শিক্ষক নিয়োগে দুর্নীতিতে, রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় গ্রেফতার হওয়ার পরেই; চরম অস্বস্তিতে তৃণমূল শিবির। এরপরে রাজ্যের বিভিন্ন জায়গা থেকে তৃণমূল নেতাদের বিরুদ্ধে; চাকরির আশ্বাস দিয়ে টাকা নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। এবার চাকরির আশ্বাস দিয়ে বহু মানুষের কাছ থেকে টাকা নেওয়ার অভিযোগ উঠল; পূর্ব মেদিনীপুরের ভগবানপুরের দাপটে তৃণমূল নেতা শিবশঙ্কর নায়েকের বিরুদ্ধে। আর এই অভিযোগে তৃণমূল নেতাকে না পেয়ে; তার স্ত্রী ও ছেলেকে বেধড়ক মারধর করলেন চাকরিপ্রার্থীরা।
আরও পড়ুন; বান্ধবীর ফ্লাটে কোটি টাকা, জেলের মেঝেতে শুয়ে রাত কাটছে পার্থ’র
পূর্ব মেদিনীপুরের ভগবানপুর বিধানসভা এলাকার, ভগবানপুর ১ নম্বর ব্লকের; কোটবার গ্রাম পঞ্চায়েত। এই এলাকাতেই থাকেন পঞ্চায়েতের প্রাক্তন বিদ্যুৎ কর্মাধ্যক্ষ শিবশংকর নায়েক। অভিযোগ, চাকরি দেওয়ার নাম করে; গ্রামবাসীদের কাছ থেকে কয়েক লক্ষ টাকা তিনি আদায় করেছেন। রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় ঘনিষ্ঠ; নান্টু প্রধানের মূল এজেন্ট ছিলেন শিবশংকর। শনিবার তার বাড়িতে চড়াও হয়ে, টাকা আদায়ের জন্য; দফায় দফায় বিক্ষোভ দেখালেন চাকরিপ্রার্থীদের পরিবারের সদস্যরা।
তাঁকে বাড়িতে না পেয়ে স্ত্রী, ছেলের উপরই আছড়ে পড়ল রোষ। তাদের গাছে বেঁধে মারধর করা হয় বলে অভিযোগ। দীপক মাইতি নামে এক ব্যক্তি জানান, তিনি তার ছোট ভাইয়ের গ্রুপ ডিতে চাকরির জন্য; ওই তৃণমূল নেতা-কে ৮ লক্ষ টাকা নিয়েছিলেন। পরে দু-লক্ষ টাকা তিনি ফেরত দিয়েছেন। কিন্তু, তারপর চাকরি তো দূরের কথা; টাকাও ফেরত দেওয়া হয়নি। এমনকি থানায় গেলেও অভিযোগ নেওয়া হয়নি।
ওই তৃণমূল নেতার স্ত্রীর দাবি, যদি তার স্বামী টাকা নিয়ে থাকে; তাহলে যেমন তিনি দোষী তেমনি যারা টাকা দিয়েছে তারাও দোষী। এদিকে প্রতারিতদের দাবি, অবিলম্বে শিবশংকরকে গ্রেফতার করে; সবার টাকা ফেরানো হোক।
]]>কুণাল ঘোষের পর এবার; ষড়যন্ত্রের তত্ত্ব নিয়ে পার্থকে একহাত নিলেন তাপস রায়। শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতি মামলায়; গ্রেফতার হয়েছেন পার্থ চট্টোপাধ্যায়। তাঁর ঘনিষ্ঠ অর্পিতা মুখোপাধ্যায়ের বাড়ি থেকে; প্রায় ৫০ কোটি টাকা নগদ টাকা উদ্ধার হয়েছে। উদ্ধার হয়েছে কোটি কোটি টাকার গহনা; দুজনের কোটি কোটি টাকার যৌথ সম্পত্তির দলিল। তারপর থেকে তাঁকে নিয়ে রাজ্য রাজনীতিতে টানাপোড়েন চলছেই। সবচেয়ে বেশি কথা শোনাচ্ছেন; তৃণমূল নেতারাই।
তিনি ষড়যন্ত্রের শিকার বলে, সংবাদমাধ্যমের ক্যামেরার সামনে; বলতে শোনা গিয়েছে পার্থকে। গত সপ্তাহেই তাঁকে লক্ষ্য করে এক সাংবাদিক প্রশ্ন ছুড়ে দেন; “পার্থদা, আপনি কি ষড়যন্ত্রের শিকার?” পার্থর জবাবে বলেন, “ষড়যন্ত্রের শিকার, সব পরে জানতে পারবেন”। কে তাঁর বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করছেন; তা আর খোলসা করতে পারেননি পার্থ। তবে সেই নিয়ে নানা তত্ত্ব সামনে এসেছে।
আরও পড়ুন; অর্পিতা-কে দেখিয়ে ইডির প্রশ্ন; “আপনি একে চেনেন”? পার্থর উত্তরে চমক
এমন পরিস্থিতিতে বৃহস্পতিবার পার্থকে; একহাত নিলেন তাপস। তাঁর কথায়, “ওই ষড়যন্ত্র, ষড়যন্ত্র না বলে; কী ষড়যন্ত্র সেটা আদালতে জানাক বা তদন্তকারীদের জানাক! আসলে ও সারাজীবন বোধহয় কিছু মানুষের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করেছে; তাই ষড়যন্ত্র শব্দটার সঙ্গে প্রত্যক্ষ কোনও সম্পর্ক রয়েছে ওর”। বোঝাই যায়, দুর্নীতি মামলায় গ্রেফতার হওয়ার পর থেকেই; পার্থর সঙ্গে ক্রমশ দূরত্ব বাড়িয়েছে তৃণমূল। মন্ত্রিত্ব ও দলের সদস্য পদও গিয়েছে তাঁর।
পার্থ এবং অর্পিতার নামে উদ্ধার হওয়া সম্পত্তি, টাকার সঙ্গে দলের কোনও সম্পর্ক নেই; তা-ও স্পষ্ট করে দেওয়া হয়েছে। ষড়যন্ত্রের তত্ত্ব নিয়েও এবার নিজেদের অবস্থান জানিয়ে দিল তৃণমূল। একথা বলাই যায়, দলের প্রাক্তন মহাসচিবকে ঝেড়েই ফেলল তৃণমূল ও মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
]]>