বিধায়কের মায়ের নিয়মভঙ্গ এর খাওয়া-দাওয়া বলে কথা! সমস্যা কেন?? এখানেই তো গল্প শুরু। বিধায়ক নিমন্ত্রণ করেছেন প্রায় ৩ হাজার জনকে। সেই মত প্রস্তুতিও নিয়েছেন বিধায়কের লোকেরা। কিন্তু তারপরেই ছন্দপতন!
আরও পড়ুনঃ বিশ্বকাপ ক্রিকেটে ভারতীয় ক্রিকেটারদের দাবি ‘কলা আর বউ’
বিধায়কের নিমন্ত্রণ কার্ড নকল করে দরাজ মনে সবাইকে নিমন্ত্রণ করে দিয়েছেন আরও একজন! আর এখানেই শুরু হয়েছে চিন্তা। কত মানুষ আসবেন কাল?
যাঁর বাড়ির অনুষ্ঠান, সেই দীপেন্দু বিশ্বাস অবশ্য ভেবেচিন্তে হিসাব করেই তালিকা অনুযায়ী কার্ড ছাপিয়েছিলেন। কিন্তু অভিযোগ, তাঁর হয়ে নিমন্ত্রণপত্রের রঙিন ফটোকপি করে অঢেল বিলিয়ে বেরিয়েছেন এক যুবক। অকাতরে, যাকে পেরেছেন তাকেই নেমন্তন্ন করেছেন!
এমনকী, ফেসবুক-হোয়াটসঅ্যাপেও সকলকে ডেকে ডেকে বলেছেন, “সবার নেমন্তন্ন, ইচ্ছে মতো পাত পেড়ে খেয়ে এসো”। অদ্ভুত এই কাজে এখন বেজায় সমস্যায় বিধায়ক। কত মানুষ আসবেন কাল!?
আরও পড়ুন: পৃথিবী এগোলেও তান্ত্রিকের কালো জাদু টোনায় ডুবে আছে আফ্রিকা
বসিরহাট দক্ষিণের বিধায়ক দীপেন্দু বিশ্বাসের মা লীলাদেবী মারা গিয়েছেন সম্প্রতি। কাল, ১৫ নভেম্বর বৃহস্পতিবার নিয়মভঙ্গ। সেই উপলক্ষে হাজার তিনেক মানুষকে নিমন্ত্রণ করেছেন বিধায়ক। সেটা বেড়ে এখন কোথায় দাঁড়াবে তাই নিয়েই আশঙ্কায় বিধায়ক।
ট্যাটরার বাসিন্দা উজ্জ্বল বিশ্বাস অযাচিত ভাবে নিজেই বিধায়কের হয়ে নিমন্ত্রণের দায়িত্ব নিজের কাঁধে নিয়ে ফেলেছিলেন। গত কয়েকদিন ধরে যাকে সামনে পেয়েছেন, সবান্ধবে চলে আসতে বলেছেন বিধায়কের বাড়ির অনুষ্ঠানে! জানতে পেরে চিন্তায় পড়েছেন দীপেন্দু বিশ্বাস।
বাধ্য হয়ে পুলিশের কাছে অভিযোগ জানিয়েছেন দীপেন্দু। বিধায়কের বিরুদ্ধে জালিয়াতির অভিযোগে শেষ পর্যন্ত গ্রেফতার করা হয়েছে উজ্জ্বলকে। পুলিশ জানতে পেরেছে, এর আগে দীপেন্দুর নামে টাকা তোলার অভিযোগ ছিল উজ্জ্বলের বিরুদ্ধে। তবে লিখিত অভিযোগ হয়নি সে সময়ে।
উজ্জ্বলের দাবি, টাকা তোলার অভিযোগ মিথ্যা। এমনকী, বিধায়কের মায়ের কাজে কাউকে সে নিমন্ত্রণ করেছে বলেও মানতে চায়নি। তবে, হাজার হাজার মানুষ ইতিমধ্যেই তার নিমন্ত্রণ পেয়ে বিধায়কের মায়ের শ্রাদ্ধে আসার জন্য প্রস্তুত।
আরও পড়ুন: নরেন্দ্র মোদীর বিরুদ্ধে একা লড়েছেন ‘দাবাং’ পুলিশ অফিসার
প্রাথমিক তদন্তের পরে পুলিশ মনে করছে, অসাধু উদ্দেশ্যেই এই কাজ করেছে উজ্জ্বল। তিন হাজার নিমন্ত্রিতের কাজে যদি সংখ্যাটা বাড়িয়ে দেওয়া যায়, তা হলে একটা বিশৃঙ্খলা তৈরি হতে পারে। দীপেন্দু বিশ্বাসকে ছোট করতেই এই ঘটনা ঘটানো হয়েছে বলে মনে করা হয়েছে।
গোটা ঘটনায় উজ্জ্বল একাই জড়িত, নাকি আরও কোনও ‘বড় মাথা’ কাজ করছে, তা খতিয়ে দেখছেন তদন্তকারীরা। এর পিছনে রাজনৈতিক ষড়যন্ত্র আছে কিনা তাও তদন্ত করে দেখছে পুলিশ।
আরও পড়ুন: রথযাত্রার আগেই ষাঁড়ের তাড়া খেলেন মুকুল রায়
তবে, অভিযুক্ত গ্রেফতার হয়ে শ্রীঘরে গেলেও বেজায় চিন্তায় বিধায়ক। খাবারে টান ধরতে কত আর দেরি লাগবে! দীপেন্দু নিজেও এমনটাই মনে করছেন। আগামীকাল ১৫ নভেম্বর, নিয়মভঙ্গের কাজে অতিথিদের বসিরহাটের নৈহাটিতে বিদ্যুৎ সঙ্ঘের মাঠে আসার কথা বলা হয়েছে।
আর এখানেই চিন্তায় ঘুম উধাও বিধায়কের। থানা-পুলিশ তো হল। গ্রেফতারও হয়েছে অভিযুক্ত। কিন্তু ভুয়ো নিমন্ত্রণপত্র পেয়ে হিসেবের বাইরে অতিথি হাজির হলে কী পরিস্থিতি দাঁড়াবে, তা নিয়ে আশঙ্কায় বিধায়ক ও তাঁর পরিবার। সামাল দেওয়া যাবে তো, চিন্তায় বিধায়কের দলবল। চিন্তায় বসিরহাট পুলিশ। কাল কি হবে?
]]>মিশরের ওমর নবিল রাশাদ এলহুসেইনিকে পাকা কথা দেওয়ার পর হঠাৎ কী এমন হল যে তড়িঘড়ি মায়ামিতে ছুটি কাটাতে যাওয়া সোনি নোর্দিকে চুক্তিপত্র পাঠাতে গেলেন মোহনবাগান ক্লাব কর্তারা? মিশরের তারকা ফুটবলার যে পজিশনে খেলে, সোনি নোর্দিও ঠিক ওই একই পজিশনের ফুটবলার।
কোচ শংকরলাল চক্রবর্তী ঠিক করেই নিয়েছিলেন, ষষ্ঠ বিদেশির জায়গায় একজন ভাল মানের বিদেশি ডিফেন্ডার নেবেন। সেই মতো কথাবার্তাও চলছিল বেশ কয়েকজন বিদেশির সঙ্গে। হঠাৎই তাল কাটে সোনির করা ফেসবুকের একটি পোস্টে। সেখানে আবেগমথিত সোনি দাবি করে, মোহনবাগান কর্তৃপক্ষ তাকে এই মরসুমের জন্য আগে আশ্বাস দিলেও আর যোগাযোগ করেননি। আর এতেই উদ্বেল হয়ে ওঠে মোহনজনতা।
আর ঠিক এখানেই আবেগের কাছে হার মানেন সদ্য নির্বাচিত সচিব স্বপনসাধন (টুটু) বসু । নিজেই দায়িত্ব নিয়ে রাজি করান কোচ শংকরলাল চক্রবর্তীকে। আর সোনিও রাজি হয়ে যায় মেডিক্যাল পরীক্ষা দিতে। তবে যতোই মেডিক্যাল পরীক্ষার কথা বলা হোক না কেনও, সেটা যে একরকম আই-ওয়াশ, তা ভালোই জানে মোহনবাগান সমর্থক থেকে শুরু করে সোনি নোর্দি নিজেও।
বেশ কয়েক বছর কলকাতা ময়দানে খেলে চতুর হাইতিয়ান বুঝে গিয়েছে, এখানে সমর্থকদের আবেগের কাছে বহু ক্ষেত্রেই আত্মসমর্পণ করেন ক্লাব কর্তৃপক্ষ। তাই মায়ামিতে ছুটি কাটাতে গেলেও, সে যে অপারেশনের পর শারীরিক দিক দিয়ে একশো শতাংশ ফিট তা প্রমাণ করতে উঠে পড়ে লেগে যায় নিয়মিত নিজের শারীরিক কসরতের ভিডিও পোস্ট করে।
মেসির দেশে অপারেশন করে হাইতিয়ান যে সম্পূর্ণরূপে চোটমুক্ত তা প্রমাণিত করার চেষ্টা করতে থাকে প্রতিনিয়ত। বিশেষ করে যখন দেখে, ক্লাব কর্তৃপক্ষ তার সঙ্গে আর যোগাযোগ করা একরকম বন্ধই করে দিয়েছে।
এখন দেখা যাক, চিকিৎসাশাস্ত্র কী বলছে সোনির এই চোটের বিষয়ে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক অস্থিবিশারদ The News বাংলাকে জানিয়েছেন, “সোনির বাঁ গোড়ালিতে চোটের কারণে অস্ত্রপ্রচার করেছেন আর্জেন্টিনার এক শল্যচিকিৎসক। আর্জেন্টিনার চিকিৎসা বিজ্ঞান যে ভারতীয় চিকিৎসা ব্যবস্থার চেয়ে অনেক উন্নত তা মেনে নেওয়ার কোনও কারণ নেই”।
“ক্রিকেট হলে বলতে দ্বিধা করতাম না, সোনি আবার নিজস্ব ফর্ম ফিরে পাবে। কিন্তু যেহেতু খেলার নাম ফুটবল, যেখানে একজন মাঝমাঠের ফুটবলারকে একই গতিতে খুব কম করে দশ থেকে বারো মাইল দৌঁড়তে হয়, সেই কারণেই বলছি, ওর পক্ষে আগের ফর্মে ফিরে আসা একরকম অসম্ভব’। জানিয়েছেন ওই অস্থি বিশারদ।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক প্রাক্তন এক মোহনবাগান ফুটবলার বলেন, “এটা কলকাতা বলেই সোনির পাতা ফাঁদে পা দিলেন টুটুবাবু। এবং নিতান্তই আবেগের বশবর্তী হয়ে। শুনলাম সাত মাসের জন্য রেকর্ড অর্থে সই করানো হচ্ছে এই ফুটবলারকে। টাকাটা জলে ফেলা হল বলেই আমার বিশ্বাস।”
মোহনবাগান কোচ, কর্তারাও জানে ওর চোটের জন্য ওকে নেওয়া ভুল হবে যার জন্য এত টালবাহানা করছিল এতদিন। মেডিক্যাল না দিয়ে দলে নেওয়া হবে না বলে জানিয়েও দেওয়া হয় ওকে। কিন্তু মোহনজনতার মাধ্যমে সোনির দেওয়া মাইন্ডগেমে শেষে হার মানতে হল গঙ্গাপাড়ের শতাব্দী প্রাচীন ক্লাবটিকে। তাই সোনি আবার কলকাতায় আসছে কিছু সমর্থকের আবেগ কাজে লাগিয়ে। যে-কোনও টাফ ট্যাকলারের সামনে সোনি যে গুটিয়ে রাখবে নিজেকে, তাই আশঙ্কা করা হচ্ছে।
আই লিগে বিদেশি ফুটবলারদের যে তালিকা এখনও অবধি The News বাংলার হাতে এসেছে, তাতে দেখা যাচ্ছে, শুধু ইস্টবেঙ্গল ক্লাবের স্প্যানিশ ডিফেন্ডার বোরখা গোমেজ পেরেজই নন, ওর মতোই বিধ্বংসী ডিফেন্ডার নিয়েছে এই বছর মিনার্ভা পঞ্জাব, চেন্নাই এফসি, কেরলের গোকুলাম এফসির মতো দলগুলি।
ইস্টবেঙ্গলের বোরখা, মিনার্ভার রোয়ান্ডান ডিফেন্ডার এইমব্লে নাবিমানা, চার্চিল ব্রাদার্সের ব্রাজিলিও ম্যাথাউস কাম্বুসি জাগেইরো ও নেরোকা এফসির প্রাক্তন ইস্টবেঙ্গলী ব্রাজিলিয়ান এদুয়ার্দোদের সামনে পড়লে হাইতিয়ান তারকা মিডফিল্ডার কী করেন, এখন সেটাই দেখার জন্য অপেক্ষা করে থাকবে ফুটবলপ্রেমী মানুষ। আশঙ্কার দোলাচলে বাগান সমর্থকরাও।
]]>