Specialist Doctor’s Consult – The News বাংলা https://thenewsbangla.com Bengali News Portal Sat, 15 Dec 2018 03:39:25 +0000 en-US hourly 1 https://wordpress.org/?v=6.7.2 https://thenewsbangla.com/wp-content/uploads/2018/09/cropped-cdacf4af-1517-4a2e-9115-8796fbc7217f-32x32.jpeg Specialist Doctor’s Consult – The News বাংলা https://thenewsbangla.com 32 32 অবশ্যই জেনে রাখুন বাচ্চার কাশি ও হাঁপানি নিয়ে ডাক্তারের পরামর্শ https://thenewsbangla.com/specialist-doctors-consult-about-childs-cough-and-asthma/ Sat, 15 Dec 2018 03:23:06 +0000 https://www.thenewsbangla.com/?p=4217 The News বাংলাঃ আপনার বাচ্চার কি ঘন ঘন কাশি হয়? শুষ্ক কাশি? সারাদিন ভালো, রাত হলেই কাশির প্রকোপ? কিংবা লাফালাফি ঝাঁপাঝাঁপির সময় হঠাৎ করেই কাশি শুরু? আপনার বাচ্চা হাঁপানির শিকার নয় তো?

হাঁপানি মানেই হাপরের মত শ্বাসটানা, কন্ঠনালী বের হওয়া যে বয়স্ক মানুষের চিত্রটা চোখের সামনে ভেসে ওঠে আজ আর তা ঐখানেই সীমাবদ্ধ নয়, বিশ্বব্যাপী দূষণের প্রকোপে হাঁপানি তার পরিসর বাড়িয়ে থাবা বসিয়েছে একরত্তি শিশুদের ওপরেও।

আরও পড়ুনঃ চিকেন খেলেও বাড়ছে বিপদ বলছে রিপোর্ট

হাঁপানি যে কোনও বয়সেই হতে পারে। তবে বাচ্চাদের ক্ষেত্রে সাধারণত জন্মের প্রথম ৫ বছরের মধ্যেই এই সমস্যা দেখা দিতে পারে। কিছু কিছু বাচ্চার বড় বয়সেও হাঁপানি থেকে যেতে পারে। অন্য বাচ্চাদের ক্ষেত্রে হাঁপানি সেরে যায়।

হাঁপানি কি? হাঁপানি একটি প্রদাহজনিত সমস্যা। এই সমস্যা বারবার দেখা দেয়। কিছু উদ্দীপক পদার্থ শ্বাসনালিতে প্রদাহের সৃষ্টি করে। শ্বাসনালি সরু হয়ে যায়। এর ফলে শ্বাস নিতে কষ্ট হয়।

হাঁপানি কারণগুলি কি কিঃ প্রধানত অ্যালার্জি। শ্বাসনালির চারপাশের মাংসপেশি সংকুচিত হয়, ফলে বাতাস চলার পথ সরু হয়ে যায়। ঠান্ডা লাগা বা শ্বাস যন্ত্রের সংক্রমণ। শ্বাসনালির ভেতরের স্তরে প্রদাহ হয়ে ফুলে ওঠে।

উত্তেজক পদার্থের প্রভাবে শ্বাসনালির গ্রন্থি থেকে প্রচুর মিউকাসজাতীয় আঠালো কফ নিঃসৃত হয়ে শ্বাসনালিতে জমা হয়। এগুলি বাতাস চলাচলের পথ আটকে দেয়। যার ফলে অল্প বাতাস সরু শ্বাসনালি দিয়ে প্রবাহের সময় শ্বাসের সঙ্গে শোঁ শোঁ শব্দ হয়।

আরও পড়ুনঃ আমলকির আছে বেশ কিছু অসাধারণ উপকারিতা

হাঁপানি উদ্দীপকঃ বাড়িঘরের ধুলো-ময়লায় থাকা মাইট, উগ্র গন্ধ বা স্প্রে, সিগারেট বা অন্যান্য ধোঁয়া, পরাগ বা ফুলের রেণু, গৃহপালিত পশুপাখির পালক বা লোম, ফারের খেলনা, ছত্রাকের স্পোর, আবহাওয়ার পরিবর্তন বা তীব্র ঠান্ডা, বিশেষ কিছু খাদ্য, কিছু কিছু ওষুধ যেমন অ্যাসপিরিন, পেনিসিলিন প্রভৃতি এবং শিল্পকারখানায় ব্যবহৃত কোনো কোনো রাসায়নিক পদার্থ।

এগুলি অ্যালার্জেন বা উদ্দীপক হিসাবে কাজ করে। এছাড়া শারীরিক পরিশ্রম বা ব্যায়াম এবং তীব্র মানসিক প্রতিক্রিয়া হাঁপানির দুই গুরুত্বপূর্ন ট্রিগার ফ্যাক্টর।

হাঁপানির উপসর্গঃ কাশি হচ্ছে হাঁপানির সবচেয়ে পরিলক্ষিত উপসর্গ। এই কাশির প্রকোপ রাতেই বেশি দেখা দেয়। এ ছাড়া বাঁশির মত শোঁ শোঁ আওয়াজ, শ্লেষ্মা, হাঁফ ধরা, বুকে চাপ ধরা এবং শ্বাস কষ্ট হাঁপানির লক্ষণ।

খেলাধুলা করতে গেলে কিংবা চলাফেরা করতে যাওয়ার সময় শিশু পরিশ্রান্ত হয়ে পড়ে। রোগ নির্ণয় করা হয় বাচ্চার শোঁ শোঁঁ আওয়াজ করার ঘটনাক্রম দেখে এবং হাঁপানির পারিবারিক ইতিহাস দেখে।

আরও পড়ুনঃ গাজর এর অসাধারণ উপকারিতা জেনে নিন

হাঁপানির চিকিৎসাঃ প্রশিক্ষিত বক্ষব্যাধি বিশেষজ্ঞের পরামর্শ ও তত্ত্বাবধানে খুব সহজেই শিশুর হাঁপানি নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব। উদ্দীপকগুলিকে এড়ানো গেলে হাঁপানি আটকানো যায়। এর চিকিৎসা হয় অ্যান্টিঅ্যালার্জিক, ব্রঙ্কোডাইলেটর দিয়ে এবং নাক দিয়ে কর্টিকোস্টেরয়েড টেনে।

ইনহেলার প্রয়োজন হতে পারে। ছোট শিশুদের ক্ষেত্রে যারা ইনহেলার নিজেরা নিতে পারে না, তাদের ক্ষেত্রে স্পেসার এর মাধ্যমে দেওয়া ভালো।

হাঁপানি কখনো কখনো তীব্র আকার ধারণ করে শিশুর জীবন ঝুঁকি পূর্ন করতে পারে। যেহেতু হাঁপানির কারণে মৃত্যু হওয়াটা বিচিত্র কিছু নয়, কাজেই হাঁপানির তীব্রতা বাড়লে শিশুকে দ্রুত হাঁপানির চিকিৎসা সুবিধা রয়েছে এমন হাসপাতালে নিয়ে যেতে হবে। কোন কোন উপসর্গ দেখলে শিশুকে তৎক্ষণাৎ চিকিৎসকের কাছে নিয়ে যাবেন?

শিশুর যদি তীব্র শ্বাসকষ্ট হয়। শ্বাসকষ্টের কারণে শিশুর ‘কলার বোন’ এবং পাঁজরের হাড় যদি ভেসে ওঠে। শ্বাসকষ্টের কারণে যদি শিশু কথা বলতে ব্যর্থ হয় বা কথা বলতে অসুবিধা হয়। শিশু যদি বসে উপুড় হয়ে শ্বাসকষ্ট উপশমের চেষ্টা করে। প্রতি শ্বাস-প্রশ্বাসের সময় যদি বাঁশির মতো চিঁ চিঁ শব্দ হয়।

শিশু যদি দাঁড়াতে গিয়ে শ্বাসকষ্টের কারণে বসে পড়ে আবার ভালোভাবে শ্বাস নেওয়ার চেষ্টা করতে থাকে। কোনো কিছু পান না করতে পারলে বা খেতে না চাইলে। ইনহেলার ব্যবহারের ১৫ মিনিটের মধ্যে অবস্থার উন্নতি না হলে।

আরও পড়ুনঃ জেনে নিন শীতে ত্বকের যত্ন কিভাবে নেবেন

হাঁপানি প্রতিরোধঃ একটি শিশু আলাদা ট্রিগার বা উত্তেজকের প্রতি সংবেদনশীল। শিশুর যদি হাঁপানি থাকে, তাহলে শিশুর হাঁপানির ট্রিগারগুলো চিনে নিয়ে সেগুলো যথাসম্ভব এড়িয়ে চলা অত্যন্ত জরুরি। বাড়িঘর ধুলো বালি মুক্ত রাখার চেষ্টা করতে হবে। মেঝেয় কার্পেট ব্যবহার না করাই ভালো, কারণ এর নিচে প্রচুর ধুলো জমে থাকে।

এছাড়া দরজা জানালার পর্দা, বিছানার চাদর বালিশের কভার ইত্যাদি নিয়মিত কাচতে হবে। শীতকালে লেপ এর পরিবর্তে কাচা যায় এমন কম্বল ব্যবহার করতে পারলে ভালো। শীতে ঠান্ডা লাগা থেকে দূরে থাকতে হবে। পুরোনো কাপড় পরার আগে ভালো করে ধুয়ে নিয়ে হবে। হাঁপানিতে আক্রান্ত শিশুর বাবা-মায়ের ধূমপান করা উচিত নয়। কারণ সিগারেটের ধোঁয়াও অ্যাজমার কারণ হতে পারে।

শিশুর হাঁপানির ওপর খাবারের প্রভাব আছে কি না, সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে। যদি দেখা যায় বিশেষ কোনো খাবার খেলে শিশুর হাঁপানির সমস্যা হয় তাহলে সেসব খাবার শিশুকে খেতে দেওয়া যাবে না। শিশুকে সব সময় পরিষ্কার থাকতে উৎসাহিত করুন। তাকে ধুলোবালি, জীবজন্তু, লোমশ খেলনা দিয়ে খেলতে বারণ করুন।

চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী শিশুকে অ্যান্টিঅ্যালার্জিক দিন ও সাধারণ ব্যায়াম করতে উৎসাহিত করুন। চিকিৎসকের পরামর্শমতো চললে এবং চিকিৎসা করালে হাঁপানিকে নিয়ন্ত্রণে রাখা যায় এবং আনন্দময়, কর্মক্ষম জীবনযাপন করা যেতে পারে। শিশু স্কুলে গেলে তার হাঁপানির সমস্যা শিক্ষককে জানান।

শিশুর হাঁপানির লক্ষণগুলো নিয়ে শিক্ষকের সঙ্গে আলোচনা করুন। স্কুল বা ভ্রমণকালে শিশুর প্রয়োজনীয় ওষুধপথ্য সঙ্গে রাখুন। প্রয়োজনে একশন প্লান বানান।

আরও পড়ুনঃ সহজেই ঘরোয়া উপায়ে চোখের নিচের কালো দাগ দুর করুন

হাঁপানি সম্পর্কে কিছু ভুল ধারনাঃ হাঁপানির চিকিৎসার ওষুধ বেশি ব্যবহার করলে ধীরে ধীরে এর কার্য ক্ষমতা কমে। তাই চিকিৎসক ইনহেলার ব্যবহারের পরামর্শ দিলেও অনেকেই এটি কম ব্যবহার করার চেষ্টা করেন কিন্তু ঘটনা হল নিয়মিত ব্যবহার হলেও এর কার্যকারিতা একই থাকে এবং নিয়মিত ব্যবহারে এর প্রয়োজনীয়তা কমতে থাকে।

হাঁপানির রোগীদের শারীরিক কর্ম কম করা উচিত, এটিও একটি ভুল ধারনা। ব্যায়াম এবং শারীরিক কর্ম হাঁপানি নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে। হাঁপানি ছোঁয়াচে রোগ, এটিও একটি ভুল ধারনা। হাঁপানি সর্দি-কাশির মতো নয়, একজনের হলে অন্যজনের মধ্যে ছড়াবে না। অ্যাজমায় আক্রান্ত মায়ের বুকের দুধ খেলে শিশুর অ্যাজমায় আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা নেই। এটি বংশগতভাবে হওয়ার সম্ভাবনা থাকে।

]]>