Jawaharlal Nehru – The News বাংলা https://thenewsbangla.com Bengali News Portal Tue, 09 Aug 2022 18:25:30 +0000 en-US hourly 1 https://wordpress.org/?v=6.7.2 https://thenewsbangla.com/wp-content/uploads/2018/09/cropped-cdacf4af-1517-4a2e-9115-8796fbc7217f-32x32.jpeg Jawaharlal Nehru – The News বাংলা https://thenewsbangla.com 32 32 বেমালুম উধাও হয়ে যান শ্যামাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায়-কে ইঞ্জেকশন দেওয়া নার্স রাজদুলারী টিকু https://thenewsbangla.com/nurse-rajdulari-tiku-who-injected-shyama-prasad-mukherjee-goes-missing/ Thu, 23 Jun 2022 06:19:56 +0000 https://www.thenewsbangla.com/?p=15678 বেমালুম উধাও হয়ে যান; শ্যামাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায়-কে ইঞ্জেকশন দেওয়া নার্স রাজদুলারী টিকু। শ্যামাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায়, হিন্দু মহাসভার অপ্রতিদ্বন্দ্বী নেতা; এবং জনসংঘ দলের প্রতিষ্ঠাতা। তাঁর রহস্যজনক মৃত্যু; আজও ভারতবাসীর মনে অনেক প্রশ্নের জন্ম দেয়। জওহরলাল নেহেরুর আমলে, কাশ্মীরে শেখ আবদুল্লার হাতে ব’ন্দি অবস্থায়; শ্যামাপ্রসাদের মৃত্যুর কারণ আজও ভারতবাসীর কাছে রহস্য। কাশ্মীরে জওহরলাল নেহেরু ও শেখ আবদুল্লার পুলিশ কাস্টডিতে; অদ্ভুতভাবে মৃ’ত্যু হয় শ্যামাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায়ের। আর অনেকটাই নেতাজী সুভাষ চন্দ্র বসুর মত উধাও হয়ে গিয়েছিলেন; শ্যামাপ্রসাদকে শেষ ইঞ্জেকশন দেওয়া নার্স রাজদুলারী টিকু।

কাশ্মীর উপত্যকার সু’ন্নী মু’সলিমদের একটি অংশের নেতা; শেখ আবদুল্লার সঙ্গে ভারতের প্রথম প্রধানমন্ত্রী নেহরুর দারুণ সখ্যতা গড়ে ওঠে। শেখ আবদুল্লার আবদারে, ভারতীয় সংবিধানে ৩৭০ ধারাটি ঢোকাতে; উঠে পরে লাগেন নেহেরু। এই ধারা অনুযায়ী কাশ্মীরে থাকবে আলাদা সংবিধান, আলাদা পতাকা; ভারতবর্ষের অন্যান্য অংশের মানুষ এখানে জমি কিনে থাকতে পর্যন্ত পারবেন না; কোন কাশ্মীরি মেয়েকে বিয়েও করতে পারবে না।

তখনও বাবাসাহেব আম্বেদকরের নেতৃত্বে সংবিধান সভা; সংবিধান রচনার কাজ করছে। আম্বেদকর দেশের অ’খণ্ডতা বিরোধী, জাতীয় স্বা’র্থবিরোধী এই কা’লাকানুন; সংবিধানে ঢোকাতে পরিষ্কার অস্বীকার করেন। তখন নেহরু ঘুরপথে সংসদ হয়ে, এই আইনকে পাশ করিয়ে; সংবিধানে ঢোকাতে বাধ্য করেন। নেহরুর প্রশ্রয়ে ন্যাশনাল কনফারেন্স-এর নেতা শেখ আবদুল্লা; বাদশাহ-র মতো কাশ্মীর শাসন শুরু করেন। ১৯৪৮ সালের ১৭ মার্চ নেহরুর আশীর্বাদ ও সমর্থন নিয়ে; তিনি নিজেকে কাশ্মীরের প্রধানমন্ত্রী হিসাবে ঘোষণা করলেন, মুখ্যমন্ত্রী নয়।

১৯৫২ সাল নাগাদ অবস্থাটা এরকম দাঁড়াল যে, ভারত রাষ্ট্র, জম্মু-কাশ্মীরকে যার অবিচ্ছিন্ন অংশ বলে মনে করা হচ্ছে; দুজন প্রধানমন্ত্রী, নেহরু ও আবদুল্লা; দুজন রাষ্ট্রপ্রধান, ভারতের রাষ্ট্রপতি ও কাশ্মীরের সদর-ই-রিয়াসৎ; দুটি সংবিধান, তার মধ্যে কাশ্মীরেরটি তখনও লিখিত হচ্ছে ও দুটি পতাকা। দেশের এই অসম্মানের বিরুদ্ধেই শ্যামাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায় ঘোষণা করেন; “এক দেশ মে দো বিধান, দো প্রধান ঔর দো নিশান নেহি চলেঙ্গে’; এক দেশের মধ্যে দুরকম সংবিধান, দুই প্রধানমন্ত্রী ও দুই পতাকা চলবে না।

আরও পড়ুনঃ বাংলার বাঘের ছেলে, শ্যামাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায়ের পশ্চিমবঙ্গ তৈরির ভূমিকার কথা জানুন ও জানান

ইতিমধ্যেই গোঁ’ড়া সু’ন্নী শেখ আবদুল্লা-র সা’ম্প্রদায়িক ও পক্ষ’পাতদুষ্ট শাসনের ফলে; জম্মু-কাশ্মীর-লাদাখ অঞ্চলের কাশ্মীরি পণ্ডিত, ডোগরা হিন্দু, বৌদ্ধ, শিখ, শিয়া মুসলিম ও বিভিন্ন উপজাতীয় মু’সলিম জনগোষ্ঠী সবাই তিতিবিরক্ত হয়ে উঠেছিল। জম্মুর অবিসংবাদিত নেতা প্রেমনাথ ডোগরা-র নেতৃত্বাধীন জম্মু-কাশ্মীর প্রজা পরিষদের ওপর; শেখ আবদুল্লার পুলিশ ভয়াবহ দ’মনপী’ড়ন, হ’ত্যা, নারী ধ’র্ষণ নামিয়ে আনে। লড়াই শুরু করে কাশ্মীরের হিন্দুরা; তাঁরা ভারতীয় সংবিধান ছাড়া কিছুই মানতে রাজি ছিলেন না।

এই ন্যায্য দাবীকে সমর্থন জানাতেই, ১৯৫৩ সালের ১১ মে পারমিট ছাড়াই; (তখন জম্মু-কাশ্মীরে ঢুকতে ভারতীয়দের পারমিট করাতে হত) জম্মু-কাশ্মীরে ঢুকতে গিয়ে জম্মুর মাধোপুর সীমান্তে শেখ আবদুল্লা-র পুলিশ শ্যামাপ্রসাদকে গ্রেফতার করে। সেখান থেকে তাঁকে ডাল লেকের তীরে; একটি ছোট্ট কুটিরে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে বিনা বিচারে তাঁকে প্রায় ৪০ দিন, আটক করে রাখার পর; কাশ্মীরের একটি হাসপাতালে খুবই রহস্যজনকভাবে ১৯৫৩ সালের ২৩ জুন ভোর ৩টা ৪০ মিনিটে মাত্র ৫১ বছর বয়সে শ্যামাপ্রসাদ শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন।

একথা পরে প্রমাণ হয়েছিল যে, ভারত সরকার বিনা অনুমতিতে; কাশ্মীর প্রবেশের জন্য তাঁকে গ্রেফতার করেনি। আসলে প্রধানমন্ত্রী নেহরু ভয় পেয়েছিলেন। যদি তাঁর সবচেয়ে বড় প্রতিদ্বন্দ্বী কাশ্মীরে ঢুকে; জনসাধারণের কাছে প্রকৃত সত্যটা তুলে। তাহলে চরম বিপদ। বিশেষ করে জনরোষের কবলে পড়বেন তিনি। অতএব তাঁরই নির্দেশে কাশ্মীর সরকার; শ্যামাপ্রসাদকে গ্রেফতার করে জন নিরাপত্তা আইনে।

গ্রেফতার করার পরে শ্যামাপ্রসাদকে নিয়ে আসা হয়; কাশ্মীর সেন্ট্রাল জেলে। পরে হঠাৎ তাঁকে নিয়ে যাওয়া হয় জঙ্গলের মধ্যে অবস্থিত একটি কুটিরে। শ্যামাপ্রসাদের অপরাধ ছিল, তিনি কাশ্মীরের অভ্যন্তরে প্রবেশ করে জানতে চেয়েছিলেন; কাশ্মীর-বাসীরা কী চান। কাশ্মীর-বাসীরা কেমন আছেন। প্রয়োজনে তাদের সঙ্গে নিয়েই শুরু করবেন জন আন্দোলন; নেহরু তা মেনে নিতে পারলেন না। অগত্যা শ্যামাপ্রসাদ ও তার দুই সঙ্গীকে একরাতের জন্য, শ্রীনগর সেন্ট্রাল জেলে রাখলেও; পরদিনই তাদের নিয়ে যাওয়া হল এক অজানা জায়গায়। ডাল লেক তীরবর্তী পাহাড়ের খাড়াই চূড়ায় এক ছোট্ট কুটিরে; চারপাশে কোনো বসতি নেই; কোনও চিকিৎসালয় নেই।

কাশ্মীর তাঁর দেখাশনার দায়িত্বে থাকা নার্স রাজদুলারী টিক্কু পরে জানান; সেদিন গভীর রাতে ডাক্তারের নির্দেশ মতো তিনি একটি ইঞ্জেকশন শ্যামাপ্রসাদকে দেওয়ার পর তিনি প্রচণ্ড ছটফট আর চিৎকার করতে লাগলেন, ‘জ্বল যাতা হ্যায়, হামকো জ্বল রাহা হ্যায়’। তারপরেই শ্যামাপ্রসাদ তন্দ্রাচ্ছন্ন হয়ে পড়েন ও সব শেষ হয়ে যায়। মৃত্যুর অফিসিয়াল কারণ; হার্ট অ্যা’টাক।

আরও পড়ুনঃ কলকাতা জানতেই পারেনি, তার ‘পাগল প্রেমিক’ ছেড়ে চলে গেল চিরবিদায়ে

২৩ জুন সকালেও ব্যারিস্টার ত্রিবেদী; সুস্থই দেখে গেলেন শ্যামাপ্রসাদকে। দু-একদিনের মধ্যেই হাসপাতাল থেকে; ছাড়া পেয়ে যাবেন শ্যামাপ্রসাদ; এমনটাই বলা হল। ঐদিনই ভোর পৌনে চারটের সময় ব্যারিস্টার ত্রিবেদীকে খবর দেওয়া হল; শ্যামাপ্রসাদের অবস্থা ভালো নয়। গুরু দত্ত বেদ, টেকচাঁদ, পন্ডিত প্রেমনাথ ডোগরা প্রমুখকে সঙ্গে নিয়ে; ব্যারিস্টার ত্রিবেদী যখন হাসপাতালে পৌঁছলেন ততক্ষণে সব শেষ। হাসপাতালের বক্তব্য ৩.৪০ মিনিটেই মারা গেছেন শ্যামাপ্রসাদ। কিন্তু কীভাবে? কেন?

নার্সের বয়ান অনুযায়ী, ‘যন্ত্রণায় কাতর শ্যামাপ্রসাদকে ইঞ্জেকশন রেডি করে দিয়েছিলেন চিকিত্‍সক; সেই ইঞ্জেকশন শ্যামাপ্রসাদের শরীরে পুশ করেছিলেন নার্স রাজদুলারী টিকু। তারপরেই ছটফট করতে করতে মারা যান; বাংলা ও হিন্দুদের রক্ষাকর্তা শ্যামাপ্রসাদ। শ্যামাপ্রসাদের মৃত্যুর পর কাশ্মীরে গিয়ে, নার্স রাজদুলারির সঙ্গে দেখা করেছিলেন; শ্যামাপ্রসাদের কন্যা সবিতা এবং তাঁর স্বামী নিশীথ। পরিচয় গোপন করেই তারা দেখে এসেছিলেন; পাহাড়ি জঙ্গলের মধ্যে অবস্থিত সেই কুটির, যেখানে বন্দি করে রাখা হয়েছিল শ্যামাপ্রসাদকে।

তারপর অনেক অনুসন্ধান করে পৌঁছেছিলেন রাজদুলারীর কাছে। রাজদুলারী সব সত্য ফাঁস করে দিয়ে; ডুকরে কেঁদে উঠেছিলেন। বলেছিলেন, “আমি পাপ করেছি, মহাপাপ”। শ্যামাপ্রসাদের মেয়ে সবিতার চোখের জল; তাকে সত্য বলতে বাধ্য করে। তারপরই তিনি নিখোঁজ হয়ে যান; আর তাঁর কোন খোঁজ পাওয়া যায়নি। পরদিন সেই বাড়িতে গিয়ে সবিতাদেবী; আর রাজদুলারীকে দেখতে পাননি। আজও তিনি নিখোঁজ; কেউ জানে না তিনি কোথায়। যেমন নিখোঁজ শ্যামাপ্রসাদের গুরুত্বপূর্ণ ডায়েরি; প্রেসক্রিপশন এবং সেই ইনজেকশনের অ্যাম্পুলটিও।

শুধু সরকারি সত্য হিসেবে বেঁচে আছে; হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে শ্যামাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায়ের জীবনাবসান। রহস্যজনক ভাবে, বেমালুম উধাও হয়ে যান; শ্যামাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায়-কে শেষ ইঞ্জেকশন দেওয়া নার্স রাজদুলারী টিকু। সারা দেশব্যাপী শ্যামাপ্রসাদের মৃত্যু রহস্যের তদন্ত দাবী করা হলেও; কোন এক অজ্ঞাত কারণে প্রধানমন্ত্রী নেহরু কোনরকম তদন্ত করাতে রাজী হলেন না।

শ্যামাপ্রসাদের মা যোগমায়া দেবী একটি চিঠিতে নেহরুকে লেখেন যে; “আপনি সত্যের মুখোমুখি হতে ভয় পাচ্ছেন। আমি মনে করি আমার পুত্রের অকালমৃ’ত্যুর জন্য; জম্মু-কাশ্মীর সরকার দায়ী। আমি আপনার বিরুদ্ধে এই অভিযোগ করছি যে; এই যো’গসাজসে আপনারাও আছেন। কিন্তু সত্য একদিন উদ্‌ঘাটিত হবেই; ও এর জন্য আপনাকে দেশের মানুষ ও ঈশ্বরের মুখোমুখি হতে হবে”।

]]>
জনগণকে বোকা বানিয়ে নেহেরুর পরিবারতন্ত্রের পথেই দেশের অধিকাংশ রাজনীতিবিদ https://thenewsbangla.com/indian-politicians-followed-the-path-of-jawaharlal-nehru-on-family-rules/ Wed, 08 May 2019 16:20:16 +0000 https://www.thenewsbangla.com/?p=12623 মুখে নেহেরু পরিবারের তুমুল সমালোচনা; কিন্তু কাজে সবাই সেই পরিবারতন্ত্রেরই অন্ধ সমর্থক। এই বিষয়ে ভারতের সমস্ত রাজনৈতিক দলের ‘শিক্ষাগুরু’ সেই জওহরলাল নেহেরু। শুনতে অবাক লাগলেও এটাই সত্যি। নেহেরু পরিবারকে সমালোচনা; অথচ ভারতে সবাই সেই পরিবারতন্ত্রের পক্ষেই।

পুরসভা থেকে রাজ্য হয়ে দেশ। নেহেরু পরিবারের মতই; সবাই চায় পরিবারতন্ত্র। মুখে কিন্তু নেহেরু পরিবারের তুমুল সমালোচনা। কারণ নেহেরু পরিবার; ভারতে পরিবারতন্ত্রের সূচনা করেছে। জওহরলাল নেহেরু; ইন্দিরা গান্ধী; রাজীব গান্ধী; সনিয়া গান্ধী; রাহুল গান্ধী; বংশপরম্পরায় কংগ্রেসে পরিবারতন্ত্র চলেছে।

সেই পরিবারতন্ত্র এখনও চলছে। আর তার তুমুল সমালোচনা করে এসেছে; কংগ্রেস বিরোধী সব রাজনৈতিক দল। কংগ্রেসকে ‘নেহেরু-গান্ধী পরিবারের লিমিটেড কোম্পানী’; বলেছেন মোদী-অমিত শাহ। কিন্তু মুখে কংগ্রেস পরিবারতন্ত্রের বিরুদ্ধে বললেও; কাজে সেই জওহরলাল নেহেরুকেই অন্ধ অনুসরণ করছে ভারতের সমস্ত রাজনৈতিক দল।

তেলেঙ্গানায়; তেলেঙ্গানা রাষ্ট্রীয় সমিতির অবস্থা দেখুন। মুখ্যমন্ত্রী কে চন্দ্রশেখর রাও-র মন্ত্রিসভার; একাধিক মন্ত্রী মুখ্যমন্ত্রীর আত্মীয়। তাঁর প্রায় সব আত্মীয়ই বিভিন্ন পদের মাথায়। চন্দ্রশেখরের ছেলে কে রামা রাও; রাজ্যের তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রী। রিগেশন, মার্কেটিং এবং লেজিসলেটিভ অ্যাফেয়ার্স মন্ত্রী; টি হরিশ রাও চন্দ্রশেখর রাওয়ের ভাইপো। শুধু ছেলে ভাইপোই নন। মেয়ে কবিতাও সাংসদ। এছাড়াও আরও অনেক আত্মীয়কে; বিভিন্ন পদের মাথায় বসিয়ে নেহেরু-গান্ধী পরিবারের পরিবারতন্ত্রের সুযোগ্য বাহক তিনি।

মধ্যপ্রদেশের দিকে তাকান। একসময় মুখ্যমন্ত্রী শিবরাজ সিং চৌহানের পাশাপাশি; মধ্যপ্রদেশে যার বিরুদ্ধে ডাম্পার দুর্নীতি নিয়ে সরব হয়েছিল কংগ্রেস; সেই সঞ্জয় সিং মাসানিকে বিধানসভা নির্বাচনে টিকিট দিয়েছিলেন রাহুল গান্ধী। সবচেয়ে বড় কথা; সঞ্জয় সিং মাসানি আর কেউ নন; খোদ বিদায়ী মুখ্যমন্ত্রী শিবরাজ সিং চৌহানের শ্যালক।

এখানেও কংগ্রেসকে টেক্কা দিচ্ছে বিজেপি। বিজেপি নেতা কৈলাস বিজয়বর্গীয়র পুত্র আকাশকে; টিকিট দিয়েছিল বিজেপি। অটলবিহারী বাজপেয়ির ভাইপো অনুপ মিশ্রকেও; মধ্যপ্রদেশে প্রার্থী করেছিল বিজেপি। মধ্যপ্রদেশের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বাবুলাল গৌড়ের পুত্রবধূ কৃষ্ণাও; বিজেপি প্রার্থী ছিলেন। রাজনৈতিক মহলে চর্চা; যে বিজেপি পরিবারতন্ত্র নিয়ে কংগ্রেসকে কটাক্ষ করে; সেই বিজেপিই মধ্যপ্রদেশে একই কাজ করছে!

তবে নেহেরু গান্ধী পরিবারতন্ত্রকেও টেক্কা দিয়েছেন; বর্তমানের ‘নেতাজী’ মুলায়ম সিংহ যাদব। যাদব পরিবারের কর্তা প্রথম থেকেই সমাজবাদী পার্টির জাতীয় সভাপতি। সেই পদ এখন গিয়েছে ছেলের দখলে। মুলায়ম নিজে দুদফায় রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী থেকেছেন। এখন আজমগড়ের বিদায়ী সাংসদ। বড় ছেলে অখিলেশ যাদব; ২০০০ সালে কনৌজ থেকে প্রথমবার সাংসদ। এখন দলের জাতীয় সভাপতি ও উত্তরপ্রদেশের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী।

বড় বউমা ডিম্পল যাদব সাংসদ। ছোট ছেলে প্রতীক যাদব এর স্ত্রী অপর্ণা যাদবও বিধায়ক। বড় ভাই শিবপাল যাদব; একসময় রাজ্যের ডি-ফ্যাক্টো মুখ্যমন্ত্রী; সেচ এবং পুর্ত দফতরের মন্ত্রী থেকেছেন। মুলায়ম ও শিবপালের সব আত্মীয় স্বজনই এমএলএ বা এমপি হয়ে পরিবারতন্ত্রের ফসল।

বিহারে লালুপ্রাসাদ যাদবের পরিবারতন্ত্রের কথা; কে না জানে। স্ত্রী রাবড়ি দেবীকে মুখ্যমন্ত্রী করা; ভারতের রাজনৈতিক ইতিহাসের সবচেয়ে বড় কমেডি বলেই মনে করা হয়। ছেলে, শ্যালক, মেয়ে মিশা ভারতী ছাড়াও আরও অনেক আত্মীয়; এমএলএ বা এমপি বা উচুঁ পদে। লালুর পরিবার নেহেরু-গান্ধী পরিবারের যোগ্য অনুসরণকারী।

জম্মু ও কাশ্মীরের মুফতি মহম্মদ সাঈদ-মেহবুবা মুফতি; ফারুক আবদুল্লা-ওমর আব্দুল্লা; মহারাষ্ট্রে বাল থাকারে-উদ্ধব থাকারে-আদিত্য থাকারে; প্রণব মুখোপাধ্যায়-অভিজিৎ মুখোপাধ্যায়; মানেকা-সঞ্জয় গান্ধীর ছেলে বরুণ গান্ধী। প্রাক্তন অর্থমন্ত্রী যশবন্ত সিনহা; রাজস্থানে মুখ্যমন্ত্রী বসুন্ধরা রাজে সিন্ধিয়া; প্রমোদ মহাজনের মেয়ে। কাকে ছেড়ে কার কথা শুনবেন! প্রাক্তন কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী পি চিদাম্বরম-পুত্র কার্তি পি চিদাম্বরম; প্রাক্তন অর্থমন্ত্রী যশবন্ত সিনহা-ছেলে জয়ন্ত সিনহা; রাজ্যসভার সাংসদ মুরলী দেওয়ারা-ছেলে প্রাক্তন কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী মিলিন্দ দেওয়ারা।

এনসিপি প্রধান প্রাক্তন কেন্দ্রীয় কৃষিমন্ত্রী শরদ পাওয়ার-মেয়ে সুপ্রিয়া পাওয়ার; প্রয়াত কংগ্রেস নেতা মাধবরাও সিন্ধিয়া-ছেলে জ্যোতিরাদিত্য সিন্ধিয়া; প্রয়াত নেতা রাজেশ পাইলট-ছেলে প্রাক্তন কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী সচিন পাইলট; প্রয়াত জিতেন্দ্র প্রসাদ-ছেলে জিনিত প্রসাদ; প্রাক্তন কেন্দ্রীয়মন্ত্রী তথা অভিনেতা সুনীল দত্ত-মেয়ে প্রিয়া দত্ত।

প্রমোদ মহাজন-মেয়ে পুনম মহাজন। দিল্লির প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী তথা বিজেপি নেতা সাহিব সিং বর্মা- ছেলে প্রবেশ। হরিয়ানার মুখ্যমন্ত্রী ভুপেন্দ্র সিং হুড্ডা-পুত্র দীপেন্দ্র। অসমের মুখ্যমন্ত্রী তরুণ গগৈ-ছেলে গৌরব। শীলা দীক্ষিত-ছেলে সন্দীপ।

ছত্তিশগড়ের মুখ্যমন্ত্রী রমন কুমার-ছেলে অভিষেক। উত্তরপ্রদেশের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী কল্যাণ সিং-ছেলে রাজবীর। হরিয়ানার প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী ভজনলাল- ছেলে কুলদীপ। হরিয়ানার প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী ওমপ্রকাশ চৌতলা-ছেলে দুষ্মন্ত চৌতলা। রামবিলাস পাশোয়ান-ছেলে চিরাগ। কর্ণাটকে জনতা দল(সেকুলার) প্রধান এইচ ডি দেবগৌড়া-তাঁর ছেলে এইচ ডি কুমারস্বামী এখন কংগ্রেসের সঙ্গে জোটে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী। কর্ণাটকে প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী এস বাঙ্গারাপ্পা-মেয়ে গীতা শিবরাজকুমার। উত্তরপ্রদেশে রাষ্ট্রীয় লোকদল প্রধান অজিত সিং-ছেলে জয়ন্ত চৌধুরি।

তামিলনাড়ুর করুণানিধি ও তাঁর পরিবার পরিবারতন্ত্রে; কোন অংশে নেহেরু-গান্ধি পরিবারের চেয়ে কম নয়। ওড়িশায় বিজু পট্টনায়েক পরিবার; পাঞ্জাবে অমরিন্দার সিং পরিবার; উত্তরপ্রদেশে মায়াবতীর ভাই-ভাইপো। উদাহরণ আরও আছে; আরও অনেক। ভারতে পরিবারতন্ত্রের এই গল্প শেষ হবার নয়। পরিবারতন্ত্রের ঘটনা লিখতে শুরু করলে; তা মহাভারত হয়ে যাবে। গোটা ভারতে সব রাজনৈতিক দলেরই একই হাল। জনগণকে গাধা বানিয়ে রেখে; চলছে সেই পরিবারতন্ত্রেরই পুনরাবৃত্তি।

বাংলার দিকে তাকালে সেখানেও সেই এক ইতিহাস। গানিখান চৌধুরী পরিবার যদি বাংলায় পরিবারতন্ত্রের শিক্ষক হয়; তাহলে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও সেই শিক্ষায় শিক্ষিত। পূর্ব মেদিনীপুরের অধিকারী পরিবার থেকে ‘ভাইপো’ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়; মুকুল রায়-শুভ্রাংশু, মানস ভুঁইয়া-তাঁর স্ত্রী গীতা রানী ভুঁইয়া; সবই তো মমতার হাত ধরে।

এমনকি বিধানসভা লোকসভা আসনগুলোর পর; কলকাতা পুরসভার কাউন্সিলর পদগুলোকেও এবার কুক্ষিগত করে নিচ্ছে তৃণমূল কংগ্রেস। যেদিকেই তাকাবেন সেই পরিবারতন্ত্র। সে অরূপ-স্বরূপ-জুঁই বিশ্বাস বলুন বা একদম হালে ১১৭ নম্বর ওয়ার্ডে ভোটে জেতা মেয়র পারিষদ তারক সিং এর ছেলে অমিত সিং। ইতিহাস সেই এক; পরিবারতন্ত্র। কংগ্রেসের প্রিয়রঞ্জন-দীপা দাশমুন্সী বা বামেদের ক্ষেত্রে লক্ষণ শেঠ- তমালিকা পণ্ড শেঠ সেই পরিবারতন্ত্রেরই উদাহরণ।

এটাই সত্য যে, মঞ্চে উঠে নেহেরু-গান্ধী পরিবারের পরিবারতন্ত্রের কথা বললেও; প্রায় সব রাজনৈতিক দলই জওহরলাল নেহেরুর দেখানো পথেই হাঁটতে পছন্দ করে। আর সেই পরিবারতন্ত্রের বিরুদ্ধে এই নেতাদেরই; ভাষণ শুনে আমরা হাততালিও দি। সেই হাততালিটা যে আমাদের বোকামোর জন্যই; সেটাই এখনও বুঝতে পারি নি আমরা। শিরদাঁড়াহীন ভারতবাসী; ‘রাম-দুর্গা-গরু-পাকিস্তান’ নিয়ে বোকার মত ব্যস্ত থাকা ভারতবাসী; আদৌ কি কোনদিন সেটা বুঝতে পারবে?

]]>
জনগণকে ‘গাধা’ বানিয়ে ‘শিক্ষাগুরু নেহেরু’র যোগ্য ছাত্র সব রাজনীতিবিদ https://thenewsbangla.com/making-the-people-donkey-all-the-politicians-of-india-qualified-students-of-education-guru-nehru/ Tue, 04 Dec 2018 05:14:44 +0000 https://www.thenewsbangla.com/?p=3472 The News বাংলা, কলকাতা: মুখে নেহেরু পরিবারের তুমুল সমালোচনা, কিন্তু কাজে সবাই সেই পরিবারতন্ত্রেরই অন্ধ সমর্থক। এই বিষয়ে ভারতের সমস্ত রাজনৈতিক দলের ‘শিক্ষাগুরু’ সেই জওহরলাল নেহেরু। শুনতে অবাক লাগলেও এটাই সত্যি। নেহেরু পরিবারকে সমালোচনা অথচ ভারতে সবাই সেই পরিবারতন্ত্রের পক্ষেই।

ভারতীয় রাজনীতিতে পরিবারতন্ত্র/The News বাংলা
ভারতীয় রাজনীতিতে পরিবারতন্ত্র/The News বাংলা

পুরসভা থেকে রাজ্য হয়ে দেশ। নেহেরু পরিবারের মতই সবাই চায় পরিবারতন্ত্র। মুখে কিন্তু নেহেরু পরিবারের তুমুল সমালোচনা। কারণ নেহেরু পরিবার ভারতে পরিবারতন্ত্রের সূচনা করেছে। জওহরলাল নেহেরু, ইন্দিরা গান্ধী, রাজীব গান্ধী, সনিয়া গান্ধী, রাহুল গান্ধী বংশপরম্পরায় কংগ্রেসে পরিবারতন্ত্র চলেছে।

আরও পড়ুনঃ পঞ্চায়েত ভোটে হিংসার পরেও লোকসভা ভোটে কম কেন্দ্রীয় বাহিনী বাংলায়
আরও পড়ুনঃ মোবাইলেই রাজনাথ সিং মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তুমুল কথা কাটাকাটি

সেই পরিবারতন্ত্র এখনও চলছে। আর তার তুমুল সমালোচনা করে এসেছে কংগ্রেস বিরোধী সব রাজনৈতিক দল। কংগ্রেসকে ‘নেহেরু-গান্ধী পরিবারের লিমিটেড কোম্পানী’ বলেছেন মোদী-অমিত শাহ। কিন্তু মুখে কংগ্রেস পরিবারতন্ত্রের বিরুদ্ধে বললেও কাজে সেই জওহরলাল নেহেরুকেই অন্ধ অনুসরণ করছে ভারতের সমস্ত রাজনৈতিক দল।

ভারতীয় রাজনীতিতে পরিবারতন্ত্র/The News বাংলা
ভারতীয় রাজনীতিতে পরিবারতন্ত্র/The News বাংলা

তেলেঙ্গানা নির্বাচন নিয়ে সরগরম রাজনৈতিক মহল। বিজেপির অবস্থা দেখুন। মুখ্যমন্ত্রী কে চন্দ্রশেখর রাও-র মন্ত্রিসভার একাধিক মন্ত্রী মুখ্যমন্ত্রীর আত্মীয়। তাঁর প্রায় সব আত্মীয়ই বিভিন্ন পদের মাথায়। চন্দ্রশেখরের ছেলে কে রামা রাও রাজ্যের তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রী। রিগেশন, মার্কেটিং এবং লেজিসলেটিভ অ্যাফেয়ার্স মন্ত্রী টি হরিশ রাও চন্দ্রশেখর রাওয়ের ভাইপো। শুধু ছেলে ভাইপোই নন। মেয়ে কবিতাও সাংসদ। এছাড়াও আরও অনেক আত্মীয়কে বিভিন্ন পদের মাথায় বসিয়ে নেহেরু-গান্ধী পরিবারের পরিবারতন্ত্রের সুযোগ্য বাহক তিনি।

আরও পড়ুনঃ মমতার স্বরাষ্ট্র সচিবের বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার মামলা দায়ের এক রোহিঙ্গার
আরও পড়ুনঃ নিয়ম মেনে ভারতের জাতীয় পতাকা তুলে রাখা যায় রাতেও

মধ্যপ্রদেশের দিকে তাকান। একসময় মুখ্যমন্ত্রী শিবরাজ সিং চৌহানের পাশাপাশি মধ্যপ্রদেশে যার বিরুদ্ধে ডাম্পার দুর্নীতি নিয়ে সরব হয়েছিল কংগ্রেস, সেই সঞ্জয় সিং মাসানিকে এবার বিধানসভা নির্বাচনে টিকিট দিলেন রাহুল গান্ধী। সবচেয়ে বড় কথা, সঞ্জয় সিং মাসানি আর কেউ নন, খোদ বিদায়ী মুখ্যমন্ত্রী শিবরাজ সিং চৌহানের শ্যালক।

এখানেও কংগ্রেসকে টেক্কা দিচ্ছে বিজেপি। বিজেপি নেতা কৈলাস বিজয়বর্গীয়র পুত্র আকাশকে টিকিট দিয়েছে বিজেপি। অটলবিহারী বাজপেয়ির ভাইপো অনুপ মিশ্রকেও এবার মধ্যপ্রদেশে প্রার্থী করেছে বিজেপি। মধ্যপ্রদেশের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বাবুলাল গৌড়ের পুত্রবধূ কৃষ্ণাও এবার বিজেপি প্রার্থী। রাজনৈতিক মহলে চর্চা, যে বিজেপি পরিবারতন্ত্র নিয়ে কংগ্রেসকে কটাক্ষ করে সেই বিজেপিই মধ্যপ্রদেশে একই কাজ করছে!

ভারতীয় রাজনীতিতে পরিবারতন্ত্র/The News বাংলা
ভারতীয় রাজনীতিতে পরিবারতন্ত্র/The News বাংলা

তবে নেহেরু গান্ধী পরিবারতন্ত্রকেও টেক্কা দিয়েছেন বর্তমানের ‘নেতাজী’ মুলায়ম সিংহ যাদব। যাদব পরিবারের কর্তা প্রথম থেকেই সমাজবাদী পার্টির জাতীয় সভাপতি। সেই পদ এখন গিয়েছে ছেলের দখলে। মুলায়ম নিজে দুদফায় রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী থেকেছেন। এখন আজমগড়ের সাংসদ। বড় ছেলে অখিলেশ যাদব ২০০০ সালে কনৌজ থেকে প্রথমবার সাংসদ। এখন দলের জাতীয় সভাপতি ও উত্তরপ্রদেশের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী।

বড় বউমা ডিম্পল যাদব সাংসদ। ছোট ছেলে প্রতীক যাদব এর স্ত্রী অপর্ণা যাদবও বিধায়ক। বড় ভাই শিবপাল যাদব, একসময় রাজ্যের ডি-ফ্যাক্টো মুখ্যমন্ত্রী, সেচ এবং পুর্ত দফতরের মন্ত্রী থেকেছেন। মুলায়ম ও শিবপালের সব আত্মীয় স্বজনই এমএলএ বা এমপি হয়ে পরিবারতন্ত্রের ফসল।

ভারতীয় রাজনীতিতে পরিবারতন্ত্র/The News বাংলা
ভারতীয় রাজনীতিতে পরিবারতন্ত্র/The News বাংলা

বিহারে লালুপ্রাসাদ যাদবের পরিবারতন্ত্রের কথা কে না জানে। স্ত্রী রাবড়ি দেবীকে মুখ্যমন্ত্রী করা ভারতের রাজনৈতিক ইতিহাসের সবচেয়ে বড় কমেডি বলেই মনে করা হয়। ছেলে, শ্যালক, মেয়ে মিশা ভারতী ছাড়াও আরও অনেক আত্মীয় এমএলএ বা এমপি বা উচুঁ পদে। লালুর পরিবার নেহেরু-গান্ধী পরিবারের যোগ্য অনুসরণকারী।

জম্মু ও কাশ্মীরের মুফতি মহম্মদ সাঈদ-মেহবুবা মুফতি। ফারুক আবদুল্লা-ওমর আব্দুল্লা। মহারাষ্ট্রে বাল থাকারে-উদ্ধব থাকারে-আদিত্য থাকারে, প্রণব মুখোপাধ্যায়-অভিজিৎ মুখোপাধ্যায়। মানেকা-সঞ্জয় গান্ধীর ছেলে বরুণ গান্ধী। প্রাক্তন অর্থমন্ত্রী যশবন্ত সিনহা, রাজস্থানে মুখ্যমন্ত্রী বসুন্ধরা রাজে সিন্ধিয়া, প্রমোদ মহাজনের মেয়ে। কাকে ছেড়ে কার কথা শুনবেন!! প্রাক্তন কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী পি চিদাম্বরম-পুত্র কার্তি পি চিদাম্বরম। প্রাক্তন অর্থমন্ত্রী যশবন্ত সিনহা-ছেলে জয়ন্ত সিনহা। রাজ্যসভার সাংসদ মুরলী দেওয়ারা-ছেলে প্রাক্তন কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী মিলিন্দ দেওয়ারা।

আরও পড়ুনঃ বিরোধীদের অভিযোগ ও মমতা প্রশাসনের রিপোর্ট নিতে বাংলায় নির্বাচন কমিশন
আরও পড়ুনঃ মোবাইলেই রাজনাথ সিং মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তুমুল কথা কাটাকাটি

এনসিপি প্রধান প্রাক্তন কেন্দ্রীয় কৃষিমন্ত্রী শরদ পাওয়ার-মেয়ে সুপ্রিয়া পাওয়ার। প্রয়াত কংগ্রেস নেতা মাধবরাও সিন্ধিয়া-ছেলে জ্যোতিরাদিত্য সিন্ধিয়া। প্রয়াত নেতা রাজেশ পাইলট-ছেলে প্রাক্তন কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী সচিন পাইলট। প্রয়াত জিতেন্দ্র প্রসাদ-ছেলে জিনিত প্রসাদ। প্রাক্তন কেন্দ্রীয়মন্ত্রী তথা অভিনেতা সুনীল দত্ত-মেয়ে প্রিয়া দত্ত। প্রমোদ মহাজন-মেয়ে পুনম মহাজন। দিল্লির প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী তথা বিজেপি নেতা সাহিব সিং বর্মা- ছেলে প্রবেশ। হরিয়ানার মুখ্যমন্ত্রী ভুপেন্দ্র সিং হুড্ডা-পুত্র দীপেন্দ্র। অসমের মুখ্যমন্ত্রী তরুণ গগৈ-ছেলে গৌরব। শীলা দীক্ষিত-ছেলে সন্দীপ।

আরও পড়ুনঃ নিয়ম মেনে ভারতের জাতীয় পতাকা তুলে রাখা যায় রাতেও
আরও পড়ুনঃ জওহরলাল নেহেরুর গলায় মালা দিয়ে ৬০ বছর পরেও একঘরে ‘নেহেরুর বউ’

ছত্তিশগড়ের মুখ্যমন্ত্রী রমন কুমার- ছেলে অভিষেক। উত্তরপ্রদেশের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী কল্যাণ সিং-ছেলে রাজবীর। হরিয়ানার প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী ভজনলাল- ছেলে কুলদীপ। হরিয়ানার প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী ওমপ্রকাশ চৌতলা-ছেলে দুষ্মন্ত চৌতলা। রামবিলাস পাশোয়ান-ছেলে চিরাগ। কর্ণাটকে জনতা দল(সেকুলার) প্রধান এইচ ডি দেবগৌড়া-তাঁর ছেলে এইচ ডি কুমারস্বামী এখন কংগ্রেসের সঙ্গে জোটে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী। কর্ণাটকে প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী এস বাঙ্গারাপ্পা-মেয়ে গীতা শিবরাজকুমার। উত্তরপ্রদেশে রাষ্ট্রীয় লোকদল প্রধান অজিত সিং-ছেলে জয়ন্ত চৌধুরি।

তামিলনাড়ুর করুণানিধি ও তাঁর পরিবার পরিবারতন্ত্রে কোন অংশে নেহেরু-গান্ধি পরিবারের চেয়ে কম নয়। ওড়িশায় বিজু পট্টনায়েক পরিবার, পাঞ্জাবে অমরিন্দার সিং পরিবার, উত্তরপ্রদেশে মায়াবতীর ভাই-ভাইপো, উদাহরণ আরও আছে, আরও অনেক। ভারতে পরিবারতন্ত্রের এই গল্প শেষ হবার নয়। পরিবারতন্ত্রের ঘটনা লিখতে শুরু করলে তা মহাভারত হয়ে যাবে। গোটা ভারতে সব রাজনৈতিক দলেরই একই হাল। জনগণকে গাধা বানিয়ে রেখে চলছে সেই পরিবারতন্ত্রেরই পুনরাবৃত্তি।

ভারতীয় রাজনীতিতে পরিবারতন্ত্র/The News বাংলা
ভারতীয় রাজনীতিতে পরিবারতন্ত্র/The News বাংলা

বাংলার দিকে তাকালে সেখানেও সেই এক ইতিহাস। গানিখান চৌধুরী পরিবার যদি বাংলায় পরিবারতন্ত্রের শিক্ষক হয় তাহলে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও সেই শিক্ষায় শিক্ষিত। পূর্ব মেদিনীপুরের অধিকারী পরিবার থেকে ‘ভাইপো’ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়, মুকুল রায়-শুভ্রাংসু, মানস ভুঁইয়া-তাঁর স্ত্রী গীতা রানী ভুঁইয়া, সবই তো মমতার হাত ধরে।

এমনকি বিধানসভা লোকসভা আসনগুলোর পর কলকাতা পুরসভার কাউন্সিলর পদগুলোকেও এবার কুক্ষিগত করে নিচ্ছে তৃণমূল কংগ্রেস। যেদিকেই তাকাবেন সেই পরিবারতন্ত্র। সে অরূপ-স্বরূপ-জুঁই বিশ্বাস বলুন বা একদম হালে ১১৭ নম্বর ওয়ার্ডে ভোটে দাঁড়ানো মেয়র পারিষদ তারক সিং এর ছেলে অমিত সিং। ইতিহাস সেই এক। পরিবারতন্ত্র। কংগ্রেসের প্রিয়রঞ্জন-দীপা দাশমুন্সী বা বামেদের ক্ষেত্রে লক্ষণ শেঠ- তমালিকা পণ্ড শেঠ সেই পরিবারতন্ত্রেরই উদাহরণ।

আরও পড়ুনঃ আম দরবারে প্রকাশ্যে মহিলার ওড়না ধরে টান কংগ্রেস মুখ্যমন্ত্রীর
আরও পড়ুনঃ মাঠ দিল না রাজ্য, মোদীর সভা ও হেলিকপ্টারের জন্য ফসল ত্যাগ শিক্ষকের

এটাই সত্য যে, মঞ্চে উঠে নেহেরু-গান্ধী পরিবারের পরিবারতন্ত্রের কথা বললেও প্রায় সব রাজনৈতিক দলই জওহরলাল নেহেরুর দেখানো পথেই হাঁটতে পছন্দ করে। আর সেই পরিবারতন্ত্রের বিরুদ্ধে এই নেতাদেরই ভাষণ শুনে আমরা হাততালিও দি। সেই হাততালিটা যে আমাদের বোকামোর জন্যই, সেটাই এখনও বুঝতে পারি নি আমরা। শিরদাঁড়াহীন ভারতবাসী, ‘রাম-দুর্গা-গরু-পাকিস্তান’ নিয়ে বোকার মত ব্যস্ত থাকা ভারতবাসী আদৌ কি কোনদিন সেটা বুঝতে পারব?!

আপনার মোবাইলে বা কম্পিউটারে The News বাংলা পড়তে লাইক করুন আমাদের ফেসবুক পেজ।

]]>