আরও পড়ুন: আদিবাসী, দলিত না মুসলমান, বিজেপির গবেষণায় রামভক্ত হনুমানের জাত
ধর্মঘট ও ছুটির জাঁতাকলে পড়ে আগামী ছয় দিনের মধ্যে পাঁচদিন দেশে ব্যাঙ্কিং পরিষেবা বন্ধ থাকবে। প্রভাবিত হতে পারে এটিএম পরিষেবাও। এর জেরে চরম ভোগান্তির আশঙ্কা করছে সাধারণ মানুষ সহ শিল্পমহল। ভোগান্তির আশঙ্কায় গতকাল দেশের অনেক মেট্রো শহরের পাশাপাশি ছোটো শহরগুলিতেও এটিএম কাউন্টারগুলির সামনে দীর্ঘ লাইন চোখে পড়েছে।
আরও পড়ুন: মার্চে বন্ধ দেশের অর্ধেক এটিএম কি মোদীর নোটবন্দীর কুফল
শুক্রবার ২১ সেপ্টেম্বর ধর্মঘটের ডাক দিয়েছে এআইবিওসি বা অল ইন্ডিয়া ব্যাঙ্ক অফিসারস কনফেডারেশন। ব্যাঙ্ক আধিকারিকদের বেতন সংক্রান্ত দাবিদাওয়া নিয়ে এআইবিওসি এই ধর্মঘটের ডাক দিয়েছে। উল্লেখ্য, অল ইন্ডিয়া ব্যাঙ্ক অফিসারস কনফেডারেশন-র এই ধর্মঘটে দেশের প্রায় ৩ লক্ষ ২০ হাজার ব্যাঙ্ক আধিকারিক যোগ দেবেন।
আরও পড়ুন: মোদীর গেরুয়া রথকে আটকাতে পারল না মমতার সরকার
অল ইন্ডিয়া ব্যাঙ্ক অফিসারস কনফেডারেশন-র অ্যাসিস্ট্যান্ট জেনেরাল সেক্রেটারি সজল দাস বলেন, ‘বেতন সংস্কার নিয়ে আমরা সরকারের কাছে একাধিকবার দাবি জানিয়েছি কিন্তু গত ১৯ মাসে সরকারের তরফে এই বিষয়ে কোনও উদ্যোগ নেওয়া হয়নি। তাই বাধ্য হয়ে আমরা ২১ ডিসেম্বর ধর্মঘটে যাচ্ছি’।
আরও পড়ুনঃ ‘রাজনীতিতে টিকে থাকতে গেলে তেল দিতেই হবে’ বিস্ফোরক তৃণমূল সাংসদ
২১ ডিসেম্বরের ধর্মঘটের পরদিন ২২ ডিসেম্বর চতুর্থ শনিবার ও ২৩ ডিসেম্বর রবিবার হওয়ায় ব্যাঙ্ক বন্ধ থাকবে। তবে ২৪ ডিসেম্বর, সোমবার ব্যাঙ্ক খোলা থাকবে। ২৫ ডিসেম্বর বড়দিনের ছুটিতে ব্যাঙ্ক বন্ধ থাকবে। ২৬ ডিসেম্বর, বুধবার ধর্মঘটের ডাক দিয়েছে ইউএফবিইউ বা ইউনাইটেড ফোরাম অফ ব্যাঙ্ক ইউনিয়নস।
আরও পড়ুন: ২২ বছর পর ফের ভূস্বর্গে রাষ্ট্রপতি শাসন
ব্যাঙ্ককর্মীদের ৯টি সংগঠনের যৌথ মঞ্চ ইউনাইটেড ফোরাম অফ ব্যাঙ্ক ইউনিয়নস। ওইদিন ইউএফবিইউ-র ডাকে দেশের প্রায় ১০ লাখ ব্যাঙ্ককর্মী ধর্মঘটে যোগ দেবেন। ব্যাঙ্ক অফ বরোদা, দেনা ব্যাঙ্ক ও বিজয়া ব্যাঙ্ককে সংযুক্ত করার সরকারি সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে এই ধর্মঘটের ডাক দেওয়া হয়েছে।
আরও পড়ুনঃ EXCLUSIVE: কলকাতা থেকে পুলিশ ও ব্যবসায়ীদের টাকা যাচ্ছে জঙ্গিদের হাতে
বড়দিনের ছুটির এই মরসুমে এইভাবে দেখে শুনে অল ইন্ডিয়া ব্যাঙ্ক অফিসারস কনফেডারেশন ও ইউনাইটেড ফোরাম অফ ব্যাঙ্ক ইউনিয়নস ব্যাঙ্ক ধর্মঘটের ডাক দেওয়ায় ক্ষুব্ধ সাধারণ মানুষ। ক্ষুব্ধ দেশের শিল্প মহলও। তবে তাদের ধর্মঘটের রাস্তায় যাওয়া ছাড়া কোন রাস্তা ছিল না বলেই জানিয়েছেন ব্যাঙ্ক কর্মী ও অফিসারদের সংগঠনগুলি। শেষ পর্যন্ত বড়দিনের উৎসবের সময় ভোগান্তির শিকার হবে সেই সাধারণ মানুষ।
]]>আরও পড়ুনঃ গরু তুমি কার ? বিজেপির ‘গোমাতা’য় হাত কংগ্রেসের
এটিএমগুলির হার্ডওয়্যার ও সফটওয়্যার আপগ্রেডেশন করা বাধ্যতামূলক করা হয়ছে। অনেক আগেই নির্দেশিকা জারি হয়ে গেছে। সেই নির্দেশিকা অনুযায়ী, অপারেটিং সিস্টেম, টাকা গোনার পদ্ধতি, সরবরাহ সমস্ত প্রক্রিয়াই পাল্টাতে হবে। তাছাড়া এটিএমগুলিতে টাকা ভরার পদ্ধতিরও পরিবর্তন করতে বলা হয়েছে। সেসব শর্তাবলী পূরণ করতে না পারার জন্যই দেশের প্রায় অর্ধেক এটিএম বন্ধ হয়ে যাবে।
এই মুহূর্তে দেশে মোট এটিএমের সংখ্যা ২,৩৮,০০০। যার মধ্যে ১,১৩,০০০ এটিএমে ঝাঁপ পড়ে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে মার্চের মধ্যে। জানিয়েছে এটিএম ইন্ডাস্ট্রির সংগঠন কনফেডারেশন অফ এটিএম ইন্ড্রাষ্ট্রি (ক্যাটমি)।
আরও পড়ুন: মোদীর নোটবন্দীর ২ বছর পূর্তিতে আশা নিরাশা
এর ফলে দেশের জনগণের ওপর ভয়ঙ্কর চাপ পড়তে পারে৷ প্রধানমন্ত্রী জনধন যোজনার আওতায় থাকা যে কোটি কোটি সাধারণ মানুষ এটিএম থেকে টাকা তোলেন, প্রভূত সমস্যায় পড়ে যাবেন তাঁরাও।
২০১৬ সালের ৮ নভেম্বর নোটবন্দির পরে এটিএম কাউন্টারের সামনে যে দীর্ঘ লাইন দেখা যেত, ফিরতে পারে সেই স্মৃতি। নোট বাতিলের পর যেমন গোটা দেশের এটিএমে হাজার হাজার মানুষের লাইন পড়ত, তেমনই দিন ফের ফিরে আসার সম্ভাবনা রয়েছে, পরিস্কার জানিয়েছে কনফেডারেশন অফ এটিএম ইন্ড্রাষ্ট্রি।
আরও পড়ুন: ‘গুজরাট দাঙ্গা’, ২৬ নভেম্বর মোদীর বিরুদ্ধে অভিযোগ শুনবে সুপ্রিম কোর্ট
সাম্প্রতিক সময়ে এটিএমের হার্ডওয়্যার ও সফটওয়্যার প্রযুক্তির বিপুল বদলের যে নির্দেশিকা এসেছে তা বহু এটিএমের ক্ষেত্রেই কার্যকর করা সম্ভব হচ্ছে না বলেই এই সিদ্ধান্ত বলে জানায় এটিএম ইন্ডাস্ট্রির সঙ্গে যুক্ত সংগঠন। বিপুল খরচের জন্য এটিএম সফ্টওয়্যারে এই পরিবর্তন সম্ভব নয়।
এই সিদ্ধান্তের ফলে বেকারের সংখ্যা বহু বেড়ে যাবে বলেও মনে করছে বণিকমহল। সামগ্রিকভাবে যার প্রভাব পড়বে দেশের অর্থনীতির ওপর। এটিএমের সঙ্গে যুক্ত বিশাল সংখ্যক শ্রমিকের কাজ হারানোর সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে।
আরও পড়ুন: নরেন্দ্র মোদীর গুজরাটে আর পড়াবেন না ‘দেশদ্রোহী’ প্রফেসর’
শুধু তাই নয়, নদগ টাকা তুলতে না পেরে ভোগান্তিতে পড়তে হবে সাধারণ মানুষকে। এমনকী গ্রামাঞ্চলে নোটবন্দির মতো পরিস্থিতি তৈরি হতে পারে বলেও আশঙ্কা প্রকাশ করা হয়েছে।
এটাও মোদীর নোট বাতিলের একটা বড় কুফল বলে মনে করছে বণিক মহল। অর্থনৈতিক বিশেষজ্ঞরাও কিছুটা হলেও নোটের পরিবর্তনকে দায়ী করেছেন। মার্চে অর্ধেক এটিএম বন্ধ হয়ে গেলে লোকসভা ভোটে যে বিজেপি বড় সমস্যায় পড়তে চলেছে তা বলাই যায়।
]]>