে রাজ্যের সব সরকারি হাসপাতালে
ওই একই হাসপাতালের চিকিৎসক; ববি কন্যা শাব্বা হাকিমও। তিনিও ফেসবুকে ক্ষোভ উগরে দিয়েছেন। এবার শুক্রবার মেয়র ববি হাকিমও; ফেসবুক পোস্টে ডাক্তারদের পাশে দাঁড়িয়ে অভিযুক্তদের গণশত্রু বলে মন্তব্য করলেন। তাহলে কি মেয়ের পাশে দাঁড়িয়ে; মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরোধিতা করলেন মেয়র? উঠে গেল প্রশ্ন।
]]>খড়গপুরের উপকূলবর্তী এলাকায় গিয়ে; গত ২ দিন থেকে নিজে ফণীর পরিস্থিতি মনিটরিং করছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। মানুষকে উদ্বেগ না-করে; সতর্ক থাকার পরামর্শ দিয়েছেন তিনি। ৪৮ ঘণ্টার জন্য যাবতীয় রাজনৈতিক কর্মসুচি তিনি বাতিল করেছেন। আর এতেই মুগ্ধ রাজ্যবাসী।
আরও পড়ুনঃ কলকাতাকে ফণীর হাত থেকে বাঁচাল কলকাতা নিজেই, রহস্য গরম
টুইটারে মমতা জানিয়েছিলেন, দুর্যোগের পরিস্থিতিতে সব কর্মসুচি তিনি বাতিল করেছেন। খোলা হয়েছে ২৪*৭ মনিটরিং সেল। খড়গপুরে থেকে নিজে মনিটরিং করছেন তিনি। প্রশাসন পরিস্থিতি মোকাবিলায় যাবতীয় ব্যবস্থা; নিয়ে প্রস্তুত থেকে সামনে থেকে লড়াইটা করলেন তিনি। আগে কোনদিন কোন মুখ্যমন্ত্রীকে; স্পটে গিয়ে সামনা সামনি লড়াই করতে দেখা যায়নি।
ফণীর আতঙ্কে কলকাতার মানুষ; নিজেদের ঘরবন্দি করে ফেলেছিলেন। তবে তখনই বিনিদ্র রজনী কাটালেন; কলকাতার মেয়র ফিরহাদ হাকিম। শুক্রবার সারারাত পুরসভার দফতরে বসে পরিস্থিতির ওপর নজর রাখলেন তিনি। সেইসঙ্গে দুর্যোগ মাথায় নিয়ে শহরের একপ্রাপ্ত থেকে অন্যপ্রান্ত ছুটে বেড়ালেন।
আরও পড়ুনঃ বাংলায় গতিহারা ফণী, হুগলি, বর্ধমান নদিয়া হয়ে ভোরে প্রবেশ করল বাংলাদেশে
খতিয়ে দেখলেন প্রশাসনিক প্রস্তুতি। শেষ পর্যন্ত কলকাতার দূর থেকেই ফনী বর্ধমান হয়ে বাংলাদেশে চলে যাওয়ায় স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলেছে প্রশাসন। মেয়রের এই তৎপরতা অব্যহত ছিল মধ্যরাতেও। একের পর এক বোরো অফিসে ছুটে বেড়ান তিনি। সবকিছু ঠিকঠাক আছে কি না; সে বিষয়ে খোঁজখবর নেন। পরে পৌঁছে যান পুরসভা ভবনে। সেখান থেকে খোঁজখবর নিতে থাকেন সারারাত ধরেই।
এমনকি সাধারণ মানুষ কোনও সমস্যায় পড়লে; সহায়তার হাত বাড়িয়ে দেওয়ার জন্য নিজের হোয়াটসঅ্যাপ নম্বর দিয়েছিলেন মেয়র। হোয়াটসঅ্যাপে কী খবর আসছে; প্রতি মুহূর্তে নজর রাখছিলেন তিনি। এর মধ্যেই অনেক রাতে খড়গপুর থেকে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়; বেশ কয়েকবার শহরের পরিস্থিতি সম্পর্কে খোঁজ খবর নেন বলে স্বয়ং মেয়র জানিয়েছেন। মেয়রের সঙ্গে কাঁধে কাধ মিলিয়ে সারারাত লড়লেন; বোরো চেয়ারম্যান ও কাউন্সিলাররাও।
আরও পড়ুনঃ কলকাতায় নিউ সেক্রেটারিয়েট বিল্ডিংয়ের ছাদে ফুটবলটি এখন ফণীর খবর দিচ্ছে
মমতা ও মেয়রের এই রাতজাগা লড়াইয়ে মুগ্ধ বাংলা। বিশেষ করে পূর্ব মেদিনীপুরে গিয়ে ঝড়ের মনিটরিং করার উদ্যোগ নিয়ে; মুখ্যমন্ত্রী অসাধারণ দৃষ্টান্তস্থাপন করলেন বলেই মনে করছে বাংলার আমজনতা।
]]>