‘ইভিএম মেশিন চাই না; ব্যালট চাই’। এবার ২১ জুলাইয়ে তৃণমূলের স্লোগান এটাই। সারা দেশব্যাপী আন্দোলন; শুরু হবে বাংলা থেকেই। বঙ্গে এবার বিজেপির বাড়বাড়ন্ত। পালটা কোমর বাঁধছে তৃণমূলও। ইভিএমে কারচুপির অভিযোগকে; অস্ত্র করছে রাজ্যের শাসক দল। আসন্ন একুশে জুলাইয়ের মঞ্চে দলের স্লোগান কী হবে; সেটাও সোমবার ঠিক করে দিয়েছেন তৃণমূল নেত্রী।
ইভিএম নিয়ে ভোটের অনেক আগে থেকেই; সরব হয় বিজেপি বিরোধীরা। ভোটের ফল বেরোতে দেখা গেল; নরেন্দ্র মোদী একাই তিনশো পার। এই প্রেক্ষাপটে, এবার ইভিএম নিয়ে চরম অনাস্থা প্রকাশ করলেন তৃণমূল নেত্রী। বিজেপি এবং নির্বাচন কমিশনের বিরুদ্ধে; সোচ্চার হলেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী ও তৃণমূল কংগ্রেস সভানেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
তিনি বলেছেন, ইভিএম মেশিনে আগে থেকেই; বিজেপির পক্ষে প্রোগ্রামিং করা ছিল। বিজেপির জয়ের রহস্য উন্মোচনে; ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং কমিটি করারও দাবি তুললেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী।
মমতা সাংবাদিকদের বলেন; ৯৮ শতাংশ ইভিএমে কারচুপি হয়েছে। মমতা বলেন; “ভোটের দিন যে ইভিএম মেশিনগুলো নষ্ট হয়েছিল; সেগুলো পাল্টে যে নতুন মেশিন দেওয়া হয়েছিল সেগুলোর একটিতেও ‘মক পোল’ করা হয়নি। ইভিএম মেশিনগুলোতে আগেই প্রোগ্রামিং করা ছিল”।
এই অভিযোগ তুলে মমতা জানিয়ে দেন যে; এই নির্বাচনের ফল তিনি মানেন না। এর জন্য তিনি ‘ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং কমিটি’ গড়ার দাবি জানান। বলেন, “ইভিএম মেশিনের ভোট আমি মানি না। ব্যালট পেপারে ফিরতে হবে। এরই দাবিতে আন্দোলন শুরু হবে”।
তবে কে ওই কমিটি গড়বে? সেটা পরিষ্কার করে বলেননি মুখ্যমন্ত্রী। এই কমিটি গড়ার দাবিতে; দেশজুড়ে বিজেপি বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলোকে পাশে দাঁড়ানোর আহবান জানান তিনি।
ইভিএম নয়, ব্যালট চাই। এই স্লোগানকে অস্ত্র করেই এবার ঝাঁপাবে তৃণমূল। বাম আমলে ঠিক এর উল্টো দাবি তুলে আন্দোলনে নেমেছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বাম আমলে ইভিএমের দাবি তোলা মমতার; রাম আমলে আবার ব্যালটে ভোটের দাবি।
]]>সোমবার ব্যারাকপুর লোকসভার অন্তর্গত জগদ্দলে একটি নির্বাচনী প্রচারে এসে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী জানান, মোদীর সঙ্গে রাজ্যের শাসক দল তৃণমূল কংগ্রেসের ৪০ জন বিধায়ক যোগাযোগ রেখে চলেছেন। ভোট মিটে যেতেই তারা সদলবলে গেরুয়া শিবিরে সামিল হবেন বলে জানান তিনি।
আরও পড়ুনঃ শিলিগুড়ি থেকে পুরুলিয়ায় ভোটের ডিউটি, গরমের বলি রাজ্যের পুলিশ কর্মী
প্রধানমন্ত্রীর এই মন্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতে নরেন্দ্র মোদীর বিরুদ্ধে হর্স ট্রেডিং বা বিধায়ক কেনাবেচার অভিযোগ করেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। মঙ্গলবার ভদ্রেশ্বরের এক জনসভা থেকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জানান, হর্স ট্রেডিংয়ের সাথে সরাসরি যুক্ত থাকার কথা বিজেপি নিজেই স্বীকার করে নিয়েছেন।
আরও পড়ুনঃ বুধবার বাংলায় আছড়ে পড়বে ঘূর্ণিঝড় ফনি, টানা তিনদিন ধরে প্রবল ঝড় বৃষ্টির আশঙ্কা
এই স্বীকারোক্তির পরে নির্বাচন কমিশনের কাছে তৃণমূল আবেদন করে নরেন্দ্র মোদীর প্রার্থীপদ খারিজ করার জন্য। বিধায়ক কেনাবেচার টাকার উৎস নিয়েও তিনি প্রশ্ন তোলেন। প্রশ্ন তুলে তিনি বলেন, এই টাকা কোথা থেকে আসছে, তার তদন্ত হওয়া প্রয়োজন। ঘোড়া কেনাবেচার কথা বলে নিজেই সংবিধানকে বুড়ো আঙুল দেখাচ্ছেন বলে প্রধানমন্ত্রীর বিরুদ্ধে তোপ দাগেন মমতা।
আরও পড়ুনঃ পায়ের ছাপ দেখিয়ে ভারতীয় সেনার দাবি, ইয়েতির অস্তিত্ব আজও আছে হিমালয়ে
এদিকে তৃণমূল সাংসদ ডেরেক ও ব্রায়ান জানান, তৃণমূলের সদস্য ও সমর্থকদের ভয় দেখানো ও মনোভাব নষ্ট করতেই মিথ্যা কথা প্রচার করছেন নরেন্দ্র মোদী। এই নিয়েই মোদীর প্রার্থীপদ বাতিলের দাবি নিয়ে নির্বাচন কমিশনের দারস্থ হল তৃণমূল কংগ্রেস।
শুধু বিধায়ক কেনাবেচা নয়, মমতাকে হুমকি দেবার অভিযোগও তুলেছে তৃণমূল। দিদির বাঁচার রাস্তা নেই বলেই প্রকাশ্য জনসভায় বলেন নরেন্দ্র মোদী। আর এই দুই অভিযোগ নিয়েই নির্বাচন কমিশনের দারস্থ হল তৃণমূল কংগ্রেস।
]]>