Manju Baruah – The News বাংলা https://thenewsbangla.com Bengali News Portal Mon, 10 Dec 2018 07:13:11 +0000 en-US hourly 1 https://wordpress.org/?v=6.7.2 https://thenewsbangla.com/wp-content/uploads/2018/09/cropped-cdacf4af-1517-4a2e-9115-8796fbc7217f-32x32.jpeg Manju Baruah – The News বাংলা https://thenewsbangla.com 32 32 পুরুষদের টেক্কা দিয়ে চা বাগানে ইতিহাস সৃষ্টি এক নারীর https://thenewsbangla.com/the-woman-first-time-manager-of-a-tea-garden-creats-history-in-assam/ Mon, 10 Dec 2018 07:04:18 +0000 https://www.thenewsbangla.com/?p=3847 The News বাংলা, আসামঃ ব্রিটিশরা ভারতের আসামে চা বাগান শুরু করেছিল প্রায় দুশ বছর আগে। কিন্তু চা বাগানগুলোতে উচ্চপদে এতদিন কাজ করেছেন শুধু পুরুষরাই। এতদিনের এই ব্যবস্থা ভেঙে এবার এক নারী দায়িত্ব নিয়েছেন চা বাগানের প্রধানের। ম্যানেজারের পদে বসেছেন ৪৩ বছরের মঞ্জু বড়ুয়া।

আরও পড়ুনঃ বাংলায় ২৫ টাকা কেজি পেঁয়াজ, নাসিকে দাম না পেয়ে আত্মহত্যা

৬৩৩ হেক্টরেরও বেশি জায়গা জুড়ে থাকা বাগানের আনাচে-কানাচে মোটরবাইক বা সাইকেল অথবা জিপে চেপে ঘুরে বেড়ানোই কাজ তাঁর। ম্যানেজারের দায়িত্ব পাওয়ার পর মঞ্জু বড়ুয়া বলেন,’চা বাগানের দায় দায়িত্ব সামলানো একজন নারীর জন্য কঠিন হলেও অসম্ভব কোন কাজ নয়। এটা ঠিক যে, এতদিন চা বাগানে পুরুষরাই ম্যানেজার হয়ে এসেছেন। পুরুষ হলে হয়তো কিছুটা সুবিধা থাকে। কাজটা কঠিন তবে নারীরা পারবেন না মোটেই এমন নয়’।

পুরুষদের টেক্কা দিয়ে চা বাগানে ইতিহাস সৃষ্টি এক নারীর/The News বাংলা
পুরুষদের টেক্কা দিয়ে চা বাগানে ইতিহাস সৃষ্টি এক নারীর/The News বাংলা

মঞ্জু বড়ুয়া আরও বলেন, ‘কিন্তু শারীরিক আর মানসিকভাবে ফিট থাকতে হবে। আর চা বাগানের কাজের প্রতি থাকতে হবে ভালবাসাও। এগুলো থাকলে নারীদের কাছেও অসম্ভব নয় চা বাগানের ম্যানেজারের কাজ করা’।

আরও পড়ুনঃ পাহাড়ে নিজের বাড়ি থেকে বিমলকে ধরল মমতার পুলিশ

তিনি বলেন, ‘আমার বাগানের এলাকা ৬৩৩ হেক্টর। গোটা বাগানের আনাচে-কানাচে ঘুরতে হয়। কখনও সাইকেলে, কখনও জিপে, কখনও মোটরসাইকেলে। আমি সবগুলোই চালাতে পারি। একাই যাই বাগানের নানা দিকে। এত পরিশ্রম করতে হয় সারাদিন যে আলাদাভাবে ফিট থাকার জন্য ব্যায়াম করতে হয় না। তবে মানসিকভাবে ফিট থাকতে ধ্যান করি নিয়মিত’।

পুরুষদের টেক্কা দিয়ে চা বাগানে ইতিহাস সৃষ্টি এক নারীর/The News বাংলা
পুরুষদের টেক্কা দিয়ে চা বাগানে ইতিহাস সৃষ্টি এক নারীর/The News বাংলা

শ্রমিক কর্মচারীরা এত বছর ধরে বাগানের প্রধান হিসাবে একজন পুরুষকেই দেখে অভ্যস্ত। কিন্তু নারী পুরুষ নির্বিশেষে সব শ্রমিকের সঙ্গেই কাজ করার সুবাদে তাঁর একটা গ্রহণযোগ্যতা আগে থেকেই তৈরি হয়ে গেছে। তাই বাগানের নারী ও পুরুষ সব শ্রমিক কর্মচারীর সঙ্গে তাঁর সম্পর্ক খুবই ভাল। তাই নারী হিসাবে বড় কোনো চ্যালেঞ্জের মুখে এখনও পড়তে হয় নি তাঁকে।

আরও পড়ুনঃ সব অনুষ্ঠানেই নেতা মন্ত্রীদের অতিথি করে আনার কুফল

মঞ্জু বড়ুয়া জানান, তিনি কাগজের বিজ্ঞাপন দেখে আবেদন করেছিলেন শ্রমিক কল্যাণ অফিসার হওয়ার জন্য। কাজে যোগ দেওয়ার পরে এই বাগানেই গত ১৮ বছর ধরে কাজ করছেন। একেবারে তৃণমূল স্তরে শ্রমিক কর্মচারীদের সঙ্গে মিশেছেন।

পুরুষদের টেক্কা দিয়ে চা বাগানে ইতিহাস সৃষ্টি এক নারীর/The News বাংলা
পুরুষদের টেক্কা দিয়ে চা বাগানে ইতিহাস সৃষ্টি এক নারীর/The News বাংলা

আসামের শিবসাগর জেলার একটি ছোট এলাকা নাজিরার মেয়ে মঞ্জু। চা বাগানে কাজ করবেন, এরকম স্বপ্ন কমবয়সে দেখেন নি। চেয়েছিলেন ইন্ডিয়ান পুলিশ সার্ভিসে যোগ দেবেন। কিন্তু বাবার অবসরের পরে প্রয়োজন ছিল চাকরির। তখনই কাগজের বিজ্ঞাপন দেখে চা বাগানের শ্রমিক কল্যাণ অফিসারের কাজে যোগ দেন। স্বামী আর ১১ বছরের কন্যাকে নিয়ে চা বাগানের বাংলোতেই থাকেন মঞ্জু বড়ুয়া। ভোর থেকে বাগানের কাজ শুরু হয়ে যায়, একই সঙ্গে তাঁর ছুটোছুটিও।

আরও পড়ুনঃ পাঁচ রাজ্যে ভোটের ফল সমীক্ষায় মোদীর চেয়ে এগিয়ে রাহুল

মঞ্জু বড়ুয়া বলছিলেন,’আগে থেকে প্ল্যান না করে রাখলে খুব অসুবিধা হয় দুটো দিক সামলাতে। বাগানের নিয়ম অনুযায়ী খুব সকালে-৬টা সাড়ে ৬টার মধ্যে কাজ শুরু হয়। আমিও তখনই বেরিয়ে যাই। তবে সাড়ে ৭টায় ব্রেকফাস্টের একটা ছুটি হয়। সেই সময়ে বাংলোয় ফিরে এসে মেয়েকে স্কুলে যাওয়ার জন্য তৈরি করে দিয়ে আবার কাজে ফিরি। আবার দুপুরে লাঞ্চ ব্রেকে আসি মেয়েকে দেখাশোনা করতে। এইভাবেই দুটো দিক সামলাচ্ছি’।

পুরুষদের টেক্কা দিয়ে চা বাগানে ইতিহাস সৃষ্টি এক নারীর/The News বাংলা
পুরুষদের টেক্কা দিয়ে চা বাগানে ইতিহাস সৃষ্টি এক নারীর/The News বাংলা

বাগানটির মালিক কলকাতার এপিজে সুরেন্দ্র গ্রুপ-যাদের অনেক চা বাগান আসামে ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে। সংস্থার চেয়ারম্যান করণ পাল বলেন,’মঞ্জু বড়ুয়া যোগ্যতা দেখিয়েই এই পদে উঠে এসেছেন। সবটা তাঁরই কৃতিত্ব। কিন্তু চা বাগানের মতো একটা শিল্প, যেখানে পুরুষরাই মূলত মাথায় বসে এসেছেন এতকাল। সেখানে যদি মঞ্জু বড়ুয়ার সাফল্য দেখে, অনুপ্রাণিত হয়ে অন্য নারীরাও এগিয়ে আসেন চা বাগানের গুরুদায়িত্ব সামলানোর মতো কাজে, সেটাই হবে আসল সাফল্য’।

মঞ্জু বড়ুয়া জানান, চেয়ারম্যান যেদিন তাকে ডেকে ম্যানেজারের পদে প্রোমোশনের কথা জানিয়েছিলেন, সেদিন আনন্দে এতটাই আত্মহারা হয়ে পড়েছিলেন যে পদোন্নতির জন্য চেয়ারম্যানকে ‘থ্যাঙ্ক ইউ’ বলার বদলে ‘কনগ্র্যাচুলেট’ করে ফেলেছিলেন।

]]>