Child Marriage – The News বাংলা https://thenewsbangla.com Bengali News Portal Tue, 08 Jan 2019 02:57:28 +0000 en-US hourly 1 https://wordpress.org/?v=6.7.2 https://thenewsbangla.com/wp-content/uploads/2018/09/cropped-cdacf4af-1517-4a2e-9115-8796fbc7217f-32x32.jpeg Child Marriage – The News বাংলা https://thenewsbangla.com 32 32 মেয়েকে স্কুলে ভর্তি করতে গেলেই বাবা মা-কে দিতে হবে মুচলেকা https://thenewsbangla.com/malda-dalla-chandra-mohan-high-school-take-initiative-to-prevent-child-marriage/ Tue, 08 Jan 2019 02:47:27 +0000 https://www.thenewsbangla.com/?p=5291 The News বাংলাঃ ছেলে হলে কোন অসুবিধা নেই, কিন্তু মেয়েকে স্কুলে ভর্তি করতে গেলেই বাবা মা-কে দিতে হবে মুচলেকা। অদ্ভুত ফরমান বাংলারই একটি স্কুলে। তবে এই ফরমানে খুশি অভিভাবকেরা। নজির মালদার একটি স্কুলে।

মেয়েকে স্কুলে ভর্তির ‘ফর্ম’ হাতে নিতেই অবাক অভিভাবকেরা। স্কুলে ভর্তি করাতে হলে দিতে হবে ‘মুচলেকা’! ভর্তির ফর্মেই উল্লেখ করা হয়েছে মুচলেকার বিষয়।

প্রত্যেক অভিভাবককে এই অঙ্গীকার করে মুচলেকা দিতে হচ্ছে যে, ‘মেয়ে প্রাপ্তবয়স্ক না হওয়া পর্যন্ত মেয়ের বিয়ে দেবেন না’। নাবালিকা বিবাহ ঠেকাতে রাজ্যের মধ্যে নজীরবিহীন উদ্যোগ মালদার একটি স্কুলে।

গত পাঁচ বছরে নাই নাই করে ৬০টিরও বেশী নাবালিকা বিয়ে রুখেছে এই স্কুল। প্রধানশিক্ষক থেকে সহ শিক্ষকরা কখনও ছুটে গিয়েছেন অভিভাবকদের কাছে। অনুনয়-বিনয়, কখনও হাতজোড় করে নাবালিকার মেয়ের বিয়ে রুখে ছাত্রীকে ফিরিয়ে এনেছেন স্কুলে। কখনও আবার অনুরোধে কাজ না হওয়ায় পুলিশ, প্রশাসনের সাহায্য নিয়ে ঠেকানো হয়েছে বিয়ের ব্যবস্থা।

পরিবর্তে জুটেছে হুমকি, তিরস্কার। কিন্তু, এরপরেও চোরাগোপ্তা বাল্যবিবাহ রোখা যায়নি। অনেক ছাত্রীর ‘সর্বনাশের’ খবর মিলেছে বিযে হয়ে যাওয়ার পরে। বিয়ে রুখতে গিয়ে শিক্ষকদের বেশ অভিজ্ঞতাও হয়েছে। বেশীর ভাগেরই বাবা, মা নিজেরাই অপ্ল বয়সে বিয়ের কুফল সম্পর্কে সচেতন নয়।

আরও পড়ুনঃ

বউ অদল বদল, বিকৃত যৌনাচারে ধর্ষণের অভিযোগ গৃহবধূর

EXCLUSIVE: সংখ্যালঘুদের ধর্মে সুড়সুড়ি দিয়ে প্রকাশ্যে ভারতের টাকার কালোবাজারি

EXCLUSIVE: নতুন বছরে সুখবর, রাজ্য সরকারি কর্মীরা পাচ্ছেন বকেয়া ডিএ

বিজেপি না তৃণমূল, পাহাড়ে মোর্চার জোট নিয়ে জল্পনা তুঙ্গে

কংগ্রেস ছেড়ে মমতার ‘মহানায়িকা’ এবার মোদীর বক্স অফিসে

তাই এবার আগে ভাগেই সতর্ক স্কুল। আশপাশের এলাকাকে ‘নাবালিকা বিয়ে শূন্য’ করার চ্যালেঞ্জ নিয়েছে মালদার দাল্লা চন্দ্রমোহন উচ্চ বিদ্যালয়। এজন্য পঞ্চম শ্রেনীতে ভর্তির ফর্মেই রাখা হয়েছে বিশেষ একটি কলাম। যাতে লেখা হয়েছে “আমি এই মর্মে মুচলেকা দিচ্ছি যে, আমার কন্যা প্রাপ্তবয়স্কা না হওয়া পর্যন্ত আমি তার বিবাহ দেব না”।

এই বয়ানেই প্রত্যেক ছাত্রীর বাবা, মাকে দিতে হবে মুচলেকা। এরপরেই মিলবে ভর্তির ছাড়পত্র। মালদার বাংলাদেশ সীমান্ত ঘেঁষা হবিবপুরের দাল্লা। স্থানীয় দাল্লা চন্দ্রমোহন উচ্চ বিদ্যালয়ে পড়াশুনা করে প্রায় এগারশো ছাত্রী। আশপাশের পার্বতীডাঙ্গা, আদ্রাঘাছি, পান্নাপুর, দাল্লা প্রভৃতি গ্রামের মেয়েরা উচ্চশিক্ষার জন্য এই স্কুলের ওপর নির্ভরশীল।

এলাকায় বসবাস মূলতঃ কৃষিজীবি ও আদিবাসী সম্প্রদায়ের। কয়েক বছর আগে পর্যন্ত মেয়েরা মাধ্যমিকের গণ্ডি পেরনোর আগেই পাত্র দেখে বিয়ে দিয়ে দেওয়াই ছিল এইসব গ্রামের দস্তুর। এর পেছনে কাজ করছিল দারিদ্র আর সচেতনতার অভাব। এই অবস্থা থেকেই নাবালিকা বিয়ে ঠেকানোর পণ করে স্কুল কর্তৃপক্ষ।

তাই এবার পঞ্চম শ্রেনীতে ভর্তির ফর্মেই আনা হয়েছে অভিনবত্ব। ভর্তির জন্য এমন মুচলেকা দেওয়ার ফরমানে খানিকটা বিব্রত হলেও বেশীরভাগ অভিভাবকই স্বাগত জানিয়েছেন স্কুল কর্তৃপক্ষের এই ভাবনাকে। প্রদীপ বর্মন, জয়ন্তী বিশ্বাস সহ অভিভাবকরা স্কুলের এই সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছেন।

দাল্লা চন্দ্রমোহন উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক জয়দেব লাহিড়ী জানিয়েছেন, বাল্যবিবাহের বিরুদ্ধে তাঁদের অভিযান জারি থাকবে। আর গ্রামবাসীদের সেই সচেতনতার অভাব দূর করতেই ভর্তির ফর্মেই মুচলেকার ব্যবস্থা করা হয়েছে।

আরও পড়ুনঃ

হিন্দুত্ববাদীদের নিশানা করতে মসজিদে পাথর ছুঁড়ে অশান্তি সৃষ্টির চেষ্টা, ধৃত সিপিএম নেতা

উচ্চবর্ণের গরীব হিন্দুদের জন্য সংরক্ষণ মোদীর, দেশ জুড়ে বিতর্ক

ভোরবেলায় শবরীমালা মন্দিরে ঢুকে ইতিহাস সৃষ্টি ‘মা দুর্গার’

দেশপ্রেম বাড়াতে স্কুলের রোল কলে এবার ‘জয় হিন্দ’ ও ‘জয় ভারত’

ফের গরু চোর সন্দেহে খুন, এবার ‘গোরক্ষকের’ নাম মুসলিম মিঁয়া

বর্তমানে এমন অনেক ছাত্রী রয়েছে যারা নিজেদের দৃঢ়়তায়, নয়তো স্কুলের তৎপড়তায় নিজেদের বিয়ে ভেঙেছেন। অনেকেই সহপাঠীদের চুপিসারে বিয়ের খবর সময়মতো স্কুলে পৌঁছে দিয়ে বিয়ে ঠেকিয়েছেন। অনেকের ক্ষেত্রেই নিজের বিয়ে ভেঙে দেওয়া সহজ ছিল না। এখন পঞ্চম শ্রেনীতেই মুচলেকার ব্যবস্থা হওয়ায় ভবিষ্যতের ছাত্রীদের নিরাপত্তার কথা ভেবে খুশী অভিভাবকরাও।

মালদহের জেলা বিদ্যালয় পরিদর্শক(মাধ্যমিক) তাপস বিশ্বাস বলেন, “আমরা সত্যিই জর্জরিত বাল্যবিবাহ নিয়ে। সেই জায়গায় চন্দ্রমোহন হাইস্কুলের ভাবনাটা দারুণ। এটা অন্য স্কুলেও করা যায় কি না দেখব”। জেলাশাসক কৌশিক ভট্টাচার্য বলেন, “দাল্লা স্কুলের কাজটা সত্যিই অভিনব। বাল্যবিবাহ রোধে আমরাও নতুন পদক্ষেপ নেওয়ার কথা ভাবছি”।

ভর্তির জন্য স্কুল মুচলেকা বাধ্যতামূলক করায় আলোড়ন পড়েছে এলাকায় । তবে নতুন ব্যবস্থায় সুফল মিলবে এমনই আশা স্কুল কর্তৃপক্ষের। নয়া ব্যবস্থা কতটা সফল হয় এখন তাঁরই প্রতীক্ষা। সফল হলে, মালদহের দাল্লা চন্দ্রমোহন হাইস্কুলের উদ্যোগকে মডেল হিসাবে গ্রহণ করতে পারে রাজ্য প্রশাসন ও শিক্ষা বিভাগ।

আপনার মোবাইলে বা কম্পিউটারে The News বাংলা পড়তে লাইক করুন আমাদের ফেসবুক পেজ।

]]>