তৃণমূল সরকারের আমলে; মমতার পর কে হবেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী? তা নিয়ে দলের অন্দরেই শুরু হয়েছে ফিসফিসানি। এদিন অসমের সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে, অভিষেক পরিস্কার বলেন; “এই বিষয়ে আমার কোনও অভিমত নেই; যাঁরা এই নিয়ে কথা বলছেন সেটা তাঁদের ব্যক্তিগত ব্যাপার। আমি বারবার বলেছি, এই বিষয়ে কিছু জানি না; আমি সকলের মতামতকে সম্মান জানাই। দল আমাকে সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব দিয়েছে; সেই মতো কাজ করছি। এখন ব্লক, জেলায় তৃণমূলের প্রসার ঘটানোই আমার লক্ষ্য; আপাতত অসমের ৭-১০টি জেলায়; তৃণমূলকে প্রতিষ্ঠা করাই লক্ষ্য; সেটাই করছি।
তৃণমূলের পরবর্তী উত্তরাধিকারী কে; গুয়াহাটিতে এদিন অভিষেককে প্রশ্ন করেন সাংবাদিকরা। উত্তর দিতে গিয়ে তৃণমূল সাংসদ নিজেকে; দলের সাধারণ কর্মী হিসাবেই উল্লেখ করেন। তিনি জানিয়ে দেন, “এই বিষয়ে আমার কোনও অভিমত নেই; যারা এটা নিয়ে কথা বলছে; সেটা তাদের ব্যক্তিগত অভিমত। আমি প্রথম দিনই বলেছি; আমি এই বিষয়ে কিছু জানি না”।
আরও পড়ুনঃ “তৃণমূল ঝুঁকেগা নেহি”, অসমে পা দিয়েই বিজেপিকে উপড়ে ফেলার ডাক অভিষেকের
তৃণমূল সরকারের বর্ষপূর্তির দিন, মুখপাত্র কুণাল ঘোষ সোশ্যাল মিডিয়ায়; দলের উত্তরাধিকারী নিয়ে ভবিষ্যৎদ্বাণী করেন। তিনি লেখেন, “জ্যোতি বাসুর রেকর্ড ভেঙে ২০৩৬ সাল পর্যন্ত; মুখ্যমন্ত্রী হিসাবে ক্ষমতায় থাকবেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ই। ২০৩৬ সালে তিনি অভিভাবকের মতো উপস্থিত থাকবেন এমন অনুষ্ঠানে; যেখানে মুখ্যমন্ত্রীর পদে শপথ নেবেন অভিষেক”।
তৃণমূল নেত্রী অপরূপা পোদ্দারও; একইরকম টুইট করেন। তিনি লেখেন, “আগামী ২০২৪ সালেই বাংলার মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে; শপথ নেবেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়”। তবে এই নিয়ে বিতর্ক দানা বাঁধতেই; টুইট ডিলিটও করে দেন তৃণমূল সাংসদ।
তৃণমূলের উত্তরাধিকার বিতর্কে মুখ খুলেছেন; রাজ্যের মন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়ও। পার্থ বলেন; “মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যেভাবে চালাচ্ছেন; দীর্ঘদিনের ইতিহাস তৈরি করবেন। মমতার পর কে নেতা হবেন; তা মমতা যতক্ষণ আছেন, বলতে পারছি না”।
]]>শুক্রবার শান্তিপুরে গিয়ে মৃতদের পরিবার পিছু দুলক্ষ টাকার আর্থিক অনুদানের চেক তুলে দেন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়। তাঁর সঙ্গে ছিলেন জেলার তৃণমূল নেতা তথা রাজ্যের কারামন্ত্রী উজ্জ্বল বিশ্বাস। এ দিন তাঁরা শান্তিপুর স্টেট জেনারেল হাসপাতালে গিয়ে অসুস্থদের সঙ্গে দেখা করেন। তবে বিজেপির প্রতিনিধি দলকে আটকে দেওয়া হয় শহরে ঢোকার মুখেই।
আরও পড়ুনঃ মমতার নির্দেশকে বুড়ো আঙুল, সিন্ডিকেট জুলুমে রাজ্য ছাড়ছেন শিল্পপতি
বিজেপি নেতা মুকুল রায় এবং কৈলাশ বিজয়বর্গীয়-সহ বিজেপি প্রতিনিধি দল যখন শহরে ঢুকতে যায়, তখন একদল মানুষ তাঁদের উদ্দেশ্যে বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করে। তাদের কারো কারো হাতে ছিল কালো পতাকা। এ ব্যাপারে বিজেপি নেতৃত্ব দাবি করেন, তাঁদের এলাকায় ঢুকতে না-দেওয়ার জন্যই তৃণমূল কংগ্রেস পরিকল্পনা মাফিক এই কর্মসূচি নিয়েছে।
আরও পড়ুন: রথযাত্রা উপলক্ষে বাংলায় মোদীর জনসভায় লোকসভার দামামা
এ দিন ঘটনাস্থলে গো ব্যাক স্লোগান ওঠার পর সেখানে দাঁড়িয়েই তৃণমূলের বিরুদ্ধে তোপ দাগেন কৈলাশ। তিনি সংবাদমাধ্যমের কাছে বলেন, ‘সরকারি মদ বিক্রির টাকা যায় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে। আর বেআইনি মদ বিক্রির টাকা যায় অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের ঘরে। এই মৃত্যুর সম্পূর্ণ দায় নিতে হবে তাঁদেরই’।
আর এইভাবেই শান্তিপুর বিষ মদ কাণ্ডে সরাসরি মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও তাঁর ভাইপো অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে আক্রমণ করলেন বিজেপি নেতা কৈলাস বিজয়বর্গীয়। পাশে দাঁড়িয়ে মাথা দুলিয়ে অভিযোগ সমর্থন করেন মুকুল রায়।
আরও পড়ুন: পাপ ঢাকতে শিশু বলিদান, জন্মেই অনাথ শিশুরা অসহায়
বিজেপির এরাজ্যের অন্যতম পর্যবেক্ষক বলেন,কৈলাস বিজয়বর্গীয় বলেন, ‘রাজ্যে যে অবৈধ মদের ব্যবসা চলছে তাকে সুরক্ষা দিচ্ছেন অভিষেক ব্যানার্জি। এই রাজ্যে দুটি সরকার চলছে। মমতা ব্যানার্জির সরকার এবং অভিষেক ব্যানার্জির সরকার। মমতা ব্যানার্জির সরকার বৈধ মদের সরকার চালাচ্ছে এবং অভিষেক ব্যানার্জি অবৈধ মদের সরকার চালাচ্ছে। অবৈধ মদের বিক্রির সমস্ত টাকা অভিষেক ব্যানার্জির বাড়িতে সরাসরি যাচ্ছে। এই মৃত্যুর জন্য মমতার ভাইপো অভিষেক দায়ি। এরাজ্যে যে সব অবৈধ কাজকর্ম হচ্ছে, তার জন্য দায়ি অভিষেক’।
বিহার-ঝাড়খণ্ড থেকে মদ আসার ব্যাপারে কৈলাস বলেন, ‘এটি সরকারের ব্যর্থতা। সরকার কাউকে ধরতে পারছে না। সরকারের আধিকারিকরা কি চুড়ি পরে বসে আছেন? তাদের ইস্তফা দেওয়া উচিত’। শান্তিপুরে আসার আগে চারবার আটকানো হয় তাঁকে। এই বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, ‘এই রাজ্যে গণতন্ত্র নেই’।
তৃণমূল মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায় বিজেপি নেতাকে ‘বর্গী নেতা’ বলে কটাক্ষ করেন। পার্থবাবু বলেন, ‘মমতার উন্নয়নের কোন জবাব নেই বিজেপির কাছে, তাই ব্যক্তিগত আক্রমণে নেমেছে তারা’। তৃণমূল সূত্রে জানা গেছে, কৈলাশ এর এই মন্তব্যের বিরুদ্ধে আদালতে মানহানির মামলা করতে চলেছেন অভিষেক বন্দোপাধ্যায়।
]]>